ঢাকা ০৫:০৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

আমিরাতে আটক ২৪ বাংলাদেশির মুক্তি মেলেনি, আবার চিঠি দেবেন ইউনূস

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ১২:৩৩:৫১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫
  • / 188

প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়

অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সমর্থনে সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) গ্রেপ্তার হওয়া ২৪ বাংলাদেশির মুক্তি এখনও মেলেনি। এদের মুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্টকে আবারও চিঠি দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বুধবার (২২ জুন) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সব কূটনৈতিক প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।

ওই কর্মকর্তা বলেন, “প্রধান উপদেষ্টার চিঠিটি ইতোমধ্যেই খসড়া করা হয়েছে এবং সব কিছু ঠিক থাকলে শিগগিরই গণমাধ্যমকে জানানো হবে।”

সম্প্রতি একটি অনলাইন পত্রিকায় ‘আমিরাতে আরও ২৫ বাংলাদেশি কারাগারে, ইউনূসের হস্তক্ষেপ চান স্বজনরা’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশের পর এই উদ্যোগ নেওয়া হয়।

ওই পত্রিকার আরেক প্রতিবেদনে বলা হয়, সংযুক্ত আরব আমিরাতে আটক ২৫ বাংলাদেশির একজন আব্দুল হামিদ হেফাজতে মারা গেছেন। ৪২ বছর বয়সী হামিদ গত ২২ সেপ্টেম্বর মারা যান। চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার নয়াপাড়া ওজারা গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে হামিদের পাসপোর্ট নম্বর ছিল A01585869।

তার পরিবারের দাবি, ২০২৫ সালের ২১ এপ্রিল হামিদকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরিবার জানায়, সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশ দূতাবাস ২২ দিন পর তাদের কাছে হামিদের মৃত্যুর খবর জানায়। তারা অভিযোগ করেন, দূতাবাসের কর্মকর্তারা মামলাটি পরিচালনা ও পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগে অবহেলা করেছেন।

পরিবারের আরও অভিযোগ, দেশে প্রবাসী কল্যাণ ও অভিবাসন সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোও দায়িত্ব পালনে অবহেলা করেছে। পরে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশ দূতাবাস নিশ্চিত করে যে, হামিদের মরদেহ দেশে পাঠানো হয়েছে।

এই ঘটনাটি জুলাই আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কারাগারে আটক বাকি ২৪ বাংলাদেশির ভাগ্য নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

এর আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছিলেন, “আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি সহায়তা করার, কিন্তু সংযুক্ত আরব আমিরাতের আইনের সীমার বাইরে আমাদের কিছু করার সুযোগ নেই।”

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন পরে বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতে এখনো উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশি কারাগারে থাকলেও তাদের আইনি অবস্থান সম্পর্কে সরকার পূর্ণাঙ্গ তথ্য পায়নি।

তিনি বলেন, “ইউএই কর্তৃপক্ষ এখনো আটককৃতদের বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনো তথ্য দেয়নি।”

তিনি আরও বলেন, “প্রধান উপদেষ্টার অনুরোধে ইউএই সরকার তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে মুক্তি দিয়েছে। অবশিষ্ট বন্দিদের মুক্তির জন্য আমরা নিয়মিত কূটনৈতিক পথে এগিয়ে যাচ্ছি, যার মধ্যে রয়েছে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ, সরকারি চিঠি ও কূটনৈতিক নোট।”

সম্প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরাতে কয়েক মাস কারাভোগের পর দেশে ফিরে আসা প্রবাসী মো. সগীর আহমেদ তালুকদার দেশকাল নিউজ ডটকমকে জানান, বিক্ষোভের পর ধাপে ধাপে মোট ১৮৮ জন বাংলাদেশিকে আটক করা হয়েছিল।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশের সবাই খবরে দেখেছিল, ১৯ জুলাই ছাত্র আন্দোলনের প্রতি সংহতি প্রকাশের অভিযোগে ৫৭ জন বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আরও ৫৭ জন, এরপর ৭৪ জনকে আটক করা হয়। মোট সংখ্যা দাঁড়ায় ১৮৮।”

“প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের অনুরোধে ইউএই সরকার ১৮৮ জন বাংলাদেশিকে মুক্তি দেয়, যার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ,” যোগ করেন তিনি। “তবে পরে জানতে পারি, আরও ২৫ জন এখনো আল সাদর কারাগারে বন্দি রয়েছেন এবং আব্দুল হামিদ ছিলেন তাঁদের একজন।”

