৫ আগস্টের পর দেশে চাঁদাবাজি বেড়েছে : অর্থ উপদেষ্টা
- আপডেট সময় : ০১:৪২:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ অক্টোবর ২০২৫
- / 172
দেশে চাঁদাবাজির প্রবণতা বাড়ছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি জানান, গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে এ প্রবণতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর অর্থ মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকার রাজনৈতিক কমিটমেন্ট ছাড়া এই সংকট নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। আগে যেখানে এক টাকা চাঁদা নেওয়া হতো, এখন সেখানে দেড় বা দুই টাকা নেওয়া হচ্ছে। ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন পক্ষ এতে জড়িয়েছে। আগে যারা যুক্ত ছিল না, তারাও এখন যুক্ত হচ্ছে। এমনকি ব্যবসায়ী সংগঠনের সদস্যরাও এতে জড়িত।”
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, চাঁদাবাজির কারণে পণ্যের দাম বাড়ছে। তবে এটি নিয়ন্ত্রণ করা অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাজ নয়। তিনি আরও যোগ করেন, “অন্তর্বর্তী সরকার ‘একে ধরো, ওকে ধরো’ নীতিতে চলছে না।”
দেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থের একটি অংশ আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে ফেরত আসতে পারে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, “টাকা যারা পাচার করে তারা অত্যন্ত কৌশলী। বিষয়টি জটিল ও সময়সাপেক্ষ। তবে কিছু অগ্রগতি হয়েছে। ফেব্রুয়ারির মধ্যে কিছু অর্থ ফেরার সম্ভাবনা আছে, বাকিটা ফেরাতে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।”
বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো তথ্য সংগ্রহ করছে। ইতোমধ্যে কিছু বিদেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। তবে সুনির্দিষ্ট কত অর্থ পাচার হয়েছে—সে তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর জানাতে পারবেন বলে মন্তব্য করেন অর্থ উপদেষ্টা।
সালেহউদ্দিন আহমেদ জানান, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরীক্ষামূলকভাবে আগামী ডিসেম্বরেই চালু হবে। তিনি বলেন, “আমরা নভেম্বরেই রাশিয়াকে চালুর জন্য চিঠি দিয়েছিলাম। তারা জানিয়েছে, ডিসেম্বরেই চালু করবে। ইতোমধ্যে জ্বালানি এসে গেছে। আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ)-এর দেওয়া সুপারিশ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।” তবে কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের প্রতি ইউনিটের দাম এখনো নির্ধারণ করা হয়নি বলেও জানান তিনি।
আগামী সরকারের মন্ত্রী হওয়ার কোনো আগ্রহ নেই বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন ড. সালেহউদ্দিন। তিনি বলেন, “উপদেষ্টা হওয়ার আগে আমি ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে পড়াতাম। তারা এখনো আমার রুম রেখেছে, গাড়িও ফেরত নেয়নি। ড্রাইভার মাঝেমধ্যে ফোন করে জিজ্ঞেস করে, ‘স্যার গাড়ি আনব?’ এটাই আমার জন্য বড় স্বস্তি।”
তিনি যোগ করেন, “আমি সব সময় সততার সঙ্গে কাজ করেছি। সব সরকারের আমলেই গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় কাজ করার সুযোগ পেয়েছি—বার্ড, পিকেএসএফ, এনজিও ব্যুরো, শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হিসেবেও।”
অর্থ উপদেষ্টা আরও বলেন, বাংলাদেশে এখনো শিশু ও মায়েদের মধ্যে পুষ্টিহীনতা সমস্যা রয়ে গেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যমতে, দেশে প্রতি ১০ পরিবারের মধ্যে ৩টি পরিবার খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
তিনি জানান, “আমরা বিশেষ ট্রাকে পণ্য সরবরাহ এবং জেলেদের জন্য চাল বরাদ্দসহ নানা উদ্যোগ নিচ্ছি। তবে খাদ্যাভ্যাস এখনো সুষম নয়। চালের ওপর নির্ভরতা বেশি, আমিষ গ্রহণ কম। অনেকেই এখনো ডিমের মতো সাধারণ আমিষ কিনতে পারছেন না।”


















