ঢাকা ০৫:৫২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

বাংলাদেশসহ ৯ দেশের ওপর আমিরাতের ভিসা নিষেধাজ্ঞা

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০৬:২৩:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / 156

বাংলাদেশসহ ৯ দেশের উপর আমিরাতের ভিসা নিষেধাজ্ঞা

অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সংযুক্ত আরব আমিরাত বাংলাদেশসহ ৯ দেশের নাগরিকদের ভিজিট ও কর্মভিসায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে এ নির্দেশ কার্যকর হবে বলে জানা গেছে। তবে এ নিয়ে আমিরাত সরকারের কোনো সরকারি ওয়েবসাইটে তথ্য পাওয়া যায়নি। ভিসা নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা দেশ উগান্ডার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী (আন্তর্জাতিক সহযোগিতা) ওরিয়েম হেনরি ওকেলো চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়াকে উগান্ডার নাম অন্তর্ভুক্ত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এসব দেশের নাগরিকরা ভিসার আবেদন করতে পারবেন না। ভ্রমণ, কাজ বা ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে আরব আমিরাতে প্রবেশে আগ্রহীদের ভিসা আবেদনও বাতিল করা হয়েছে।

ভ্রমণবিষয়ক ওয়েবসাইট ইউএইভিসাঅনলাইন ডট কম জানিয়েছে, আমিরাতের অভিবাসন বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা দেশগুলো হলো— বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, লিবিয়া, ইয়েমেন, সোমালিয়া, লেবানন, ক্যামেরুন, সুদান ও উগান্ডা। তবে এই সিদ্ধান্তের আনুষ্ঠানিক কারণ জানায়নি আমিরাত সরকার।

ধারণা করা হচ্ছে, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার সম্ভাব্য কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে— জাল বা অবৈধ ভিসা ব্যবহার করে ইউএইতে প্রবেশ, ভুয়া পরিচয় বা পাসপোর্ট ব্যবহার, ভিসার মেয়াদ শেষ হলেও অবস্থান, অপরাধমূলক রেকর্ড বা চলমান মামলা থাকা, বৈধ অনুমতি ছাড়া কাজ করা এবং কোভিড-১৯ সংক্রান্ত শর্ত পূরণে ব্যর্থ হওয়া।

এ নিষেধাজ্ঞা অস্থায়ী বলে ধারণা করা হচ্ছে এবং আমিরাতের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যগত মূল্যায়নের ভিত্তিতে পুনর্বিবেচনা হতে পারে।

তবে যারা ইতিমধ্যে বৈধ ভিসা নিয়ে আমিরাতে বসবাস করছেন, তারা এ সিদ্ধান্তের বাইরে থাকছেন। যদিও এই বিধিনিষেধ প্রবাসীদের চাকরির আবেদন ও কাজের অনুমতি নবায়নে সমস্যা তৈরি করেছে। পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফ্রিকার কয়েকটি দেশের অনেক প্রবাসী এরই মধ্যে ভিসা জটিলতার মুখে পড়েছেন। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের ওপর আগে থেকেই আংশিক ভিসা নিষেধাজ্ঞা কার্যকর আছে।

উগান্ডার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সিনহুয়াকে টেলিফোনে বলেন, “উগান্ডার কিছু শ্রেণির নাগরিকদের জন্য দীর্ঘমেয়াদি ভিসা দেওয়া স্থগিত করেছে আমিরাত। এটি সামগ্রিক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা নয়।”

তিনি আরও বলেন, “আমাদের রাষ্ট্রদূতের তথ্যানুযায়ী, কোনো পূর্ণাঙ্গ নিষেধাজ্ঞা নেই। তবে উগান্ডার নাগরিকদের ওপর সীমিত বিধিনিষেধ থাকবে। দীর্ঘমেয়াদি ভিসা দেওয়া হবে না, শুধু স্বল্পমেয়াদি ভিসা দেওয়া হবে এবং কিছু শ্রেণির মানুষ ভিসা পাবেন না।”

ওরিয়েমের মতে, আমিরাত কর্তৃপক্ষ মূলত সেইসব ব্যক্তিদের লক্ষ্য করছে, যাদের ভিসার মেয়াদ শেষে দেশে ফেরার সম্ভাবনা কম কিংবা যারা অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়াতে পারেন বলে আশঙ্কা রয়েছে।

তিনি বলেন, “এটি মোটেও সর্বাত্মক নিষেধাজ্ঞা নয়। কেউ কেউ যেতে পারবেন, তবে তা নির্ভর করবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ভিসা শেষে দেশে ফেরার প্রবণতা এবং ইউএই-এর আইন ও সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার ওপর।”

