সিলেটের জকিগঞ্জের কাজলসার ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ড সদস্য আব্দুস সালাম । ২০ নভেম্বর বুধবার থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘৃনিতভাবে ভাইরাল হওয়া একটি নাম। মাত্র চব্বিশ সেকেন্ড এর একটি ভিডিও তে দেখা যায়- এক যুবকককে হাত-পা বেঁধে বাশের মধ্যে ঝুলিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় মারধর করছেন।
নির্যাতিত যুবক এর নাম গিয়াস উদ্দিন। তাকে মারধরের ভিডিও বুধবার থেকে ফেসবুকে ছড়িয়েছে গ্লোবালি। এ ভিডিও নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে বৃহস্পতিবার বিকেলে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় আব্দুস সালামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সেই সাথে বেরিয়ে আসে ইউপি সদস্য আব্দুস সালামের নানা অপকর্মের কাহিনীও।
পুলিশ সূত্রে প্রকাশ- মারধরের ঘটনা (ভাইরাল হওয়া ভিডিও দৃশ্য) ঘটেছিলো প্রায় চার মাস আগে। তবে এই ঘটনায় এতোদিন থানায় কোনো অভিযোগ করনেনি নির্যাতনের শিকার হওয়া গিয়াস উদ্দিন।
অবশেষে ভিডিও ভাইরাল হওয়ায় হাজার হাজার মানুষের প্রতিবাদ দেখে মনে শক্তি আসে এবং পুলিশের হস্তক্ষেপে ২১ নভেম্বর বৃহস্পতিবার এ ঘটনায় মামলা করেন গিয়াস উদ্দিন।
নির্যাতনের শিকার গিয়াস উদ্দিন জানান, স্থানীয় যুবক শাহজান তার কাছ থেকে থেকে ২৫শ টাকা ধার নিয়েছিল। সে টাকা ফেরত না দেওয়ায় শাহজাহানের একটি মোবাইল ফোন নিয়ে নেন গিয়াস। এই মোবাইল নেয়াকে ‘চুরি’ হিসেবে উল্লেখ করে- শাহজাহান ও আনোয়ার গিয়াসকে ধরে এবাদ মেম্বারের বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানেই সালাম মেম্বার মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালায়। নির্যাতিত গিয়াস জানান, একটানা প্রায় দেড় ঘন্টা তাকে মারধর করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্ম কর্তা (ওসি) মীর মো.আব্দুন নাসের বলেন, ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর বৃহস্পতিবার বিকেলে ভারতে পালানোর সময় কানাইঘাট সীমান্ত থেকে সালাম মেম্বারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ইউপি সদস্য এবাদুর রহমান, আনোয়ার হোসেন ও শাহজাহান নামে আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সিলেটের পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন বলেন, গিয়াস উদ্দিনকে মারধর ছাড়াও আরও অনেক অভিযোগ আছে আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে। পুলিশ এসব অভিযোগের তদন্ত করছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সালামকে শুক্রবার আদালতে হা্জির করে রিমান্ডের আবেদন করা হবে।
এদিকে স্থানীয়রা জানান- চারিগ্রামের মৃত মহিবুর রহমান ঢালইর পুত্র আব্দুস সালাম- এলাকায় গরীব মানুষদের জুলুম নির্যাতন , দখলবাজি, নারী কেলেঙ্কারীসহ নানা অপরাধে জড়িত।
ভয়ে সালাম মেম্বারের বিরুদ্ধে কেউ থানায় অভিযোগ দেয় না । ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ভিডিও দেখে সাধারণ মানুষের প্রতিবাদ দেখে এই অঞ্চলের অনেকে এখন তার অপকর্ম নিয়ে সোচ্চার হতে সাহস পাচ্ছেন।