রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ২৮ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
https://blu-ray.world/ download movies
সর্বশেষ সংবাদ
বাংলাদেশে ব্রিটিশ-বাংলাদেশিদের সম্পদ সুরক্ষায় অন্তবর্তীকালীন সরকারকে জরুরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে  » «   ইস্টহ্যান্ডস চ্যারিটির উদ্যোগে ক্যাপাসিটি বিল্ডিং কর্মশালায় বিভিন্ন পেশার মানুষের অংশগ্রহণ  » «   হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিমের  বিরুদ্ধে নীতিহীন কর্মকান্ডের অভিযোগ  » «   সাংবাদিক ক্যারলকে গ্লোবাল জালালাবাদ ফ্রান্সের বিশেষ সম্মাননা প্রদান  » «   গ্লোবাল জালালাবাদ এসোসিয়েশনের আন্তর্জাতিক জালালাবাদ উৎসব প্যারিস অনুষ্ঠিত  » «    সাকিব : নক্ষত্রের কক্ষচ্যুতি  » «   লন্ডনে ইউরোপের সবচেয়ে বড় ঐতিহ্যবাহী চাটগাঁয়ে মেজবান ৬ অক্টোবর রবিবার  » «   ১১তম মুসলিম চ্যারিটি রান ২০ অক্টোবর ভিক্টোরিয়া পার্কে  » «   ৭৫ শেফ এর অংশগ্রহণে বিসিএর শেফ অব দ্যা ইয়ার প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত  » «   ৩০ বছরেও ধরা পড়েনি কোনো আসামী, বিচারের দাবীতে মেয়ের সংবাদ সম্মেলন  » «   ইস্টহ্যান্ডসের ফ্রি স্মার্ট ফোন পেলেন ৪০ জন  » «   সম্মিলিত সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদ যুক্তরাজ্য পদক ২০২৪’পেলেন কবি, সাহিত্যিক ও সংগঠক ফারুক আহমেদ রনি  » «   টাওয়ার হ্যামলেটসে হোমলেসনেস-এর প্রস্তাবিত নতুন পলিসি সাসপেন্ড করেছেন নির্বাহী মেয়র লুৎফুর  » «   লন্ডনে বিসিএ এ্যাওয়ার্ডস ২৮ অক্টোবর থাকছে নানা চমকপ্রদ আয়োজন  » «   বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৩২নং বাসভবন ভস্মীভূত এবং ভাস্কর্য ভাংচুরের নিন্দা ও প্রতিবাদ  » «  
সাবস্ক্রাইব করুন
পেইজে লাইক দিন

গুচ্ছ কবিতা ।। আবু মকসুদ



সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

কীট

আমার অনেক কিছু হওয়ার কথা ছিল

অনেক ভারী কিছু, শৈশবে

মিতালীরা বাড়ি যেত। বড়োসড়ো ওজনদার

তালা সদর দরজায় ঝুলিয়ে

দুই-তিন সপ্তাহের জন্য তারা হাপিস হয়ে যেত;

ইচ্ছে করতো আমি পাহারাদার হই,

তাদের সদর দরজায় তালা হয়ে ঝুলে থাকি।

চালের আড়তে বিশ কিলো ওজনের

বাটখারা খুব পছন্দ ছিল, ইচ্ছে ছিল

বাটখারা হব। আড়তের বৃদ্ধ কর্মচারীর

কষ্ট লাঘবে এগিয়ে গেলে;

সমস্ত শক্তি দিয়ে একচুল নড়াতে পারতাম না;

ঈর্ষার চোখে চাইতাম, আশেপাশে দেখতাম

বিশ কিলো মানুষের জীবন। মানুষকে

ভালোবেসে বাটখারা হতে চাইতাম।

 

চেরাই কাঠের

করাত ভীতি জাগাত, বিশাল বৃক্ষকে

নিমিষেই ফালাফালা করে ফেলত।

 

করাতের দোর্দণ্ড প্রতাপের কাছে

বৃক্ষের বিশালতা কত অসহায়। একদিন

মানুষের বুকে চির ধরাবো এই আশায়

করাত হতে চাইতাম।

 

আনসার মাঠ তছনছ করে

উঠছে সাত মহলা বাড়ি; অসহায় আমি

দূরে দাঁড়িয়ে সহ্য করছি হাতুড়ির আঘাত।

 

একটু একটু করে হারিয়ে যাচ্ছে শৈশব

হারিয়ে যাচ্ছে স্মৃতি, হাতুড়ির প্রতি ক্রোধে

তোলপাড় হচ্ছে প্রাণ প্রতিশোধের আকাঙ্ক্ষায়

বিশালাকার হাতুড়ি হতে চাইতাম।

 

হাতুড়ি কেড়ে নিয়েছে শৈশব

আনসার মাঠে রোদের চিহ্ন নেই;

ইটের জঙ্গলে কেউ শৈশব খুঁজে না।

শৈশব হারিয়ে গেলে

কিছু হওয়ার ইচ্ছে মরে যায়

ওজনদার কোনকিছু লালায়িত করে না

এখন আমি অন্য অনেকের মত মানুষরূপী কীট।

প্রিয় স্বদেশ

প্রিয় স্বদেশ তুমি কী অসুস্থ?