তিনি আরও জানান, “উগান্ডা সরকার এখনই এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে আলোচনা শুরু করবে না। ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে এটি কার্যকর হবে।”

ভিসা নিষেধাজ্ঞার খবরটি ভুয়া : প্রেস উইং

বাংলাদেশসহ এশিয়া ও আফ্রিকার ৯ দেশের ওপর সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) ভিসা নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়িয়েছে বলে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে তা ভুয়া বলে দাবি করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে প্রেস উইং এক ফেসবুক পোস্টে এ তথ্য জানায়।

শনিবার সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভিসা নিষেধাজ্ঞার খবরটি ছড়িয়ে পড়ে। অনলাইন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশসহ এশিয়া ও আফ্রিকার ৯ দেশের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের মেয়াদ বাড়িয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত।

প্রেস উইং ফেসবুকে পোস্টে জানায়, বিভিন্ন প্রতিবেদনে গত ১৭ সেপ্টেম্বর একটি বেসরকারি ভিসা প্রক্রিয়াকরণ ওয়েবসাইট ‘ইউএইভিসা অনলাইন’-এ প্রকাশিত একটি নিবন্ধের উদ্ধৃতি দেওয়া হয়েছে। যেখানে দাবি করা হয়েছে, অভিবাসন সংক্রান্ত একটি সার্কুলারে বাংলাদেশসহ এশিয়া ও আফ্রিকার নয়টি দেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। তবে এই দাবিটি মিথ্যা।

প্রেস উইং বলছে, ‘সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ স্পষ্ট করে বলেছেন, আমিরাত কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এ ধরনের কোনো বিজ্ঞপ্তি পাওয়া যায়নি।’ তিনি জানান, পোস্টটি ভিসা সেন্টারের নিজেদের একটি বিদ্বেষপূর্ণ অপচেষ্টা হতে পারে। ২০ ও ২১ সেপ্টেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতে সরকারি ছুটির দিন। তাই দূতাবাস ২২ সেপ্টেম্বর আমিরাত সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করবে এবং অফিসিয়াল চ্যানেলের মাধ্যমে এ বিষয়ে আরো নিশ্চিত হবে।

প্রেস উইং জানিয়েছে, বাংলাদেশের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞার দাবিটি একটি বেসরকারি ভিসা ওয়েবসাইট থেকে উদ্ভূত।

নিউজটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশসহ ৯ দেশের ওপর আমিরাতের ভিসা নিষেধাজ্ঞা

আপডেট সময় : ০৬:২৩:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সংযুক্ত আরব আমিরাত বাংলাদেশসহ ৯ দেশের নাগরিকদের ভিজিট ও কর্মভিসায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে এ নির্দেশ কার্যকর হবে বলে জানা গেছে। তবে এ নিয়ে আমিরাত সরকারের কোনো সরকারি ওয়েবসাইটে তথ্য পাওয়া যায়নি। ভিসা নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা দেশ উগান্ডার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী (আন্তর্জাতিক সহযোগিতা) ওরিয়েম হেনরি ওকেলো চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়াকে উগান্ডার নাম অন্তর্ভুক্ত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এসব দেশের নাগরিকরা ভিসার আবেদন করতে পারবেন না। ভ্রমণ, কাজ বা ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে আরব আমিরাতে প্রবেশে আগ্রহীদের ভিসা আবেদনও বাতিল করা হয়েছে।

ভ্রমণবিষয়ক ওয়েবসাইট ইউএইভিসাঅনলাইন ডট কম জানিয়েছে, আমিরাতের অভিবাসন বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা দেশগুলো হলো— বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, লিবিয়া, ইয়েমেন, সোমালিয়া, লেবানন, ক্যামেরুন, সুদান ও উগান্ডা। তবে এই সিদ্ধান্তের আনুষ্ঠানিক কারণ জানায়নি আমিরাত সরকার।

ধারণা করা হচ্ছে, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার সম্ভাব্য কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে— জাল বা অবৈধ ভিসা ব্যবহার করে ইউএইতে প্রবেশ, ভুয়া পরিচয় বা পাসপোর্ট ব্যবহার, ভিসার মেয়াদ শেষ হলেও অবস্থান, অপরাধমূলক রেকর্ড বা চলমান মামলা থাকা, বৈধ অনুমতি ছাড়া কাজ করা এবং কোভিড-১৯ সংক্রান্ত শর্ত পূরণে ব্যর্থ হওয়া।

এ নিষেধাজ্ঞা অস্থায়ী বলে ধারণা করা হচ্ছে এবং আমিরাতের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যগত মূল্যায়নের ভিত্তিতে পুনর্বিবেচনা হতে পারে।

