ঢাকা ০৫:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
তারেক রহমান বললেন ‘আমিও হাফ সিলেটি’, জানালেন বিএনপির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ‘লং মার্চ টু ইন্ডিয়ান হাইকমিশন’ গেলো বাড্ডা পর্যন্ত, হাইকমিশনারকে তলব করে উদ্বেগ জানালো ভারত ট্রাইব্যুনালে নিজের বিচার টিভিতে সরাসরি সম্প্রচারের আবেদন জানালেন ইনু হাদিকে হত্যাচেষ্টা: ফয়সালের মা–বাবাও গ্রেপ্তার জামায়াত কর্মীকে ‘রাজাকার’ বলায় বিএনপির সঙ্গে সংঘর্ষ ভোটের ওপর নির্ভর করছে সবার ভবিষ্যৎ: প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস যদি চান, সারা দেশকে কারাগার বানাতে পারেন: আদালতে আনিস আলমগীর সমালোচনা করা যাবে না- এই বার্তাই কি দেওয়া হলো আনিস আলমগীরের ঘটনায় মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত চক্র ‘বিজয়ের নতুন ইতিহাস’ রচনার অপচেষ্টায়: তারেক রহমান আটকের ১৯ ঘণ্টা পর সাংবাদিক আনিস আলমগীর গ্রেফতার; ‘বাকস্বাধীনতাটা কোথায় গেল’ প্রশ্ন শাওনের

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: ফয়সালের মা–বাবাও গ্রেপ্তার

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০৪:০৯:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫
  • / 8

গুলি করা হচ্ছে হাদিকে। ছবি সিসি টিভি থেকে

অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ইনকিলাব মঞ্চের নেতা শরীফ ওসমান বিন হাদির ওপর হামলার ঘটনায় প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদের বাবা–মাকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। পাশাপাশি নরসিংদীর তরুয়ার বিল এলাকা থেকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত অস্ত্রসহ দুটি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার এবং ফয়সাল নামের এক যুবককে আটকের তথ্যও জানিয়েছে সংস্থাটি। এ মামলায় এর আগে ফয়সালের স্ত্রী, বান্ধবী, শ্যালক, হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক সন্দেহে একজন, সহযোগী কবীর এবং তাকে পালাতে সহায়তার অভিযোগে সীমান্ত এলাকা থেকে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) রাতে র‌্যাবের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ওই দিন ভোরে দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানার হাসনাবাদ হাউজিং এলাকা থেকে ফয়সাল করিমের বাবা হুমায়ুন কবির (৭০) ও মা হাসি বেগমকে (৬০) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত অস্ত্র কীভাবে নরসিংদীতে পৌঁছায়, সে বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিতে কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি।

প্রাথমিক অনুসন্ধানের তথ্য উল্লেখ করে র‌্যাব জানায়, গ্রেপ্তার হওয়া দম্পতির চার সন্তানের মধ্যে ফয়সাল করিম তৃতীয়। ফয়সাল ঢাকার আগারগাঁও এলাকায় তার বোন জেসমিন আক্তারের সপ্তম তলার বাসায় নিয়মিত যাতায়াত করতেন। “ঘটনার দিন (১২ ডিসেম্বর) রাতে জেসমিন আক্তারের বাসায় একটি ব্যাগ নিয়ে উঠে ফয়সাল। পরে ওই বাসার চিপা দিয়ে কালো ব্যাগটি ফেলে দেয়, পরে আবার ভাগনেকেদিয়ে ব্যাগটি নিয়ে আসায়।”

র‌্যাব আরও জানায়, “ফয়সাল তার ব্যবহৃত দুইটি মোবাইল ফোনের একটি ওই বাসার ছাদ থেকে ফেলে দেয় এবং অন্যটি তার মা হাসি বেগমকে দেয়। সেখানে বাবা-মার সঙ্গে দেখা করে। অবস্থান নিরাপদজনক মনে না হওয়ায় আগারগাঁও থেকে মিরপুর, পরে শাহজাদপুরে চাচাতো ভাই আরিফের বাসায় যায়।

