রাজনীতিতে বাংলাদেশের হীরন্ময় ইতিহাস মুক্তিযুদ্ধের আদর্শিক চিন্তা, চেতনা এবং কথা ও কাজের গ্রহনযোগ্যতা বর্তমান সময়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। শাক দিয়ে মাছ ঢাকা অথবা কথায় চিড়া ভিজানো তত্ব দিয়ে ডিজিটাল যুগে পার পেয়ে যাওয়ার চিন্তাতত্ত্ব বা চর্চাটি জনগণ বর্জিত হয়েছে। সংখ্যাগরিষ্ট মানুষ বিদ্রোহ বা প্রতিবাদী হয়ে জয়ী হতে না পারলেও তারা অন্তত এসবে চায়ের কাপে অকারণ ঝড়তুলে না বা এসবে আগের মতো গুরুত্ব দেয় না।
সৎ এবং কাজের প্রতি প্রত্যয় নিয়ে যারা কাজ করেছেন এবং করছেন এবারের মন্ত্রীসভায় তাঁদের স্থান উল্লেখযোগ্যভাবে দৃশ্যমান হয়েছে। বাংলাদেশকে নিয়ে আমাদের গর্বেরও একটি জায়গা আছে ; আমাদের একজন পজিটিভ রাস্ট্রনায়ক আছেন। যিনি প্রখর প্রজ্ঞা, ধীমান চিন্তা এবং ঐতিহ্য, সাহিত্য সংস্কৃতিবান্ধব। বাংলাদেশকে একটি পজিটিভ রাস্ট্র হিসাবে বিশ্বে তুলে ধরতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিকল্প যে এখনও হয়ে ওঠেনি তা খোদ নিন্দুকেরাই স্বীকার করবেন।
দেড় কোটিরও বেশী প্রবাসীদের প্রতিনিধিত্বশীল সৎ সাহসী এবং যোগ্যতম মানুষের মোটাদাগে অভাব আছে রাস্ট্র পরিচালনার নেতৃস্থানীয় পর্যায়ে। এই অভাবটিকে আরও স্পষ্ট করে বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের নানা অনালোকিত সংবাদ, বিমানবন্দরে হয়রানি, নিখোজ,হত্যা, প্রবাসীদের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার দীর্ঘদিনের দাবিটি সত্যিকার অর্থে আলোর মুখ না দেখা ইত্যাদি ঘটনা প্রবাহ।
মধ্যপ্রাচ্যে নারী শ্রমিকদের উপর অমানষিক নির্যাতন এবং সামগ্রিকভাবে নারী শ্রমিকদের অসহায়ত্বের করুন চিত্র সংবাদ মাধ্যমে নিয়মিত প্রকাশ পাচ্ছে। যা প্রকারান্তরে পজিটিভ বাংলাদেশের এটিচিউডকে চ্যালেঞ্জ এর মূখে রেখেছে।
নারীবান্ধব এবং প্রবাসবান্ধব সরকার হিসাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মোটাদাগে অর্জিত সুনামকে ধরে রাখতে একাদশ জাতীয় সংসদে একজন প্রবাসী নারী এমপি সময়ের দাবী।
এবারের সংসদ নির্বাচনে তিনজন প্রবাসী এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। পররাস্ট্র মন্ত্রী হিসাবে একজন অভিজ্ঞ এবং পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ হিসাবেও তার গুণটি সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে।
সংসদীয় নারী আসনে একজন প্রবাসী মহিলা এমপি দেড় কোটিরও বেশী প্রবাসীদের জন্য আর একটি সাফল্যবার্তা নিয়ে আসতে পারেন। বিশেষ করে, নারী শ্রমিকদের সামগ্রিক সেইফগার্ড বিষয়ে চিন্তা এবং তাদের সমস্যা, সম্ভাবনা ইত্যাদি বিষয়ে আন্তর্জাতিক শাখাগুলোতে একজন প্রবাসী, বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের এমপি হিসাবে প্রতিনিধিত্ব করার গুরুত্ব বলার অপেক্ষা রাখে না।
একাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের জন্য আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন একজন প্রবাসী । আরব আমিরাত প্রবাসী, চট্রগ্রামের মেয়ে, জাতীয় নেতা মরহুম আব্দুর রাজ্জাক স্মৃতি সংসদের সভাপতি কাজী সিরাজের সুযোগ্য কন্যা লে: (অব:) কাজী গুলশান আরা। বিষয়টি স্যোসাল মিডিয়ায় প্রকাশিত হওয়ার পর প্রবাসী এই নারী প্রশংসিত হচ্ছেন।
ছবি:শুলশান আরা’র ফেইসবুকে এই ছবিটি আপলোড হবার পরে প্রবাসীরা ইতিবাচক মন্তব্যে নিজেদের ফেইসবুক ওয়ালে শেয়ার করছেন
