ঢাকা ০৫:০৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

মিয়ানমার-থাইল্যান্ডে ভূমিকম্পে নিহত ২৫, ভিয়েতনামেও আতঙ্ক

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ১০:১৯:২২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ মার্চ ২০২৫
  • / 382
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে শক্তিশালী ভূমিকম্পে অন্তত ২৫ জন নিহত হয়েছেন। শুক্রবারের ভূমিকম্পের প্রভাবে প্রতিবেশী থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামেও আতঙ্ক ছড়িয়েছে। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার (ইউএসজিএস) তথ্য অনুযায়ী, মিয়ানমারের সাগাইং শহরের উত্তর-পশ্চিমে ভূগর্ভস্থ অগভীরে ৭.৭ মাত্রার এই ভূমিকম্প আঘাত হানে। কয়েক মিনিট পর একই এলাকায় ৬.৪ মাত্রার আফটার শক অনুভূত হয়।

ব্যাংককে ভবন ধসে নিহত ৩
থাইল্যান্ডের ব্যাংককে একটি নির্মাণাধীন ৩০ তলা ভবন সম্পূর্ণ ধসে পড়েছে। উপপ্রধানমন্ত্রী ফুমথাম ওয়েচাইয়াচাই জানান, এতে অন্তত ৩ জন নিহত হয়েছেন। ধ্বংসস্তূপ থেকে কয়েক ডজন শ্রমিককে উদ্ধার করা হয়েছে। এখনও ৮১ জন আটকা রয়েছেন বলে জানিয়েছেন উদ্ধারকারীরা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, সরকারি অফিসের জন্য নির্মিত বিশাল এই ভবনটি মুহূর্তেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ব্যাং সু জেলার ডেপুটি পুলিশ প্রধান ওরাপাত সুকথাই বলেন, আমি ঘটনাস্থলে পৌঁছে সাহায্যের জন্য মানুষের আর্তনাদ শুনতে পেয়েছি। শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মিয়ানমারে ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ
মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদোর একটি হাসপাতালে অন্তত ২০ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে। দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্ডালয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় আহতদের অ্যাম্বুলেন্স, গাড়ি ও মোটরসাইকেলে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
মান্ডালয় জেনারেল হাসপাতালের এক চিকিৎসক বলেন, এত বেশি সংখ্যক আহত আসছেন যে নার্সদের কটন সোয়াব ফুরিয়ে গেছে। দাঁড়ানোর জায়গাও নেই।
৪৫ বছর বয়সী ক্যি শুইন নামের এক নারী বলেন, তার ৩ বছর বয়সী মেয়ে ভূমিকম্পে মারা গেছে। তিনি বলেন, আমি নিচে নামতে দৌড় দেই, কিন্তু সময়মতো পৌঁছাতে পারিনি। সরকারের কাছ থেকে কোনও সাহায্য পাচ্ছি না।

সরকারি ভবন ধস, বিমানবন্দর অচল
ইয়াঙ্গুন টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নেপিদো বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল টাওয়ার ধসে পড়েছে। বিমানবন্দরটি বন্ধ রয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের ভবনও ধসে পড়েছে বলে জানা গেছে।
মিয়ানমারের সামরিক জান্তা বিরল এক পদক্ষেপ নিয়ে আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা চেয়েছে। দেশটির ছয়টি অঞ্চলে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।

ভিয়েতনামেও আতঙ্ক
থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ব্যাংককে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন। ব্যাংকক স্টক এক্সচেঞ্জ বিকালের ট্রেডিং বন্ধ রেখেছে। ভিয়েতনামের হ্যানয় ও হো চি মিন সিটিতে মানুষ উঁচু ভবন থেকে দৌড়ে বেরিয়ে আসেন।

চীন-মালয়েশিয়ায়ও কম্পন
চীনের রুইলি শহরে জরুরি কর্মীরা ধ্বংসস্তূপ সরানোর চেষ্টা করছেন। মালয়েশিয়ার পেনাংয়ে কর্মরতরা ভবনের দোলা অনুভব করেছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মিয়ানমারের দ্রুত নগরায়ণ ও দুর্বল অবকাঠামো ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগ মোকাবিলার সক্ষমতা কমিয়ে দিয়েছে। ২০১৬ সালে ৬.৮ মাত্রার ভূমিকম্পে তিন জন নিহত হয়েছিলেন।
সূত্র: এএফপি, রয়টার্স, ব্লুমবার্গ

