রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সারওয়ার মাহমুদ, এনডিসি বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) দুপুর ১ ঘটিকায় ইকুয়েটোরিয়াল গিনির রাষ্ট্রপতি থিয়ডরো অবিআং এনগুয়েমা এমবিএসোগো-এর নিকট তাঁর পরিচয়পত্র পেশ করেন। করোনা মহামারির কারনে কোভিড-১৯ স্বাস্থ্যবিধি মেনেই রাষ্ট্রপতি ভবনে এক আড়ম্বরপূর্ণ পরিবেশে পরিচয়পত্র পেশ করা হয়। রাষ্ট্রদূত তার সফরসঙ্গীসহ আনুষ্ঠানিক মোটর শোভাযাত্রায় হোটেল থেকে রাষ্ট্রপতি দপ্তরে গমন করেন। পরিচয়পত্র পেশের পর রাষ্ট্রপতি থিয়ডরো অবিআং এনগুয়েমা এবং নব-নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সারওয়ার মাহমুদের মধ্যে এক একান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রদূতকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান। রাষ্ট্রদূত মাহমুদ রাষ্ট্রপতিকে বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা পৌছে দেন।
তিনি উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আর্থ সামাজিক উন্নয়নে দ্রুত বেগে এগিয়ে যাচ্ছে, উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ন অবদান রাখছে। বাংলাদেশে অবস্থানরত মিয়ানমার থেকে আগত বাস্তুচ্যুত ১.১ মিলিয়ন রোহিঙ্গার দূর্দশার কথা ব্যক্ত করে রাষ্ট্রদূত রোহিঙ্গাদের স্বদেশভূমি মিয়নমারে সম্মানজনক প্রত্যাবাসনে আন্তর্জাতিক জনমত গঠনে ইকুয়েটোরিয়াল গিনির কার্যকরি সহযোগিতা কামনা করেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন যে রাষ্ট্রপতি থিয়ডরো অবিআং এর নেত্রীত্বে ইকুয়েটোরিয়াল গিনি অব্যহতভাবে গত দুই দশক ধরে আর্থ সামাজিক ক্ষেত্রে প্রভূত উন্নতি সাধন করেছে এবং আফ্রিকা মহাদেশে অন্যতম অর্থনেতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে। এদেশে উদীয়মান অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষ ও কর্মঠ জনশক্তির জন্য বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হতে পারে। রাষ্ট্রদূত ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন যে, ইকুয়েটেরিয়াল গিনিতে প্রায় ২০০ বাংলাদেশী বিভিন্ন কোম্পানিতে ফাইন্যান্স ম্যানেজার, আইটি এক্সপার্ট, শিপিং এজেন্টসহ অন্যান্য পেশায় অত্যন্ত সুনামের সাথে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে আরোও অধিক সংখ্যক দক্ষকর্মী এদেশে বৈধপথে আনার জন্য দু’দেশের সরকারের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের প্রস্তাব করেন। বিদ্যমান চমৎকার দ্বি-পাক্ষিক সর্ম্পকের কথা উল্লেখ্যপূর্বক, রাষ্ট্রদূত সম্ভাবনার নতুন ক্ষেত্র চিহ্নিত করে দু’দেশের সম্পর্ক আরো সম্প্রসারিত করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। তিনি বাংলাদেশের মানসম্মত ঔষধ, চামড়া ও চামড়াজাত দ্রব্য, হিমায়িত মৎস্য, গৃহস্থালীর কাজে ব্যবহার্য ইলেকট্রিক দ্রব্য সামগ্রী বাংলাদেশ থেকে আমাদানীর আহবান জানান।
রাষ্ট্রপতি অবিআং রাষ্ট্রদূতের উত্থাপিত বিষয়সমূহ গুরুত্বসহকারে শোনেন এবং সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। ইকুয়েটোরিয়াল গিনির ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উন্নয়নে বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর ব্যাপারে তিনি আগ্রহ প্রকাশ করেন। রাষ্ট্রদূত এতে স্বতঃস্ফু্র্ত সাড়া দেন এবং বলেন যে, এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দেশটির উন্নয়নে অন্যতম অংশীদার হতে প্রস্তুত। আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অব্যহত উন্নয়নের জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভুয়সী প্রশংসা করেন। রাষ্ট্রপতি অবিআং রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সুস্বাস্থ্য কামনা করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। গত ৬ এপ্রিল ২০২২ রাষ্ট্রদূত ইকুয়েটোরিয়াল গিনির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিমেওন ওয়োনো এসোনো এর সাথে তার দপ্তরে সৌজন্য সাক্ষাত করেন। পরিচয়পত্র পেশ অনুষ্ঠানে মিশন উপ-প্রধান এটিএম আব্দুর রউফ মন্ডল এবং কাউন্সেলর দীন মোঃ ইমাদুল হক উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি