ঢাকা ০১:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

দেশে তিন মাসে কোটিপতির সংখ্যা বেড়েছে ৭৩৪ জন

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ১২:০২:১৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৫
  • / 14

দেশে কোটিপতির সংখা বাড়ছে

অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

দেশের ব্যাংকিং খাতে কোটিপতি গ্রাহকের সংখ্যা ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। চলতি বছরের মার্চ প্রান্তিকের তুলনায় জুন প্রান্তিকে কোটিপতি হিসাবের সংখ্যা বেড়েছিল ৫ হাজার ৯৭৪টি। এর পর জুন থেকে সেপ্টেম্বর—এই তিন মাসে আরও ৭৩৪টি কোটিপতি অ্যাকাউন্ট যুক্ত হয়েছে। তবে হিসাবের সংখ্যা বাড়লেও কোটিপতি হিসাবগুলোতে জমা অর্থের মোট পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।

রোববার (৭ ডিসেম্বর) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, জুন শেষে ব্যাংক খাতে মোট হিসাব (অ্যাকাউন্ট) ছিল ১৬ কোটি ৯০ লাখ ২ হাজার ৬৭১টি। সেপ্টেম্বর শেষে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ কোটি ৪৫ লাখ ৯৬ হাজার ৭০০টিতে। অর্থাৎ তিন মাসে নতুন হিসাব খোলা হয়েছে ৫৫ লাখ ৯৪ হাজার ২৯টি।

এই সময়ের মধ্যে ব্যাংক আমানতেও সামান্য প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। জুন শেষে মোট আমানতের পরিমাণ ছিল ১৯ লাখ ৯৬ হাজার ৫৮৩ কোটি টাকা, যা সেপ্টেম্বর শেষে বেড়ে হয়েছে ২০ লাখ ৩১ হাজার ১১৯ কোটি টাকা। ফলে তিন মাসে আমানত বেড়েছে ৩৪ হাজার ৫৩৬ কোটি টাকা।

কোটিপতি হিসাবে প্রবৃদ্ধি

জুন প্রান্তিক শেষে এক কোটি টাকা বা তার বেশি আমানত রয়েছে—এমন হিসাবের সংখ্যা ছিল এক লাখ ২৭ হাজার ৩৩৬টি। সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক লাখ ২৮ হাজার ৭০টিতে। অর্থাৎ তিন মাসে কোটিপতি হিসাব সংখ্যা বেড়েছে ৭৩৪টি। এর আগে মার্চ প্রান্তিক শেষে এই সংখ্যা ছিল এক লাখ ২১ হাজার ৩৬২টি।

হিসাব বাড়লেও আমানত কমেছে

জুন শেষে কোটিপতি অ্যাকাউন্টগুলোতে মোট জমার পরিমাণ ছিল ৮ লাখ ৮০ হাজার ৭৭২ কোটি টাকা। সেপ্টেম্বর শেষে সেই অঙ্ক নেমে এসেছে ৮ লাখ ২১ হাজার ৫৬২ কোটি টাকায়। অর্থাৎ তিন মাসে এসব হিসাবে জমা অর্থ কমেছে ৫৯ হাজার ২০৯ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, কোটিপতি হিসাব থাকলেই সংশ্লিষ্ট সবাই কোটিপতি ‘ব্যক্তি’—এমনটি নয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, ব্যক্তি ছাড়াও বহু সরকারি, বেসরকারি ও করপোরেট প্রতিষ্ঠানের হিসাবেও কোটি টাকার বেশি আমানত থাকে। একই ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠানের একাধিক অ্যাকাউন্টও থাকতে পারে। পাশাপাশি, অনেক সরকারি প্রতিষ্ঠানের হিসাবও এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে দেশে কোটিপতি আমানতকারী ছিল মাত্র ৫ জন। ১৯৭৫ সালে এই সংখ্যা দাঁড়ায় ৪৭-এ, ১৯৮০ সালে ৯৮টি হিসাব, ১৯৯০ সালে ৯৪৩টি এবং ১৯৯৬ সালে ২ হাজার ৫৯৪টি কোটিপতি হিসাব বা অ্যাকাউন্ট ছিল। পরে ২০০১ সালে তা বেড়ে হয় ৫ হাজার ১৬২টি, ২০০৬ সালে ৮ হাজার ৮৮৭টি এবং ২০০৮ সালে সংখ্যাটি দাঁড়ায় ১৯ হাজার ১৬৩টি।

সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রবণতা আরও জোরালো হয়েছে। ২০২০ সালে কোটিপতি হিসাবের সংখ্যা ছিল ৯৩ হাজার ৮৯০টি। ২০২১ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় এক লাখ ৯ হাজার ৭৬টি, ২০২২ সালে এক লাখ ৯ হাজার ৯৪৬টি, ২০২৩ সালে এক লাখ ১৬ হাজার ৯০৮টি এবং ২০২৪ সালে তা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় এক লাখ ২১ হাজার ৩৬২টিতে।

নিউজটি শেয়ার করুন

দেশে তিন মাসে কোটিপতির সংখ্যা বেড়েছে ৭৩৪ জন

আপডেট সময় : ১২:০২:১৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৫

দেশের ব্যাংকিং খাতে কোটিপতি গ্রাহকের সংখ্যা ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। চলতি বছরের মার্চ প্রান্তিকের তুলনায় জুন প্রান্তিকে কোটিপতি হিসাবের সংখ্যা বেড়েছিল ৫ হাজার ৯৭৪টি। এর পর জুন থেকে সেপ্টেম্বর—এই তিন মাসে আরও ৭৩৪টি কোটিপতি অ্যাকাউন্ট যুক্ত হয়েছে। তবে হিসাবের সংখ্যা বাড়লেও কোটিপতি হিসাবগুলোতে জমা অর্থের মোট পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।

রোববার (৭ ডিসেম্বর) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, জুন শেষে ব্যাংক খাতে মোট হিসাব (অ্যাকাউন্ট) ছিল ১৬ কোটি ৯০ লাখ ২ হাজার ৬৭১টি। সেপ্টেম্বর শেষে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ কোটি ৪৫ লাখ ৯৬ হাজার ৭০০টিতে। অর্থাৎ তিন মাসে নতুন হিসাব খোলা হয়েছে ৫৫ লাখ ৯৪ হাজার ২৯টি।

এই সময়ের মধ্যে ব্যাংক আমানতেও সামান্য প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। জুন শেষে মোট আমানতের পরিমাণ ছিল ১৯ লাখ ৯৬ হাজার ৫৮৩ কোটি টাকা, যা সেপ্টেম্বর শেষে বেড়ে হয়েছে ২০ লাখ ৩১ হাজার ১১৯ কোটি টাকা। ফলে তিন মাসে আমানত বেড়েছে ৩৪ হাজার ৫৩৬ কোটি টাকা।

কোটিপতি হিসাবে প্রবৃদ্ধি

জুন প্রান্তিক শেষে এক কোটি টাকা বা তার বেশি আমানত রয়েছে—এমন হিসাবের সংখ্যা ছিল এক লাখ ২৭ হাজার ৩৩৬টি। সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক লাখ ২৮ হাজার ৭০টিতে। অর্থাৎ তিন মাসে কোটিপতি হিসাব সংখ্যা বেড়েছে ৭৩৪টি। এর আগে মার্চ প্রান্তিক শেষে এই সংখ্যা ছিল এক লাখ ২১ হাজার ৩৬২টি।

হিসাব বাড়লেও আমানত কমেছে

জুন শেষে কোটিপতি অ্যাকাউন্টগুলোতে মোট জমার পরিমাণ ছিল ৮ লাখ ৮০ হাজার ৭৭২ কোটি টাকা। সেপ্টেম্বর শেষে সেই অঙ্ক নেমে এসেছে ৮ লাখ ২১ হাজার ৫৬২ কোটি টাকায়। অর্থাৎ তিন মাসে এসব হিসাবে জমা অর্থ কমেছে ৫৯ হাজার ২০৯ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, কোটিপতি হিসাব থাকলেই সংশ্লিষ্ট সবাই কোটিপতি ‘ব্যক্তি’—এমনটি নয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, ব্যক্তি ছাড়াও বহু সরকারি, বেসরকারি ও করপোরেট প্রতিষ্ঠানের হিসাবেও কোটি টাকার বেশি আমানত থাকে। একই ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠানের একাধিক অ্যাকাউন্টও থাকতে পারে। পাশাপাশি, অনেক সরকারি প্রতিষ্ঠানের হিসাবও এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে দেশে কোটিপতি আমানতকারী ছিল মাত্র ৫ জন। ১৯৭৫ সালে এই সংখ্যা দাঁড়ায় ৪৭-এ, ১৯৮০ সালে ৯৮টি হিসাব, ১৯৯০ সালে ৯৪৩টি এবং ১৯৯৬ সালে ২ হাজার ৫৯৪টি কোটিপতি হিসাব বা অ্যাকাউন্ট ছিল। পরে ২০০১ সালে তা বেড়ে হয় ৫ হাজার ১৬২টি, ২০০৬ সালে ৮ হাজার ৮৮৭টি এবং ২০০৮ সালে সংখ্যাটি দাঁড়ায় ১৯ হাজার ১৬৩টি।

সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রবণতা আরও জোরালো হয়েছে। ২০২০ সালে কোটিপতি হিসাবের সংখ্যা ছিল ৯৩ হাজার ৮৯০টি। ২০২১ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় এক লাখ ৯ হাজার ৭৬টি, ২০২২ সালে এক লাখ ৯ হাজার ৯৪৬টি, ২০২৩ সালে এক লাখ ১৬ হাজার ৯০৮টি এবং ২০২৪ সালে তা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় এক লাখ ২১ হাজার ৩৬২টিতে।