নিউজটি শেয়ার করুন

মিয়ানমার-থাইল্যান্ডে ভূমিকম্পে নিহত ২৫, ভিয়েতনামেও আতঙ্ক

আপডেট সময় : ১০:১৯:২২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ মার্চ ২০২৫

মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে শক্তিশালী ভূমিকম্পে অন্তত ২৫ জন নিহত হয়েছেন। শুক্রবারের ভূমিকম্পের প্রভাবে প্রতিবেশী থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামেও আতঙ্ক ছড়িয়েছে। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার (ইউএসজিএস) তথ্য অনুযায়ী, মিয়ানমারের সাগাইং শহরের উত্তর-পশ্চিমে ভূগর্ভস্থ অগভীরে ৭.৭ মাত্রার এই ভূমিকম্প আঘাত হানে। কয়েক মিনিট পর একই এলাকায় ৬.৪ মাত্রার আফটার শক অনুভূত হয়।

ব্যাংককে ভবন ধসে নিহত ৩
থাইল্যান্ডের ব্যাংককে একটি নির্মাণাধীন ৩০ তলা ভবন সম্পূর্ণ ধসে পড়েছে। উপপ্রধানমন্ত্রী ফুমথাম ওয়েচাইয়াচাই জানান, এতে অন্তত ৩ জন নিহত হয়েছেন। ধ্বংসস্তূপ থেকে কয়েক ডজন শ্রমিককে উদ্ধার করা হয়েছে। এখনও ৮১ জন আটকা রয়েছেন বলে জানিয়েছেন উদ্ধারকারীরা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, সরকারি অফিসের জন্য নির্মিত বিশাল এই ভবনটি মুহূর্তেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ব্যাং সু জেলার ডেপুটি পুলিশ প্রধান ওরাপাত সুকথাই বলেন, আমি ঘটনাস্থলে পৌঁছে সাহায্যের জন্য মানুষের আর্তনাদ শুনতে পেয়েছি। শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মিয়ানমারে ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ
মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদোর একটি হাসপাতালে অন্তত ২০ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে। দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্ডালয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় আহতদের অ্যাম্বুলেন্স, গাড়ি ও মোটরসাইকেলে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
মান্ডালয় জেনারেল হাসপাতালের এক চিকিৎসক বলেন, এত বেশি সংখ্যক আহত আসছেন যে নার্সদের কটন সোয়াব ফুরিয়ে গেছে। দাঁড়ানোর জায়গাও নেই।
৪৫ বছর বয়সী ক্যি শুইন নামের এক নারী বলেন, তার ৩ বছর বয়সী মেয়ে ভূমিকম্পে মারা গেছে। তিনি বলেন, আমি নিচে নামতে দৌড় দেই, কিন্তু সময়মতো পৌঁছাতে পারিনি। সরকারের কাছ থেকে কোনও সাহায্য পাচ্ছি না।

সরকারি ভবন ধস, বিমানবন্দর অচল
ইয়াঙ্গুন টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নেপিদো বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল টাওয়ার ধসে পড়েছে। বিমানবন্দরটি বন্ধ রয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের ভবনও ধসে পড়েছে বলে জানা গেছে।
মিয়ানমারের সামরিক জান্তা বিরল এক পদক্ষেপ নিয়ে আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা চেয়েছে। দেশটির ছয়টি অঞ্চলে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।

ভিয়েতনামেও আতঙ্ক
থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ব্যাংককে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন। ব্যাংকক স্টক এক্সচেঞ্জ বিকালের ট্রেডিং বন্ধ রেখেছে। ভিয়েতনামের হ্যানয় ও হো চি মিন সিটিতে মানুষ উঁচু ভবন থেকে দৌড়ে বেরিয়ে আসেন।

চীন-মালয়েশিয়ায়ও কম্পন
চীনের রুইলি শহরে জরুরি কর্মীরা ধ্বংসস্তূপ সরানোর চেষ্টা করছেন। মালয়েশিয়ার পেনাংয়ে কর্মরতরা ভবনের দোলা অনুভব করেছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মিয়ানমারের দ্রুত নগরায়ণ ও দুর্বল অবকাঠামো ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগ মোকাবিলার সক্ষমতা কমিয়ে দিয়েছে। ২০১৬ সালে ৬.৮ মাত্রার ভূমিকম্পে তিন জন নিহত হয়েছিলেন।
সূত্র: এএফপি, রয়টার্স, ব্লুমবার্গ