গুলশান আরা একজন মেধাবী,সাহসী এবং গ্লোবাল চিন্তাশৈলীর মানুষ। মন ও মননে পজিটিভ বাংলাদেশ কাজ করে। আরব আমিরাতে বাংলাদেশকে বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক কাজে পজিটিভ বাংলাদেশকে তুলে ধরতে কাজ করছেন দীর্ঘদিন থেকে। সংহতি সাহিত্য পরিষদ এর আরব আমিরাত শাখার সভাপতির দায়িত্বে বাংলাদেশকে তুলে ধরার কাজগুলোও আলোকিত। সফল ব্যবসায়ী, প্রশাসনিক কাজে অভিজ্ঞ, সৎ, সর্বপরি সংস্কৃতি বান্ধব শুলশান আরা কে সংরক্ষিত মহিলা আসনে এমপি মনোনীত করলে দেড় কোটি প্রবাসী বিভিন্নভাবে উপকৃত হবেন বলে বিশ্বাস করি।
আন্তর্জাতিক ভাবে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনেকগুলো উচ্চারিত গুণের মধ্যে একটি হলো- রাষ্ট্রনায়কচিত আগামীর স্বচ্ছচিন্তা এবং এর পজিটিভ বাস্তবায়ন। বিশ্বে অনুকরণীয় ব্যক্তিত্বে ‘মাদার অফ হিউম্যানিটি‘র আলোজ্বলমল দিক যেমন আছে তেমনি, তিনি-ই বাংলাদেশের একমাত্র রাষ্ট্রনায়ক যাঁকে শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় ‘মা‘, ‘আপা‘ নির্ধিধায় সংবোধন করা যায় এবং তিনি সহজাত সবার সাথে আন্তরিকভাবে মিশে থাকেন। শুদ্ধমন ও মানবিকতায় রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে এরকম চর্চার বিষয়টি একটি দেশের জন্য অনেক গর্বের। শুনলেই গর্ব- আনন্দে চোখে জল আসে।
আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিশ্চয় অবগত আছেন, প্রবাসে নারী শ্রমিকদের করুন নির্যাতনের ঘটনা সম্পর্কে। সংবাদমাধ্যমে ওঠে আসা এইসব ইনসিডেন্টগুলো অত্যন্ত অমানবিক,চরম বেদনার এবং কষ্টের। পাশাপাশি দিনের পর দিন শারিরিক, মানষিক নির্যাতনে নি:স্ব হয়ে দেশে ফেরার চিত্রগুলো প্রকারান্তরে রাষ্ট্রকেই ব্যথিত করে।দেড় কোটি প্রবাসীর রেমিটেন্স যেমন আলোকিত বাংলাদেশের হীরকরাজিকা। তেমনি তাদের অশ্রুজলও রাষ্ট্রের পাজর ছেড়া কষ্টের প্রতিবাদীচিহ্ন। মধ্যপ্রাচ্যের দুতাবাসগুলোর উদাসীনতা বা এই বিষয়গুলো চিহ্নিত করে কার্যকর প্রদক্ষেপ না নেবার অভিযোগগুলো থেকে বেরিয়ে উন্নয়ন এবং প্রবাসীবান্ধব চিন্তা ও পরিকল্পনা নিয়ে গ্লোবালি কাজ করার মতো যোগ্যদের স্থান এবারের মন্ত্রীসভায় অগণণ জনগণ প্রত্যাশা করে।
‘প্রবাসীদের দাবী‘ বলে আমরা যেসব কথা বলি, সচেতনভাবে,মনের শুদ্ধতা নিয়ে দেখলে আসলে এগুলো তাদের দাবী নয়। রাষ্ট্রের কাছে দেড় কোটিরও বেশী প্রবাসীর বঞ্চিতকথা গুলোর উচ্চারিত ধ্বণি। নাগরিক অধিকার বঞ্চিতদের উচ্চকণ্ঠ। দেশকে ভালোবেসে, পরিবার পরিজন দেখতে ও আনন্দসময় কাটাতে মাতৃভূমিতে এসে বিমান বন্দর থেকে শুরু করে প্রায় সবখানে প্রবাসীরা বিভিন্নভাবে দূবৃত্তায়িত এবং আক্রান্ত। প্রবাসীদের লাশটি বহনেও বিভিন্ন দূতাবাস ও বাংলাদেশ বিমানের বিমাতাসূলভ ব্যবহারের বিরুদ্ধে নায্য অধিকারের সমবেত কণ্ঠকে সচেতনভাবে ‘প্রবাসীদের দাবী‘ বলে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার বা হালকাভাবে দেখার দীর্ঘদিনের আমলাতান্ত্রিক চর্চা থেকে বের হতে চাই সৎ,যোগ্য প্রতিশ্রুতিশীল নিবেদিতপ্রাণ প্রবাসবান্ধব জনপ্রতিনিধি।
পরবাসে হাজারও কষ্ট,স্বজন হারানোর ব্যাথা-বেদনা এবং বঞ্চনার মাঝেও একজন প্রবাসী তাঁর নাড়িপোতা ভূমির গন্ধসুধা আর বুকে লাল সবুজের পতাকা ধারণ করে যে ঘুমায় আর দিনের পর দিন পরিবারের সুখ ও উন্নত জীবনের আশায় প্রবাসী হয়ে বেচে থাকে, এটা একমাত্র প্রবাসী হলেই অনুভব ও বুঝা যায়।
আরব আমিরাত থেকে প্রত্যয়ী গুলশান আরা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর মনোনয়ন চেয়েছেন। বিভিন্ন দেশে এই রকম অনেক প্রবাসী নারী রাজনীতিবিদ আছেন। তাদেরও সবর এবং উচ্চকণ্ঠ হওয়া এখন সময়ের দাবী।
ষোল জানুয়ারী, দুই হাজার ঊনিশ।
আ নো য়া রু ল ই স লা ম অ ভি; কবি,সাংবাদিক, লন্ডন।