ঢাকা ০৬:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

বিএনপি কেন বুলেটপ্রুফ গাড়ি কিনছে, আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স চাইছে

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০৫:২১:৩০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫
  • / 76

লন্ডনে তারেক রহমান ও খালেদা জিয়া

অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দুটি বুলেটপ্রুফ গাড়ি কেনার উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপি। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্বাচনী প্রচারণায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ অনুমতি দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, চলতি মাসের শুরুতে একটি বুলেটপ্রুফ বাস কেনার অনুমতি দেওয়া হয়। এর আগে গত জুনে আরেকটি বুলেটপ্রুফ গাড়ি কেনার অনুমতি পায় দলটি।

কোন দেশ থেকে এবং কোন মডেলের গাড়ি কেনা হবে, তা এখনো নির্ধারিত হয়নি। তবে জাপান থেকে গাড়ি কেনার বিষয়ে আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছে বিএনপির একটি সূত্র।

বিএনপি চেয়ারপারসনের নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) ফজলে এলাহী আকবর বলেন, ‘নির্বাচনের সময় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান সারা দেশে মানুষের সঙ্গে দেখা করবেন, জনসংযোগ করবেন। একদিকে নিরাপত্তা, অন্যদিকে জনসম্পৃক্ততা—এই সময়ে তাঁদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা জরুরি। সে কারণেই বুলেটপ্রুফ গাড়ি কেনা হচ্ছে।’

বুলেটপ্রুফ গাড়ির পর এবার আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্সের জন্যও আবেদন করেছে বিএনপি। মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, একটি শটগান ও দুটি পিস্তলের লাইসেন্সের অনুমতি চাওয়া হয়েছে, যা বর্তমানে বিবেচনাধীন।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া বুলেটপ্রুফ গাড়ি আমদানি করা যায় না। মন্ত্রণালয় সূত্র অনুযায়ী, সাধারণত এ অনুমতি দেওয়া হয় রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, তিন বাহিনীর প্রধান, বিদেশি দূতাবাস, জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের। রাজনৈতিক দলের জন্য এ ধরনের অনুমতি অতীতে খুব কমই দেওয়া হয়েছে।

রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানিকারকদের সংগঠন বারভিডা (বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন) নেতারা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে আগে জাপান ও কানাডা থেকে বুলেটপ্রুফ গাড়ি আনা হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে তাঁরা জানান, শেখ হাসিনার ব্যবহারের জন্য গাড়ি প্রথমে জাপান থেকে আনা হয়, পরে সেটি কানাডায় পরিবর্তন (কনভার্সন) করা হয়।

২০০৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে অবস্থান করছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সম্প্রতি তিনি জানিয়েছেন, দ্রুত দেশে ফিরবেন এবং নির্বাচনে অংশ নেবেন। বিএনপির নেতাদের কেউ কেউ অতীতে তাঁর দেশে না ফেরার পেছনে নিরাপত্তা শঙ্কার কথাও উল্লেখ করেছেন।

বুলেটপ্রুফ গাড়ির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) এক প্রতিবেদনে বলেছে, আসন্ন নির্বাচনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান সারাদেশে প্রচারণায় অংশ নেবেন। জনসভা ও সফরের সময় প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দল বা তাদের নিয়োজিত সন্ত্রাসীদের হামলার আশঙ্কা রয়েছে। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও প্রতিদ্বন্দ্বী দলের শত্রুভাবাপন্ন মনোভাবের কারণে খালেদা জিয়া ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা আক্রমণের শিকার হতে পারেন। তাই তাঁদের সার্বক্ষণিক ব্যবহারের জন্য একটি বুলেটপ্রুফ গাড়ি কেনায় এসবির কোনো আপত্তি নেই।

পুলিশ প্রটোকলের পাশাপাশি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিজস্ব নিরাপত্তা দলও রয়েছে—চেয়ারপারসন সিকিউরিটি ফোর্স (সিএসএফ) নামে পরিচিত এই দলটি। খালেদা জিয়া কোথাও গেলে সিএসএফের সদস্যদের বিশেষ পোশাকে তাঁর নিরাপত্তায় দেখা যায়।

নিউজটি শেয়ার করুন

বিএনপি কেন বুলেটপ্রুফ গাড়ি কিনছে, আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স চাইছে

আপডেট সময় : ০৫:২১:৩০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দুটি বুলেটপ্রুফ গাড়ি কেনার উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপি। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্বাচনী প্রচারণায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ অনুমতি দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, চলতি মাসের শুরুতে একটি বুলেটপ্রুফ বাস কেনার অনুমতি দেওয়া হয়। এর আগে গত জুনে আরেকটি বুলেটপ্রুফ গাড়ি কেনার অনুমতি পায় দলটি।

কোন দেশ থেকে এবং কোন মডেলের গাড়ি কেনা হবে, তা এখনো নির্ধারিত হয়নি। তবে জাপান থেকে গাড়ি কেনার বিষয়ে আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছে বিএনপির একটি সূত্র।

বিএনপি চেয়ারপারসনের নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) ফজলে এলাহী আকবর বলেন, ‘নির্বাচনের সময় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান সারা দেশে মানুষের সঙ্গে দেখা করবেন, জনসংযোগ করবেন। একদিকে নিরাপত্তা, অন্যদিকে জনসম্পৃক্ততা—এই সময়ে তাঁদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা জরুরি। সে কারণেই বুলেটপ্রুফ গাড়ি কেনা হচ্ছে।’

বুলেটপ্রুফ গাড়ির পর এবার আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্সের জন্যও আবেদন করেছে বিএনপি। মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, একটি শটগান ও দুটি পিস্তলের লাইসেন্সের অনুমতি চাওয়া হয়েছে, যা বর্তমানে বিবেচনাধীন।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া বুলেটপ্রুফ গাড়ি আমদানি করা যায় না। মন্ত্রণালয় সূত্র অনুযায়ী, সাধারণত এ অনুমতি দেওয়া হয় রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, তিন বাহিনীর প্রধান, বিদেশি দূতাবাস, জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের। রাজনৈতিক দলের জন্য এ ধরনের অনুমতি অতীতে খুব কমই দেওয়া হয়েছে।

রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানিকারকদের সংগঠন বারভিডা (বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন) নেতারা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে আগে জাপান ও কানাডা থেকে বুলেটপ্রুফ গাড়ি আনা হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে তাঁরা জানান, শেখ হাসিনার ব্যবহারের জন্য গাড়ি প্রথমে জাপান থেকে আনা হয়, পরে সেটি কানাডায় পরিবর্তন (কনভার্সন) করা হয়।

২০০৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে অবস্থান করছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সম্প্রতি তিনি জানিয়েছেন, দ্রুত দেশে ফিরবেন এবং নির্বাচনে অংশ নেবেন। বিএনপির নেতাদের কেউ কেউ অতীতে তাঁর দেশে না ফেরার পেছনে নিরাপত্তা শঙ্কার কথাও উল্লেখ করেছেন।

বুলেটপ্রুফ গাড়ির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) এক প্রতিবেদনে বলেছে, আসন্ন নির্বাচনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান সারাদেশে প্রচারণায় অংশ নেবেন। জনসভা ও সফরের সময় প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দল বা তাদের নিয়োজিত সন্ত্রাসীদের হামলার আশঙ্কা রয়েছে। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও প্রতিদ্বন্দ্বী দলের শত্রুভাবাপন্ন মনোভাবের কারণে খালেদা জিয়া ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা আক্রমণের শিকার হতে পারেন। তাই তাঁদের সার্বক্ষণিক ব্যবহারের জন্য একটি বুলেটপ্রুফ গাড়ি কেনায় এসবির কোনো আপত্তি নেই।

পুলিশ প্রটোকলের পাশাপাশি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিজস্ব নিরাপত্তা দলও রয়েছে—চেয়ারপারসন সিকিউরিটি ফোর্স (সিএসএফ) নামে পরিচিত এই দলটি। খালেদা জিয়া কোথাও গেলে সিএসএফের সদস্যদের বিশেষ পোশাকে তাঁর নিরাপত্তায় দেখা যায়।