বিজয় দিবস ও প্রবাসী গৌরব: হাউস অব লর্ডসে ড. ওয়ালি তছর উদ্দিন সম্মানিত
- আপডেট সময় : ১০:৩৪:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫
- / 722
মহান বিজয় দিবস এবং স্কটল্যান্ডে বাংলাদেশের নবনিযুক্ত অনারারি কনসাল ড. ওয়ালি তছর উদ্দিন এমবিই, ডিবিএ, এফআরএসএ–এর গৌরবময় অর্জন উপলক্ষে এক আলোচনা ও সম্মাননা অনুষ্ঠান লন্ডনের হাউস অব লর্ডসের কমিউনিটি রুম–ওয়ান–এ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর এ অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিলেন লর্ড রামি রেঞ্জার ও কো–হোস্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বিজনেস লিডার কাউন্সিলর নাজ ইসলাম। অনুষ্ঠানের সার্বিক আয়োজনে যুক্ত ছিলেন নর্থ্যাম্পটন ব্রিটিশ বাংলাদেশি বিজনেস চেম্বার–এর সেক্রেটারি জেনারেল মো. মুজিবুর রহমান, ডেপুটি প্রেসিডেন্ট টিপু রহমান এবং ট্রেজারার সলিসিটর প্রিন্স সাদিক চৌধুরী এলএল.এম।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন হাউস অব লর্ডসের সদস্য ব্যারোনেস পোলা উদ্দিন, নর্থ্যাম্পটন সাউথের এমপি মাইক রিডার, পপলার ও লাইমহাউসের এমপি আফসানা বেগম এবং ব্রিটিশ আর্মির প্রতিনিধি অশোক কুমার এমবিই।
আয়োজক লর্ড রামি রেঞ্জার তাঁর স্বাগত বক্তব্যে মহান বিজয় দিবসের ঐতিহাসিক গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি স্কটল্যান্ডে বাংলাদেশের নবনিযুক্ত অনারারি কনসাল ড. ওয়ালি তছর উদ্দিন এমবিই–এর পেশাদারিত্ব, সাংগঠনিক দক্ষতা এবং মানবিক কাজে নেতৃত্বের বিভিন্ন আলোকিত দিক তুলে ধরে তাঁর উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করেন। একই সঙ্গে কমিউনিটিতে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তাঁর হাতে সম্মাননা সনদ ও ক্রেস্ট তুলে দেন।
সম্মাননা গ্রহণ করে ড. ওয়ালি তছর উদ্দিন এমবিই আয়োজক ও অতিথিবৃন্দের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, মহান বিজয় দিবসে প্রাপ্ত এই সম্মান অমূল্য এবং নিঃসন্দেহে আমার জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রাপ্তি।
তিনি এই সম্মানকে মহান মুক্তিযুদ্ধের শহিদ এবং প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির প্রতি উৎসর্গ করেন।
অতিথিবৃন্দ তাঁদের বক্তব্যে মহান স্বাধীনতার জন্য আত্মোৎসর্গকারী সকল শহিদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অনন্য সাহস, ত্যাগ ও বীরত্বগাথা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। তাঁরা বলেন, বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যকার ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, বিনিয়োগ এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে যুক্তরাজ্য–প্রবাসী বাংলাদেশিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন। বিশেষ করে এটি অত্যন্ত ইতিবাচক যে, নতুন প্রজন্মের ব্রিটিশ–বাংলাদেশিরাও বাংলাদেশে বিনিয়োগ, শিক্ষা ও রাষ্ট্রের সার্বিক অগ্রগতিতে সক্রিয়ভাবে অবদান রাখছেন।
বক্তারা স্কটল্যান্ডে বাংলাদেশের নবনিযুক্ত অনারারি কনসাল ড. ওয়ালি তছর উদ্দিন এমবিই–কে একজন নিবেদিত সমাজকর্মী ও আলোকিত ব্যক্তিত্ব হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, তিনি যে কাজেই যুক্ত হয়েছেন, সেখানেই সৃজনশীল চিন্তা ও সাফল্যের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে। কাজের প্রতি তাঁর নিষ্ঠা, অধ্যবসায় ও নেতৃত্ব নিঃসন্দেহে কমিউনিটির জন্য অনুকরণীয়।
