ঢাকা ০৫:০৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

ইতালিতে ভিসা জালিয়াতি: বাংলাদেশিসহ আটক ৪৫ জন

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ১২:৩৩:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫
  • / 344
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ইতালিতে ভিসা ও বিভিন্ন নথিপত্র জালিয়াতির অভিযোগে তিনজন আইনজীবী, দুইজন পুলিশ সদস্য এবং বেশ কয়েকজন বাংলাদেশিসহ মোট ৪৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির বিশেষ তদন্তকারী দল।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও পিয়ানতেদোসি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও এক্সে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

স্থানীয় গণমাধ্যমে পুলিশের বরাত দিয়ে জানানো হয়, গ্রেপ্তারকৃতরা দীর্ঘদিন ধরে জাল কাগজপত্র প্রস্তুত এবং ভুয়া নথি ব্যবহার করে বিভিন্ন দেশ থেকে অভিবাসীদের ইতালিতে প্রবেশে সহায়তা করছিল। এমনকি অভিবাসীদের বৈধ করার প্রক্রিয়াতেও তারা প্রতারণার আশ্রয় নিত।

সরকারি পর্যায়ে বিষয়টি নজরে আসার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল নেপলস (নাপোলি) অঞ্চলে তদন্ত শুরু করে। তদন্তে একাধিক সংঘবদ্ধ চক্রের সন্ধান পাওয়া যায়।

এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার ইতালির প্রসিকিউটর নিকোলা গ্রাত্তেরি ও পুলিশ কর্মকর্তা দেল প্রেতের নেতৃত্বে নাপোলির নোলানো এলাকায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ৩ জন আইনজীবী, ২ জন পুলিশ সদস্য এবং বাংলাদেশিসহ মোট ৪৫ জনকে আটক করা হয়।

নেপলস আদালতের আদেশে তৌহিদ কামালসহ মোট ১১ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া আব্দুর রাজ্জাক রিপন, মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান, ফজলুল করিম, রাসেল আলী মীর ও রফিকুল শেখসহ ২১ জনকে গৃহবন্দি রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাকিদের বিরুদ্ধে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

প্রসিকিউটর নিকোলা গ্রাত্তেরি বলেন, “আটককৃতরা জাল নথিপত্রের মাধ্যমে অভিবাসীদের ইতালিতে প্রবেশ এবং বৈধতার সুযোগ করে দিত। এর বিনিময়ে তারা বড় অঙ্কের অর্থ আদায় করত।”

করোনাভাইরাস মহামারির পরবর্তী সময়ে শ্রমিক সংকট মোকাবিলায় ইতালি সরকার ২০২৩ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত তিন বছরে সাড়ে চার লাখ নন-ইউরোপিয়ান শ্রমিক নেওয়ার ঘোষণা দেয়। ২০২৩ সালে নির্ধারিত কোটা ছিল ১ লাখ ৩৬ হাজার, যেখানে আবেদন জমা পড়ে প্রায় ৩ লাখ ২০ হাজার।

অন্যদিকে ২০২৪ সালে ১ লাখ ৫১ হাজার কোটার বিপরীতে আবেদন পড়ে প্রায় ৬ লাখ ৯০ হাজার। এর একটি বড় অংশ জমা পড়ে দক্ষিণ ইতালির বন্দরনগরী নাপোলি থেকে।

তদন্তকারীদের ধারণা, এই কোটা বিপর্যয় এবং বিপুল চাহিদার ফারাকের সুযোগ নিয়েই গড়ে উঠেছে জালিয়াতির এই সংগঠিত চক্র।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ইতালিতে ভিসা জালিয়াতি: বাংলাদেশিসহ আটক ৪৫ জন

আপডেট সময় : ১২:৩৩:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫

ইতালিতে ভিসা ও বিভিন্ন নথিপত্র জালিয়াতির অভিযোগে তিনজন আইনজীবী, দুইজন পুলিশ সদস্য এবং বেশ কয়েকজন বাংলাদেশিসহ মোট ৪৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির বিশেষ তদন্তকারী দল।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও পিয়ানতেদোসি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও এক্সে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

স্থানীয় গণমাধ্যমে পুলিশের বরাত দিয়ে জানানো হয়, গ্রেপ্তারকৃতরা দীর্ঘদিন ধরে জাল কাগজপত্র প্রস্তুত এবং ভুয়া নথি ব্যবহার করে বিভিন্ন দেশ থেকে অভিবাসীদের ইতালিতে প্রবেশে সহায়তা করছিল। এমনকি অভিবাসীদের বৈধ করার প্রক্রিয়াতেও তারা প্রতারণার আশ্রয় নিত।

সরকারি পর্যায়ে বিষয়টি নজরে আসার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল নেপলস (নাপোলি) অঞ্চলে তদন্ত শুরু করে। তদন্তে একাধিক সংঘবদ্ধ চক্রের সন্ধান পাওয়া যায়।

এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার ইতালির প্রসিকিউটর নিকোলা গ্রাত্তেরি ও পুলিশ কর্মকর্তা দেল প্রেতের নেতৃত্বে নাপোলির নোলানো এলাকায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ৩ জন আইনজীবী, ২ জন পুলিশ সদস্য এবং বাংলাদেশিসহ মোট ৪৫ জনকে আটক করা হয়।

নেপলস আদালতের আদেশে তৌহিদ কামালসহ মোট ১১ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া আব্দুর রাজ্জাক রিপন, মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান, ফজলুল করিম, রাসেল আলী মীর ও রফিকুল শেখসহ ২১ জনকে গৃহবন্দি রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাকিদের বিরুদ্ধে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

প্রসিকিউটর নিকোলা গ্রাত্তেরি বলেন, “আটককৃতরা জাল নথিপত্রের মাধ্যমে অভিবাসীদের ইতালিতে প্রবেশ এবং বৈধতার সুযোগ করে দিত। এর বিনিময়ে তারা বড় অঙ্কের অর্থ আদায় করত।”

করোনাভাইরাস মহামারির পরবর্তী সময়ে শ্রমিক সংকট মোকাবিলায় ইতালি সরকার ২০২৩ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত তিন বছরে সাড়ে চার লাখ নন-ইউরোপিয়ান শ্রমিক নেওয়ার ঘোষণা দেয়। ২০২৩ সালে নির্ধারিত কোটা ছিল ১ লাখ ৩৬ হাজার, যেখানে আবেদন জমা পড়ে প্রায় ৩ লাখ ২০ হাজার।

অন্যদিকে ২০২৪ সালে ১ লাখ ৫১ হাজার কোটার বিপরীতে আবেদন পড়ে প্রায় ৬ লাখ ৯০ হাজার। এর একটি বড় অংশ জমা পড়ে দক্ষিণ ইতালির বন্দরনগরী নাপোলি থেকে।

তদন্তকারীদের ধারণা, এই কোটা বিপর্যয় এবং বিপুল চাহিদার ফারাকের সুযোগ নিয়েই গড়ে উঠেছে জালিয়াতির এই সংগঠিত চক্র।