“ফয়সালের ব্যাগ নিয়ে তার বাবা হুমায়ুন কবির একটি সিএনজি ভাড়া করে দেন এবং সঙ্গে কিছু টাকাও দেন। পরবর্তী সময়ে ফয়সালের বাবা-মা তার ছোট ছেলে হাসান মাহমুদ বাবলু ওরফে রাজজের কেরাণীগঞ্জের বাসায় চলে যান।”

এদিকে মঙ্গলবার ঢাকার পশ্চিম আগারগাঁওয়ে ফয়সাল করিমের বোনের বাসার পাশের এলাকা থেকে ১১ রাউন্ড গুলি ভর্তি দুটি ম্যাগজিন ও একটি চাকু উদ্ধারের কথা জানিয়েছে র‌্যাব।

র‌্যাব-২ এর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “গত শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ফয়সাল ও তার এক সহযোগী মোটরসাইকেলে করে এই বাসা থেকে বের হয়ে যান। ভবনের সিসি ক্যামেরার ভিডিওতে ওই দিন বিকেল ৪টা ৫ মিনিটে ফয়সাল ও তার সহযোগী এবং তার মা ও ভাগিনাকে দুই ভবনের মাঝের ফাঁকা স্থান হতে কিছু বের করতে দেখা যায়।

“বিকাল ৪টা ২০ মিনিটে ফয়সাল ও তার সহযোগী একটি সিএনজি অটোরিক্সায় সেই এলাকা ত্যাগ করে চলে যান। পরে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে এবং সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দুই ভবনের মাঝের ফাঁকা স্থান থেকে দুটি ম্যাগজিন, ১১ রাউন্ড গুলি ও একটি চাকু উদ্ধার করা হয়।”

এ ছাড়া ফয়সালের বোনের বাসা থেকে ১৫টি চেক বই, ছয়টি পাসপোর্ট, বিভিন্ন ব্যাংকের ৩৮টি চেকের পাতা, দুটি মোবাইল ফোন এবং একটি ট্যাব উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানায় র‌্যাব।

হাদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় পরিবারের সম্মতি নিয়ে রোববার রাতে পল্টন থানায় হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করেন ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের।

জুলাই অভ্যুত্থান ও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আন্দোলনের মাধ্যমে পরিচিতি পাওয়া হাদি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন।

গত শুক্রবার গণসংযোগের অংশ হিসেবে বিজয়নগর এলাকায় গেলে তিনি হামলার শিকার হন।

চলন্ত একটি রিকশায় থাকা হাদিকে গুলি করা হয় চলন্ত মোটরসাইকেলের পেছনে বসে থাকা এক আততায়ীর দ্বারা। গুলিটি হাদির মাথায় লাগে।

গুরুতর আহত অবস্থায় হাদিকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের পর রাতেই তাকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকদের ভাষ্য অনুযায়ী, তার অবস্থা ছিল ‘অত্যন্ত আশঙ্কাজনক’।

পরদিন সোমবার দুপুরে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে হাদিকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: ফয়সালের মা–বাবাও গ্রেপ্তার

আপডেট সময় : ০৪:০৯:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫

ইনকিলাব মঞ্চের নেতা শরীফ ওসমান বিন হাদির ওপর হামলার ঘটনায় প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদের বাবা–মাকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। পাশাপাশি নরসিংদীর তরুয়ার বিল এলাকা থেকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত অস্ত্রসহ দুটি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার এবং ফয়সাল নামের এক যুবককে আটকের তথ্যও জানিয়েছে সংস্থাটি। এ মামলায় এর আগে ফয়সালের স্ত্রী, বান্ধবী, শ্যালক, হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক সন্দেহে একজন, সহযোগী কবীর এবং তাকে পালাতে সহায়তার অভিযোগে সীমান্ত এলাকা থেকে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) রাতে র‌্যাবের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ওই দিন ভোরে দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানার হাসনাবাদ হাউজিং এলাকা থেকে ফয়সাল করিমের বাবা হুমায়ুন কবির (৭০) ও মা হাসি বেগমকে (৬০) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত অস্ত্র কীভাবে নরসিংদীতে পৌঁছায়, সে বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিতে কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি।