নর্থ্যাম্পটন ব্রিটিশ বাংলাদেশি বিজনেস চেম্বার–এর সেক্রেটারি মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান–এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রবাসে ব্যবসা ও কমিউনিটি উন্নয়নে ড. উদ্দিন–এর ভূমিকা তুলে ধরেন অনুষ্ঠানের কো–হোস্ট নর্থ্যাম্পটন টাউন কাউন্সিলের কাউন্সিলর ও ব্রিটিশ বাংলাদেশি বিজনেস চেম্বারের প্রেসিডেন্ট নাজ ইসলাম।
তিনি আয়োজকদের পক্ষ থেকে উপস্থিত অতিথিবৃন্দকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, সবার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ বলে দেয় –আমরা সম্মান ও কমিউনিটির কাজে ঐক্যবদ্ধ।
অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন ইউরোপ–বাংলাদেশ ফেডারেশন অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধি ও ড. ওয়ালি তছর উদ্দিন এমবিই–এর কনিষ্ঠ কন্যা মিসেস রুহালি উদ্দিন, ব্রেন্ট কাউন্সিলের কাউন্সিলর পারভেজ আহমেদ ও রীতা বেগম, আরসিআই অ্যাকাউন্টেন্সির সিইও প্রফেসর ড. সানাওয়ার চৌধুরী, বাংলাদেশ ক্যাটারার্স অ্যাসোসিয়েশন ইউকে–এর সেক্রেটারি জেনারেল মিতু চৌধুরী ও চিফ ট্রেজারার টিপু রহমান, ব্রিটিশ বাংলাদেশি চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি–এর প্রেসিডেন্ট রফিক হায়দার, সাবেক প্রেসিডেন্ট শাহাগির বখত ফারুক ও বশির আহমেদ বিএইএম, বিসিএ–এর সাবেক প্রেসিডেন্ট কামাল ইয়াকুব, দেশ ফাউন্ডেশন ইউকে–এর চেয়ারম্যান ড. মিশবাউর রহমান এবং ইউরোপ বিজনেস ফেডারেশন অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি–এর ফাইন্যান্স ডিরেক্টর সামি সানাউল্লাহ।
বক্তারা বলেন, শিক্ষা, সামাজিক উন্নয়ন, অর্থনৈতিক অগ্রগতি, নারীর ক্ষমতায়ন এবং প্রযুক্তির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ আজ বিশ্ব সম্প্রদায়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে চলেছে। বর্তমানে দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ২৮ শতাংশ হলো ১০ থেকে ২৪ বছর বয়সী তরুণ–তরুণী, যারা ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান শক্তি ও সম্ভাবনা।
বিজয় দিবসে বক্তারা প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, আমরা প্রত্যেকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে লাল–সবুজের বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে অবিচল থাকব। প্রবাসীরা দেশের সম্মান বৃদ্ধি, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের অবস্থান সুদৃঢ় করা এবং দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।
আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তারা বলেন, সমাজে অনুকরণীয় কাজের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে ভালো কাজের উদ্যোক্তাদের স্বীকৃতি দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। ড. ওয়ালি তছর উদ্দিন বাংলাদেশ ও প্রবাসে প্রাতিষ্ঠানিক, মানবিক ও সেবামূলক কাজের মাধ্যমে যে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, আজকের এই সম্মাননা স্বীকৃতির অংশবিশেষ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে অতিথিদের আগমন ও পারস্পরিক শুভেচ্ছা বিনিময়ের মাধ্যমে পরিবেশ হয়ে ওঠে উৎসবমুখর। পরে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয় এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে অতিথিদের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সলিসিটর সাদিক চৌধুরী এলএল.এম।





















