ঢাকা ০৯:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে আরও ৩০ দেশের নাগরিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা খাঁচা থেকে বের হওয়া সিংহী আড়াই ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে লন্ডনে ফ্লাই রবিবার, নির্জন কারাবাস থেকেই খালেদা জিয়ার ‘নানা রোগের সূচনা’ জানালেন ফখরুল মহাকাশ থেকে পবিত্র  কাবা শরিফের উজ্জ্বল ছবি আন্দোলনে থাকা প্রাথমিকের শিক্ষকদের বদলি, ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত তারেক রহমানের দেশে ফেরা আবার অনিশ্চিত, কীভাবে ভোটার হবেন? খালেদা জিয়া ছাড়া পরিবারের কেউ ভিভিআইপি সুবিধা পাবেন না কুকুরছানা হত্যা মামলায় মায়ের সঙ্গে কারাগারে ২ বছরের শিশু খালেদা জিয়াকে লন্ডন নিতে ঢাকায় আসছেন জুবাইদা যুক্তরাজ্যের ৯ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী!

পুলিশের মতো আর্মিও নির্বাচনী দায়িত্বে, পলাতক আসামিরা প্রার্থী হতে পারবে না, ফিরছে ‘না ভোট’
আরপিও সংশোধন

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০৮:২৮:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫
  • / 113

EC Vote

অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সংশোধিত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। সংশোধনের ফলে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে কোনো পলাতক আসামি প্রার্থী হতে পারবে না, পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীও নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করতে পারবে, এবং জোটভুক্ত প্রার্থীকেও নিজ দলের প্রতীকে ভোটে লড়তে হবে। একই সঙ্গে ব্যালটে ‘না ভোট’ বিধানও ফিরছে।

বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়।

পরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ব্রিফিংয়ে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, “গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) যেসব গুরুত্বপূর্ণ সংশোধন করা হয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হলো ইভিএম সংক্রান্ত বিধান বিলুপ্ত করা।

অনুমোদিত খসড়ায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংজ্ঞায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীকেও যুক্ত করা হয়েছে। এর ফলে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরাও পুলিশের মতো ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। তিন বাহিনীকে নির্বাচনী দায়িত্ব দিতে আলাদা কোনো আদেশের প্রয়োজন হবে না।

তিনি জানান, প্রার্থীর যোগ্যতা–অযোগ্যতার ক্ষেত্রে পলাতক ব্যক্তিদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করার বিধানও যুক্ত করা হয়েছে। পলাতক আসামি বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে, এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “পলাতক হচ্ছে—যখন আদালত কাউকে পলাতক ঘোষণা করে। আদালত যখন হাজির হতে বলছে, পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিচ্ছে, তবু হাজির হচ্ছেন না—তখন আদালত পলাতক ঘোষণা করে। বিচার চলাকালীন সময়ে কেউ অনুপস্থিত থাকলে তাকেও পলাতক ধরা হয়।”

নতুন বিধান অনুযায়ী, প্রার্থীদের হলফনামায় দেশি ও বিদেশি আয়ের উৎসের বিবরণ এফিডেভিটের মাধ্যমে দিতে হবে।
আসিফ নজরুল বলেন, “মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশ দিয়েছেন—প্রার্থীদের দেশি-বিদেশি আয়ের উৎস, সম্পত্তির বিবরণ নির্বাচন কমিশনে দিতে হবে। এটি ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে, যাতে সবাই জানতে পারে কার কী সম্পদ। উনি বলেছেন, এ সংক্রান্ত বিধান আইনে অন্তর্ভুক্ত থাকবে।”

এবার ভোটে প্রার্থীদের জামানত ২০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে। পাশাপাশি একক প্রার্থীর আসনে ‘না ভোট’ দেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে।

আইন উপদেষ্টা বলেন, “‘নো ভোট’ বিধান যুক্ত করা হয়েছে। একজন প্রার্থী থাকলে সেখানে না ভোট হবে। ২০১৪ সালের ভুয়া, সাজানো নির্বাচন যেন আর না হয়—সে ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখন ভোটাররা যাকে পছন্দ না, তাকেও ‘না ভোট’ দিতে পারবেন।”

সংশোধিত আরপিও অনুযায়ী, জোটভুক্ত প্রার্থীকেও নিজ দলের প্রতীকে ভোটে অংশ নিতে হবে। আগে জোটভুক্ত হয়ে বড় বা জনপ্রিয় দলের প্রতীক ব্যবহারের সুযোগ থাকলেও এবার তা থাকবে না।
আসিফ নজরুল বলেন, “নির্বাচনি জোট হলেও প্রার্থীকে নিজ দলের প্রতীকে ভোট করতে হবে, যাতে ভোটাররা স্পষ্টভাবে বুঝতে পারেন, তিনি কোন দলের।”

এছাড়া নির্বাচনি কাজে নিয়োজিত ব্যক্তি, প্রবাসী বাংলাদেশি, কারা হেফাজতে থাকা ব্যক্তি ও সরকারি কর্মকর্তা–কর্মচারীদের জন্য পোস্টাল ব্যালটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এবার আইটি-সাপোর্টেড পোস্টাল ভোটিং চালু হচ্ছে, যার মাধ্যমে প্রবাসীরা অনলাইনে নিবন্ধন শেষে ডাকযোগে ভোট দিতে পারবেন।

ভোট গণনার সময় সাংবাদিকদের উপস্থিত থাকার সুযোগ রাখার বিধানও যুক্ত হয়েছে বলে জানান আইন উপদেষ্টা।

রাজনৈতিক দলগুলোর অনুদানের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, ৫০ হাজার টাকার বেশি অনুদান ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দিতে হবে, এবং অনুদানদাতাকে ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল করতে হবে।

সবশেষে তিনি বলেন, “আগে আইনে ছিল—কোনো ভোটকেন্দ্রে অনিয়ম হলে কেবল ওই কেন্দ্রের ফলাফল বাতিলের বিধান। এখন নির্বাচন কমিশন যদি মনে করে, কোনো নির্বাচনি এলাকায় এত অনিয়ম হয়েছে যে পুরো আসনের ভোট বাতিল করা উচিত—তাহলে তা করতে পারবে। ইসিকে সে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।”

নিউজটি শেয়ার করুন

পুলিশের মতো আর্মিও নির্বাচনী দায়িত্বে, পলাতক আসামিরা প্রার্থী হতে পারবে না, ফিরছে ‘না ভোট’
আরপিও সংশোধন

আপডেট সময় : ০৮:২৮:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫

সংশোধিত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। সংশোধনের ফলে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে কোনো পলাতক আসামি প্রার্থী হতে পারবে না, পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীও নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করতে পারবে, এবং জোটভুক্ত প্রার্থীকেও নিজ দলের প্রতীকে ভোটে লড়তে হবে। একই সঙ্গে ব্যালটে ‘না ভোট’ বিধানও ফিরছে।

বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়।

পরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ব্রিফিংয়ে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, “গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) যেসব গুরুত্বপূর্ণ সংশোধন করা হয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হলো ইভিএম সংক্রান্ত বিধান বিলুপ্ত করা।

অনুমোদিত খসড়ায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংজ্ঞায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীকেও যুক্ত করা হয়েছে। এর ফলে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরাও পুলিশের মতো ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। তিন বাহিনীকে নির্বাচনী দায়িত্ব দিতে আলাদা কোনো আদেশের প্রয়োজন হবে না।

তিনি জানান, প্রার্থীর যোগ্যতা–অযোগ্যতার ক্ষেত্রে পলাতক ব্যক্তিদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করার বিধানও যুক্ত করা হয়েছে। পলাতক আসামি বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে, এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “পলাতক হচ্ছে—যখন আদালত কাউকে পলাতক ঘোষণা করে। আদালত যখন হাজির হতে বলছে, পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিচ্ছে, তবু হাজির হচ্ছেন না—তখন আদালত পলাতক ঘোষণা করে। বিচার চলাকালীন সময়ে কেউ অনুপস্থিত থাকলে তাকেও পলাতক ধরা হয়।”

নতুন বিধান অনুযায়ী, প্রার্থীদের হলফনামায় দেশি ও বিদেশি আয়ের উৎসের বিবরণ এফিডেভিটের মাধ্যমে দিতে হবে।
আসিফ নজরুল বলেন, “মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশ দিয়েছেন—প্রার্থীদের দেশি-বিদেশি আয়ের উৎস, সম্পত্তির বিবরণ নির্বাচন কমিশনে দিতে হবে। এটি ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে, যাতে সবাই জানতে পারে কার কী সম্পদ। উনি বলেছেন, এ সংক্রান্ত বিধান আইনে অন্তর্ভুক্ত থাকবে।”

এবার ভোটে প্রার্থীদের জামানত ২০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে। পাশাপাশি একক প্রার্থীর আসনে ‘না ভোট’ দেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে।

আইন উপদেষ্টা বলেন, “‘নো ভোট’ বিধান যুক্ত করা হয়েছে। একজন প্রার্থী থাকলে সেখানে না ভোট হবে। ২০১৪ সালের ভুয়া, সাজানো নির্বাচন যেন আর না হয়—সে ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখন ভোটাররা যাকে পছন্দ না, তাকেও ‘না ভোট’ দিতে পারবেন।”

সংশোধিত আরপিও অনুযায়ী, জোটভুক্ত প্রার্থীকেও নিজ দলের প্রতীকে ভোটে অংশ নিতে হবে। আগে জোটভুক্ত হয়ে বড় বা জনপ্রিয় দলের প্রতীক ব্যবহারের সুযোগ থাকলেও এবার তা থাকবে না।
আসিফ নজরুল বলেন, “নির্বাচনি জোট হলেও প্রার্থীকে নিজ দলের প্রতীকে ভোট করতে হবে, যাতে ভোটাররা স্পষ্টভাবে বুঝতে পারেন, তিনি কোন দলের।”

এছাড়া নির্বাচনি কাজে নিয়োজিত ব্যক্তি, প্রবাসী বাংলাদেশি, কারা হেফাজতে থাকা ব্যক্তি ও সরকারি কর্মকর্তা–কর্মচারীদের জন্য পোস্টাল ব্যালটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এবার আইটি-সাপোর্টেড পোস্টাল ভোটিং চালু হচ্ছে, যার মাধ্যমে প্রবাসীরা অনলাইনে নিবন্ধন শেষে ডাকযোগে ভোট দিতে পারবেন।

ভোট গণনার সময় সাংবাদিকদের উপস্থিত থাকার সুযোগ রাখার বিধানও যুক্ত হয়েছে বলে জানান আইন উপদেষ্টা।

রাজনৈতিক দলগুলোর অনুদানের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, ৫০ হাজার টাকার বেশি অনুদান ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দিতে হবে, এবং অনুদানদাতাকে ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল করতে হবে।

সবশেষে তিনি বলেন, “আগে আইনে ছিল—কোনো ভোটকেন্দ্রে অনিয়ম হলে কেবল ওই কেন্দ্রের ফলাফল বাতিলের বিধান। এখন নির্বাচন কমিশন যদি মনে করে, কোনো নির্বাচনি এলাকায় এত অনিয়ম হয়েছে যে পুরো আসনের ভোট বাতিল করা উচিত—তাহলে তা করতে পারবে। ইসিকে সে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।”