সংবাদ শিরোনাম :
বৈষম্যের ব্যাকরণ
ফারুক আহমেদ রনির কবিতা
৫২ বাংলা
- আপডেট সময় : ১০:৫৭:৪৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫
- / 422
হঠাৎ করে নিদ্রামগ্ন শহরের হৃদপিণ্ড কম্পিত হয়;
ভাঙে সোহাগের হাড়, পাঁজর,
পাথরচাপা মৃতপ্রাণ নিঃসঙ্গ শরীর
পথচারীর ভিড়ে উলঙ্গ রাজপথ,
রক্ত ঝরে, শরীর নয়,
বধির সময়ের লজ্জাহীন নিঃসরণ
পতাকার নীচে পড়ে থাকে শরবিদ্ধ গণতন্ত্র,
চৌকস রাষ্ট্রের অধীনে মুখথুবড়ে স্বাধীনতা ।
এমন স্বাধীনতার জন্য তোমরা মৃতচুম্বনে
ঘুমন্ত শিশুদের কানে শুনিয়েছিলে মুক্তির গান,
প্রতিজ্ঞার হুঙ্কারে ফোঁটা কুমারীলৌরঙ গোলাপ
রক্তচক্ষু থেকে খসে পড়ে তার পরাগ,
নষ্ট, ভ্রষ্ট নীলকণ্ঠ পাখি
ছিঁড়ে ফেলে তার বিষাক্ত পালক।
লোহিতখঞ্জর ভেদ করছে সময়ের নাভিমূল।
স্বাধীনতার নামে মিথিলার নিতম্বে
এঁকে দেয়া হয়েছে শোষণের মানচিত্র
শুষেনেয়া এক বিদগ্ধ ইতিহাস।
দূরে কোথাও কাঁচের দেয়ালের ভেতর
কেউ যেন লিখে- সংবাদ শিরোনাম
স্বায়ত্তশাসনে বেদখল বাকশক্তি
নিয়মের নামে অবরুদ্ধতা।
বিবেকবঞ্চিত শব্দের ইট, পাথর খচিত
রক্তাক্ত জয়বাংলার পতাকা,
শ্লোগানের বিষাক্ত হেডিং হয়ে শুয়ে আছে
আকাশমুখো বাংলাদেশ,
বিষাদগাঁথা সময়হীন অপেক্ষা
যাতে রচিত হয় প্রজ্ঞাবান বৈষ্যম্যবিরোধী
নাটকীয় উপাখ্যান!
এক শিশু ভুলে যেতে বসেছে বাবার মুখ,
মিথ্যে হুলিয়ার একাদশতম মাসে
অনিশ্চিত জীবনের বাবার মৌন ইতিহাস।
আরেক নীরব কৃষক,
যার আঙুলে প্রতিদিন সূর্য জন্মায়,
যার ঘামে ফসলের কুঁড়ি ফোটে
তবু হাটে সে, এক নামহীন সংখ্যামাত্র,
যার হিসাব মেলেনি রাষ্ট্রীয় বাজেটে
কেবল দেয়ালে আটকে থাকা এক ধূসরছায়া।
এ কেমন স্বাধীনতা?
এখানে সত্য নির্বাক পুতুল,
বারবার…
মুক্তি শব্দটি বন্দী মানুষের ঠোঁটেই থমকে যায়,
নীতিবাক্য পরাজিত হয় বৈষম্যের ব্যাকরণে।
ছিন্ন ঘোষণাপত্রের প্রান্তদেশে নদীর মতো বয়ে যায়,
জলহীন নির্বাসিত দিগন্ত।
