তবে যারা ইতিমধ্যে বৈধ ভিসা নিয়ে আমিরাতে বসবাস করছেন, তারা এ সিদ্ধান্তের বাইরে থাকছেন। যদিও এই বিধিনিষেধ প্রবাসীদের চাকরির আবেদন ও কাজের অনুমতি নবায়নে সমস্যা তৈরি করেছে। পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফ্রিকার কয়েকটি দেশের অনেক প্রবাসী এরই মধ্যে ভিসা জটিলতার মুখে পড়েছেন। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের ওপর আগে থেকেই আংশিক ভিসা নিষেধাজ্ঞা কার্যকর আছে।

উগান্ডার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সিনহুয়াকে টেলিফোনে বলেন, “উগান্ডার কিছু শ্রেণির নাগরিকদের জন্য দীর্ঘমেয়াদি ভিসা দেওয়া স্থগিত করেছে আমিরাত। এটি সামগ্রিক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা নয়।”

তিনি আরও বলেন, “আমাদের রাষ্ট্রদূতের তথ্যানুযায়ী, কোনো পূর্ণাঙ্গ নিষেধাজ্ঞা নেই। তবে উগান্ডার নাগরিকদের ওপর সীমিত বিধিনিষেধ থাকবে। দীর্ঘমেয়াদি ভিসা দেওয়া হবে না, শুধু স্বল্পমেয়াদি ভিসা দেওয়া হবে এবং কিছু শ্রেণির মানুষ ভিসা পাবেন না।”

ওরিয়েমের মতে, আমিরাত কর্তৃপক্ষ মূলত সেইসব ব্যক্তিদের লক্ষ্য করছে, যাদের ভিসার মেয়াদ শেষে দেশে ফেরার সম্ভাবনা কম কিংবা যারা অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়াতে পারেন বলে আশঙ্কা রয়েছে।

তিনি বলেন, “এটি মোটেও সর্বাত্মক নিষেধাজ্ঞা নয়। কেউ কেউ যেতে পারবেন, তবে তা নির্ভর করবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ভিসা শেষে দেশে ফেরার প্রবণতা এবং ইউএই-এর আইন ও সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার ওপর।”

তিনি আরও জানান, “উগান্ডা সরকার এখনই এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে আলোচনা শুরু করবে না। ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে এটি কার্যকর হবে।”

ভিসা নিষেধাজ্ঞার খবরটি ভুয়া : প্রেস উইং

বাংলাদেশসহ এশিয়া ও আফ্রিকার ৯ দেশের ওপর সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) ভিসা নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়িয়েছে বলে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে তা ভুয়া বলে দাবি করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে প্রেস উইং এক ফেসবুক পোস্টে এ তথ্য জানায়।

শনিবার সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভিসা নিষেধাজ্ঞার খবরটি ছড়িয়ে পড়ে। অনলাইন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশসহ এশিয়া ও আফ্রিকার ৯ দেশের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের মেয়াদ বাড়িয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত।

প্রেস উইং ফেসবুকে পোস্টে জানায়, বিভিন্ন প্রতিবেদনে গত ১৭ সেপ্টেম্বর একটি বেসরকারি ভিসা প্রক্রিয়াকরণ ওয়েবসাইট ‘ইউএইভিসা অনলাইন’-এ প্রকাশিত একটি নিবন্ধের উদ্ধৃতি দেওয়া হয়েছে। যেখানে দাবি করা হয়েছে, অভিবাসন সংক্রান্ত একটি সার্কুলারে বাংলাদেশসহ এশিয়া ও আফ্রিকার নয়টি দেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। তবে এই দাবিটি মিথ্যা।

প্রেস উইং বলছে, ‘সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ স্পষ্ট করে বলেছেন, আমিরাত কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এ ধরনের কোনো বিজ্ঞপ্তি পাওয়া যায়নি।’ তিনি জানান, পোস্টটি ভিসা সেন্টারের নিজেদের একটি বিদ্বেষপূর্ণ অপচেষ্টা হতে পারে। ২০ ও ২১ সেপ্টেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতে সরকারি ছুটির দিন। তাই দূতাবাস ২২ সেপ্টেম্বর আমিরাত সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করবে এবং অফিসিয়াল চ্যানেলের মাধ্যমে এ বিষয়ে আরো নিশ্চিত হবে।

প্রেস উইং জানিয়েছে, বাংলাদেশের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞার দাবিটি একটি বেসরকারি ভিসা ওয়েবসাইট থেকে উদ্ভূত।