ঢাকা ১০:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে আরও ৩০ দেশের নাগরিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা খাঁচা থেকে বের হওয়া সিংহী আড়াই ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে লন্ডনে ফ্লাই রবিবার, নির্জন কারাবাস থেকেই খালেদা জিয়ার ‘নানা রোগের সূচনা’ জানালেন ফখরুল মহাকাশ থেকে পবিত্র  কাবা শরিফের উজ্জ্বল ছবি আন্দোলনে থাকা প্রাথমিকের শিক্ষকদের বদলি, ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত তারেক রহমানের দেশে ফেরা আবার অনিশ্চিত, কীভাবে ভোটার হবেন? খালেদা জিয়া ছাড়া পরিবারের কেউ ভিভিআইপি সুবিধা পাবেন না কুকুরছানা হত্যা মামলায় মায়ের সঙ্গে কারাগারে ২ বছরের শিশু খালেদা জিয়াকে লন্ডন নিতে ঢাকায় আসছেন জুবাইদা যুক্তরাজ্যের ৯ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী!

প্রসঙ্গ প্যারোল

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০৯:৪২:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০১৯
  • / 1736
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

১৯৬৯ সালের ঘটনা। আগরতলা ‘ষড়যন্ত্র‘ মামলা তখন তুঙ্গে। প্রবল আন্দোলনের মুখে পাকিস্তান সরকার বাধ্য হয়ে শেখ মুজিবুর রহমানকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কীভাবে সেই মুক্তি হবে? পাকিস্তান সরকার চাচ্ছিল, মুজিব প্যারোলে মুক্তি নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসুক। অপরদিকে আসামিপক্ষের কেউ কেউ চাচ্ছিলেন, মুজিবকে নিশর্ত মুক্তি দিতে হবে। কারণ, একবার প্যারোল নিয়ে জামিনে বেরিয়ে গেলেও সরকার এই মামলায় তাঁকে আবার কায়দামতো গ্রেপ্তার করতে পারবে। তাঁরা চাচ্ছিলেন, মামলা প্রত্যাহার আর মুজিবের মুক্তি।

বিষয়টি নিয়ে তখন আওয়ামী লীগের মধ্যে দুটি পক্ষ দাঁড়িয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত একদিন বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব একটি গাড়িতে করে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে যান। বঙ্গবন্ধুকে তখন ক্যান্টনমেন্টে আটকে রাখা হয়েছে। ‘গাড়ি থেকে নেমে এলেন বেগম মুজিব। শেখ মুজিব উঠে গেলেন এবং তাঁকে ভিতরে আসতে বললেন। কিন্তু বেগম মুজিব ভেতরে না এসে চিৎকার করে বলতে লাগলেন, শুনলাম তুমি নাকি প্যারোলে যাচ্ছ। যদি তাই যাও, তাহলে আমিই তোমার বিরুদ্ধে মিছিল করবো। আর সেই মিছিলে তোমার পুত্র-কন্যারাও থাকবে।’ এ কথা বলেই বেগম মুজিব দ্রুত গাড়িতে উঠে চলে গেলেন।

শেখ মুজিব প্যারোলে গেলেন না। তার কিছুদিন পরে অবশ্য এই মামলাটিই প্রত্যাহার হয়ে যায়। এটি ঊনসত্তরের গণঅভ্যূত্থান হিসেবে ইতিহাসে পরিচিত। শেখ মুজিবসহ বাকি ৩৫ আসামি নিশর্ত মুক্তি পান। পরদিন শেখ মুজিবকে জাতির পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধু উপাধি দেওয়া হয়। তারপরে সত্তরের নির্বাচন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, বাকিটা ইতিহাস।

প্রায় অর্ধ শতাব্দী পর বাংলার রাজনীতিতে আবার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক প্যারোলের আলোচনা সামনে এসেছে। এবার কারাগারে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আর সরকারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের দল আওয়ামী লীগ। ইতিহাসের ঘনঘটা রাজনীতিতে তো ভিন্ন চেহারায় ঘুরেফিরে আসেই, নাকি!

এখন তো বাংলার রাজনীতিতে এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয়? নুসরাত, পহেলা বৈশাখ, জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ, ফেরদৌসকাণ্ড, সাফাকাণ্ড এটাকে আড়াল করে দেয়নি তো?

কী মনে হয়, কী হবে?

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

প্রসঙ্গ প্যারোল

আপডেট সময় : ০৯:৪২:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০১৯

১৯৬৯ সালের ঘটনা। আগরতলা ‘ষড়যন্ত্র‘ মামলা তখন তুঙ্গে। প্রবল আন্দোলনের মুখে পাকিস্তান সরকার বাধ্য হয়ে শেখ মুজিবুর রহমানকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কীভাবে সেই মুক্তি হবে? পাকিস্তান সরকার চাচ্ছিল, মুজিব প্যারোলে মুক্তি নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসুক। অপরদিকে আসামিপক্ষের কেউ কেউ চাচ্ছিলেন, মুজিবকে নিশর্ত মুক্তি দিতে হবে। কারণ, একবার প্যারোল নিয়ে জামিনে বেরিয়ে গেলেও সরকার এই মামলায় তাঁকে আবার কায়দামতো গ্রেপ্তার করতে পারবে। তাঁরা চাচ্ছিলেন, মামলা প্রত্যাহার আর মুজিবের মুক্তি।

বিষয়টি নিয়ে তখন আওয়ামী লীগের মধ্যে দুটি পক্ষ দাঁড়িয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত একদিন বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব একটি গাড়িতে করে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে যান। বঙ্গবন্ধুকে তখন ক্যান্টনমেন্টে আটকে রাখা হয়েছে। ‘গাড়ি থেকে নেমে এলেন বেগম মুজিব। শেখ মুজিব উঠে গেলেন এবং তাঁকে ভিতরে আসতে বললেন। কিন্তু বেগম মুজিব ভেতরে না এসে চিৎকার করে বলতে লাগলেন, শুনলাম তুমি নাকি প্যারোলে যাচ্ছ। যদি তাই যাও, তাহলে আমিই তোমার বিরুদ্ধে মিছিল করবো। আর সেই মিছিলে তোমার পুত্র-কন্যারাও থাকবে।’ এ কথা বলেই বেগম মুজিব দ্রুত গাড়িতে উঠে চলে গেলেন।

শেখ মুজিব প্যারোলে গেলেন না। তার কিছুদিন পরে অবশ্য এই মামলাটিই প্রত্যাহার হয়ে যায়। এটি ঊনসত্তরের গণঅভ্যূত্থান হিসেবে ইতিহাসে পরিচিত। শেখ মুজিবসহ বাকি ৩৫ আসামি নিশর্ত মুক্তি পান। পরদিন শেখ মুজিবকে জাতির পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধু উপাধি দেওয়া হয়। তারপরে সত্তরের নির্বাচন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, বাকিটা ইতিহাস।

প্রায় অর্ধ শতাব্দী পর বাংলার রাজনীতিতে আবার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক প্যারোলের আলোচনা সামনে এসেছে। এবার কারাগারে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আর সরকারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের দল আওয়ামী লীগ। ইতিহাসের ঘনঘটা রাজনীতিতে তো ভিন্ন চেহারায় ঘুরেফিরে আসেই, নাকি!

এখন তো বাংলার রাজনীতিতে এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয়? নুসরাত, পহেলা বৈশাখ, জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ, ফেরদৌসকাণ্ড, সাফাকাণ্ড এটাকে আড়াল করে দেয়নি তো?

কী মনে হয়, কী হবে?