নিউজটি শেয়ার করুন

আমিরাতে আটক ২৪ বাংলাদেশির মুক্তি মেলেনি, আবার চিঠি দেবেন ইউনূস

আপডেট সময় : ১২:৩৩:৫১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সমর্থনে সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) গ্রেপ্তার হওয়া ২৪ বাংলাদেশির মুক্তি এখনও মেলেনি। এদের মুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্টকে আবারও চিঠি দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বুধবার (২২ জুন) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সব কূটনৈতিক প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।

ওই কর্মকর্তা বলেন, “প্রধান উপদেষ্টার চিঠিটি ইতোমধ্যেই খসড়া করা হয়েছে এবং সব কিছু ঠিক থাকলে শিগগিরই গণমাধ্যমকে জানানো হবে।”

সম্প্রতি একটি অনলাইন পত্রিকায় ‘আমিরাতে আরও ২৫ বাংলাদেশি কারাগারে, ইউনূসের হস্তক্ষেপ চান স্বজনরা’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশের পর এই উদ্যোগ নেওয়া হয়।

ওই পত্রিকার আরেক প্রতিবেদনে বলা হয়, সংযুক্ত আরব আমিরাতে আটক ২৫ বাংলাদেশির একজন আব্দুল হামিদ হেফাজতে মারা গেছেন। ৪২ বছর বয়সী হামিদ গত ২২ সেপ্টেম্বর মারা যান। চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার নয়াপাড়া ওজারা গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে হামিদের পাসপোর্ট নম্বর ছিল A01585869।

তার পরিবারের দাবি, ২০২৫ সালের ২১ এপ্রিল হামিদকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরিবার জানায়, সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশ দূতাবাস ২২ দিন পর তাদের কাছে হামিদের মৃত্যুর খবর জানায়। তারা অভিযোগ করেন, দূতাবাসের কর্মকর্তারা মামলাটি পরিচালনা ও পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগে অবহেলা করেছেন।

পরিবারের আরও অভিযোগ, দেশে প্রবাসী কল্যাণ ও অভিবাসন সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোও দায়িত্ব পালনে অবহেলা করেছে। পরে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশ দূতাবাস নিশ্চিত করে যে, হামিদের মরদেহ দেশে পাঠানো হয়েছে।

এই ঘটনাটি জুলাই আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কারাগারে আটক বাকি ২৪ বাংলাদেশির ভাগ্য নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

এর আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছিলেন, “আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি সহায়তা করার, কিন্তু সংযুক্ত আরব আমিরাতের আইনের সীমার বাইরে আমাদের কিছু করার সুযোগ নেই।”

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন পরে বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতে এখনো উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশি কারাগারে থাকলেও তাদের আইনি অবস্থান সম্পর্কে সরকার পূর্ণাঙ্গ তথ্য পায়নি।

তিনি বলেন, “ইউএই কর্তৃপক্ষ এখনো আটককৃতদের বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনো তথ্য দেয়নি।”

তিনি আরও বলেন, “প্রধান উপদেষ্টার অনুরোধে ইউএই সরকার তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে মুক্তি দিয়েছে। অবশিষ্ট বন্দিদের মুক্তির জন্য আমরা নিয়মিত কূটনৈতিক পথে এগিয়ে যাচ্ছি, যার মধ্যে রয়েছে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ, সরকারি চিঠি ও কূটনৈতিক নোট।”

সম্প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরাতে কয়েক মাস কারাভোগের পর দেশে ফিরে আসা প্রবাসী মো. সগীর আহমেদ তালুকদার দেশকাল নিউজ ডটকমকে জানান, বিক্ষোভের পর ধাপে ধাপে মোট ১৮৮ জন বাংলাদেশিকে আটক করা হয়েছিল।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশের সবাই খবরে দেখেছিল, ১৯ জুলাই ছাত্র আন্দোলনের প্রতি সংহতি প্রকাশের অভিযোগে ৫৭ জন বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আরও ৫৭ জন, এরপর ৭৪ জনকে আটক করা হয়। মোট সংখ্যা দাঁড়ায় ১৮৮।”

“প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের অনুরোধে ইউএই সরকার ১৮৮ জন বাংলাদেশিকে মুক্তি দেয়, যার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ,” যোগ করেন তিনি। “তবে পরে জানতে পারি, আরও ২৫ জন এখনো আল সাদর কারাগারে বন্দি রয়েছেন এবং আব্দুল হামিদ ছিলেন তাঁদের একজন।”