প্রাথমিক অনুসন্ধানের তথ্য উল্লেখ করে র‌্যাব জানায়, গ্রেপ্তার হওয়া দম্পতির চার সন্তানের মধ্যে ফয়সাল করিম তৃতীয়। ফয়সাল ঢাকার আগারগাঁও এলাকায় তার বোন জেসমিন আক্তারের সপ্তম তলার বাসায় নিয়মিত যাতায়াত করতেন। “ঘটনার দিন (১২ ডিসেম্বর) রাতে জেসমিন আক্তারের বাসায় একটি ব্যাগ নিয়ে উঠে ফয়সাল। পরে ওই বাসার চিপা দিয়ে কালো ব্যাগটি ফেলে দেয়, পরে আবার ভাগনেকেদিয়ে ব্যাগটি নিয়ে আসায়।”

র‌্যাব আরও জানায়, “ফয়সাল তার ব্যবহৃত দুইটি মোবাইল ফোনের একটি ওই বাসার ছাদ থেকে ফেলে দেয় এবং অন্যটি তার মা হাসি বেগমকে দেয়। সেখানে বাবা-মার সঙ্গে দেখা করে। অবস্থান নিরাপদজনক মনে না হওয়ায় আগারগাঁও থেকে মিরপুর, পরে শাহজাদপুরে চাচাতো ভাই আরিফের বাসায় যায়।

“ফয়সালের ব্যাগ নিয়ে তার বাবা হুমায়ুন কবির একটি সিএনজি ভাড়া করে দেন এবং সঙ্গে কিছু টাকাও দেন। পরবর্তী সময়ে ফয়সালের বাবা-মা তার ছোট ছেলে হাসান মাহমুদ বাবলু ওরফে রাজজের কেরাণীগঞ্জের বাসায় চলে যান।”

এদিকে মঙ্গলবার ঢাকার পশ্চিম আগারগাঁওয়ে ফয়সাল করিমের বোনের বাসার পাশের এলাকা থেকে ১১ রাউন্ড গুলি ভর্তি দুটি ম্যাগজিন ও একটি চাকু উদ্ধারের কথা জানিয়েছে র‌্যাব।

র‌্যাব-২ এর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “গত শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ফয়সাল ও তার এক সহযোগী মোটরসাইকেলে করে এই বাসা থেকে বের হয়ে যান। ভবনের সিসি ক্যামেরার ভিডিওতে ওই দিন বিকেল ৪টা ৫ মিনিটে ফয়সাল ও তার সহযোগী এবং তার মা ও ভাগিনাকে দুই ভবনের মাঝের ফাঁকা স্থান হতে কিছু বের করতে দেখা যায়।

“বিকাল ৪টা ২০ মিনিটে ফয়সাল ও তার সহযোগী একটি সিএনজি অটোরিক্সায় সেই এলাকা ত্যাগ করে চলে যান। পরে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে এবং সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দুই ভবনের মাঝের ফাঁকা স্থান থেকে দুটি ম্যাগজিন, ১১ রাউন্ড গুলি ও একটি চাকু উদ্ধার করা হয়।”

এ ছাড়া ফয়সালের বোনের বাসা থেকে ১৫টি চেক বই, ছয়টি পাসপোর্ট, বিভিন্ন ব্যাংকের ৩৮টি চেকের পাতা, দুটি মোবাইল ফোন এবং একটি ট্যাব উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানায় র‌্যাব।

হাদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় পরিবারের সম্মতি নিয়ে রোববার রাতে পল্টন থানায় হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করেন ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের।

জুলাই অভ্যুত্থান ও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আন্দোলনের মাধ্যমে পরিচিতি পাওয়া হাদি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন।

গত শুক্রবার গণসংযোগের অংশ হিসেবে বিজয়নগর এলাকায় গেলে তিনি হামলার শিকার হন।

চলন্ত একটি রিকশায় থাকা হাদিকে গুলি করা হয় চলন্ত মোটরসাইকেলের পেছনে বসে থাকা এক আততায়ীর দ্বারা। গুলিটি হাদির মাথায় লাগে।

গুরুতর আহত অবস্থায় হাদিকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের পর রাতেই তাকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকদের ভাষ্য অনুযায়ী, তার অবস্থা ছিল ‘অত্যন্ত আশঙ্কাজনক’।

পরদিন সোমবার দুপুরে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে হাদিকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়।