কেমন যেন বিমর্ষ দেখাচ্ছে,

তোমার দুচোখ ঘোলাটে।

 

এই চোখ দীঘির গভীর জলের মত ছিল,

যখন ইচ্ছা অবলীলায় ডুব দিয়েছি।

 

তোমার কণ্ঠনালি কী শুকিয়ে গেছে,

আওয়াজ বেরুচ্ছে না কেন?

 

তোমার গমগম আওয়াজে

চৈত্রের মাঠে জল উদগীরণ হয়েছে,

প্রবল খরায় তোমার চিৎকারে ভীত

মেঘরাজ তড়িঘড়ি নিজের মেয়ে

বৃষ্টিকে পাঠিয়েছে। বৃষ্টি সিক্ত

করেছে সারা শরীর।

 

তোমার দুহাতে কালশিটে

নাড়াতে কী খুব কষ্ট হচ্ছে?

 

এই হাত লাঙ্গলের ফলা ধরে সেঁধে

গেছে মাটির গভীরে, সবুজ ফসলে

ভরে উঠেছে ভোরের উঠান।

 

দুই পা স্থবির কেন? কী

কারণে আজ চলৎশক্তিহীন!

 

দুই পায়ে হেঁটে বিশ্ব বিজয় করেছ

দুনিয়ার তাবৎ পাপী তোমার পায়ে

লুটোপুটি খেয়েছে।

 

প্রিয় স্বদেশ তোমার বুকে আঘাতের

চিহ্ন কেন? কোন গুপ্ত ঘাতক

বিদীর্ণ করেছে তোমার হৃদয়?

 

এই হৃদয় সবাইকে আপন ভেবেছিল

উষ্ণ হৃদয়ের তুমি হয়ে উঠেছিলে

মায়ের প্রতীক।

 

প্রিয় স্বদেশ কে সেই মাতৃ ঘাতক

কে সেই পাষাণ হৃদয়?

কোন মর্ষকামী ইবলিশ উচ্ছেদের ইচ্ছায়

একে একে খুলে নিচ্ছে পড়নের কাপড়!

 

প্রিয় স্বদেশ সুস্থতায় ফিরে এসো

পাপীদের নির্মূলে পুনরায় আওয়াজ তোলো

মুক্তিকামীর জয় হোক, অত্যাচারী নিপাত যাক

বিশুদ্ধতায় ভরে উঠুক তোমার চারপাশ।

পরিত্যাজ্য

রূপের নগর শেফিল্ড, চারিদিকে ঝলমল

করছে সবুজ। উঁচু টিলা, ঢালু খাদ

প্রবাহিত ঝর্ণা।

 

স্মরণে আসে জন্ম শহর মৌলভীবাজার

অকৃত্রিম রূপে, প্রবাহিত মনু বুকের খাঁজে

গিয়ে মিশে কুশিয়ারায়।

 

মনুর প্রবাহে ভাসতে ভাসতে শেফিল্ডের

ঝর্ণায় পুনরায় দেখা দিলে ডেকে উঠে

দুরন্ত দোয়েল।

 

নিম ডালের টুনটুনি দুদণ্ড অবসরে নিজস্ব

আবাসের স্বপ্নে জড় করে ঝরাপাতা,

আমিও স্বপ্নে ভাসি।

 

বাবুয়ের শিল্পীত আবাসের স্বপ্নে জড় করি

বিরহ বেদনা। মনুর জলে ডুব সাঁতার শেষে

ভেসে উঠি।

 

আমাকে ভাসায় শেফিল্ডের ঝর্ণা, আমি

বেদনায় ভাসতে ভাসতে হারিয়ে ফেলি

স্বপ্নের ঠিকানা।

 

মৌলভীবাজার আমাকে পরিত্যাগ করেছে

পরিত্যাগ করেছে মনু, শেফিল্ডের ঝর্ণাকে

আপন ভেবেছিলাম।

 

আগন্তুকের পরিচয়ে তাকে খুশি করা

গেল না, গ্রহন করেছে তবু দাঁড় করিয়ে

রেখেছে অসীম দূরত্বে।

অবিবেচক

বৃষ্টি ভেজা ঠোটের রাত পেরিয়ে  যখন

একুরিয়ামে ঢুকলাম

আমার নির্ধারিত আসন মা মাছের

দখলে, পর্দায় নিবিষ্ট চোখ।

 

পর্দায় অতি আধুনিকা মেয়ে বাবার

বন্ধুর সাথে সংসার পাতিয়েছে।

 

সময় অসময়ে পর্যবেশিত

আধুনিকতায় সবকিছু গোল্লায় গেছে,

গজগজ করতে থাকলে

চুপ থাকাই শ্রেয় মনে করলাম।

 

গোল্লায় গেছে সেটা অসত্য নয়।

আমি নিজে সাক্ষী, আজ ছয়মাস ধরে

এক তরুণীর পাল্লায় পড়েছি কিংবা

আমার পাল্লায় পড়েছে তরুণী।

 

একুরিয়ামে আদর্শ মাছ, জগৎসংসারের

উনিশ বিশে ক্ষেপে উঠি

অতি আধুনিকতার তরুণ

তরুণীরা দু-চোখের বিষ।

 

একুরিয়ামের বাইরে আমি লম্পট।

মেয়ের বয়সী মেয়ের সাথে

দহরম মহরম, প্রেমের বিবেচনাবোধ কম

আদর্শ স্বামীও অবিবেচকে পরিণত হয়।

 


সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন