ঢাকা ০৭:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

ইরানে ‘পারমাণবিক বোমা হামলা’র পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রের

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ১১:০০:১৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫
  • / 251
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ইরানের ওপর পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের আশঙ্কা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ ছড়িয়েছে—আর সেই শঙ্কা এবার উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনের ভেতর থেকেই। ট্রাম্প প্রশাসন চাইছে, ইরানের ফোর্দো পারমাণবিক স্থাপনাটি একটি কৌশলগত পারমাণবিক বোমা দিয়ে ধ্বংস করে দেওয়া হোক।

বুধবার দ্য গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে জানায়, পাহাড়ের গভীরে অবস্থিত হওয়ায় ফোর্দো স্থাপনাটিকে প্রচলিত বাংকার-বাস্টার বোমা দিয়ে ধ্বংস করা সম্ভব হবে না—এমন ধারণা করছে মার্কিন সামরিক বাহিনী।

প্রতিরক্ষা বিভাগের অন্তত দুজন কর্মকর্তাকে এমন তথ্য দেওয়া হয়েছে যে, কেবলমাত্র একটি কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করেই নির্ধারিত লক্ষ্যবস্তুতে সঠিকভাবে পৌঁছানো সম্ভব।

তবে এ বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অবস্থান অস্পষ্ট। প্রশাসনের নীতিতে এমন উদ্যোগ থাকলেও, ব্যক্তিগতভাবে তিনি পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারে অনিচ্ছুক বলে জানা যাচ্ছে।

এদিকে, ফক্স নিউজ–এর অপর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আকারে ইরান যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের চেয়েও প্রায় তিন গুণ বড়। পাহাড়বেষ্টিত এই দেশটিতে সরাসরি সেনা অভিযান চালানোর কোনো পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রের নেই।

তবে হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ইরানের পারমাণবিক প্রকল্প ধ্বংসে সম্ভাব্য সব বিকল্পই বিবেচনায় রয়েছে—তা পারমাণবিক অস্ত্র হলেও।

এ নিয়ে বৃহস্পতিবার ফক্স নিউজ–এর জ্যেষ্ঠ হোয়াইট হাউস প্রতিনিধি জ্যাকি হেইনরিখ জানান, হোয়াইট হাউসের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা তাকে নিশ্চিত করেছেন যে, “গার্ডিয়ান–এর প্রতিবেদন সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং মার্কিন সেনাবাহিনী আত্মবিশ্বাসী যে প্রচলিত বাংকার-বাস্টার বোমাই ফোর্দোর মতো লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছাতে যথেষ্ট।”

এই পরস্পরবিরোধী বক্তব্যের ফলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উদ্বেগ আরও বেড়েছে। ইরান ও ইসরায়েল পরস্পরকে লক্ষ্য করে হামলা চালানোয় মধ্যপ্রাচ্যে যে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে, তার মধ্যে এমন তথ্য পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, নয় কোটি জনসংখ্যার একটি দেশে পারমাণবিক হামলা চালানো শুধু অসংখ্য নিরীহ মানুষের মৃত্যুই ডেকে আনবে না, বরং গোটা অঞ্চল দীর্ঘ সময় ধরে তেজস্ক্রিয়তায় আক্রান্ত হবে, এবং বিশ্বব্যাপী সংঘাতের জটিলতা আরও বাড়বে।

প্রসঙ্গত, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাঁর ক্ষমতাকালে একাধিকবার ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, তিনি ‘এন্ডলেস ওয়ার’—অর্থাৎ অনন্তকাল ধরে চলা যুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা করবেন। কিন্তু সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলো সেই প্রতিশ্রুতির বিপরীত পথেই হাঁটছে বলে মত বিশ্লেষকদের।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ইরানে ‘পারমাণবিক বোমা হামলা’র পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রের

আপডেট সময় : ১১:০০:১৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫

ইরানের ওপর পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের আশঙ্কা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ ছড়িয়েছে—আর সেই শঙ্কা এবার উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনের ভেতর থেকেই। ট্রাম্প প্রশাসন চাইছে, ইরানের ফোর্দো পারমাণবিক স্থাপনাটি একটি কৌশলগত পারমাণবিক বোমা দিয়ে ধ্বংস করে দেওয়া হোক।

বুধবার দ্য গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে জানায়, পাহাড়ের গভীরে অবস্থিত হওয়ায় ফোর্দো স্থাপনাটিকে প্রচলিত বাংকার-বাস্টার বোমা দিয়ে ধ্বংস করা সম্ভব হবে না—এমন ধারণা করছে মার্কিন সামরিক বাহিনী।

প্রতিরক্ষা বিভাগের অন্তত দুজন কর্মকর্তাকে এমন তথ্য দেওয়া হয়েছে যে, কেবলমাত্র একটি কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করেই নির্ধারিত লক্ষ্যবস্তুতে সঠিকভাবে পৌঁছানো সম্ভব।

তবে এ বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অবস্থান অস্পষ্ট। প্রশাসনের নীতিতে এমন উদ্যোগ থাকলেও, ব্যক্তিগতভাবে তিনি পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারে অনিচ্ছুক বলে জানা যাচ্ছে।

এদিকে, ফক্স নিউজ–এর অপর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আকারে ইরান যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের চেয়েও প্রায় তিন গুণ বড়। পাহাড়বেষ্টিত এই দেশটিতে সরাসরি সেনা অভিযান চালানোর কোনো পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রের নেই।

তবে হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ইরানের পারমাণবিক প্রকল্প ধ্বংসে সম্ভাব্য সব বিকল্পই বিবেচনায় রয়েছে—তা পারমাণবিক অস্ত্র হলেও।

এ নিয়ে বৃহস্পতিবার ফক্স নিউজ–এর জ্যেষ্ঠ হোয়াইট হাউস প্রতিনিধি জ্যাকি হেইনরিখ জানান, হোয়াইট হাউসের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা তাকে নিশ্চিত করেছেন যে, “গার্ডিয়ান–এর প্রতিবেদন সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং মার্কিন সেনাবাহিনী আত্মবিশ্বাসী যে প্রচলিত বাংকার-বাস্টার বোমাই ফোর্দোর মতো লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছাতে যথেষ্ট।”

এই পরস্পরবিরোধী বক্তব্যের ফলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উদ্বেগ আরও বেড়েছে। ইরান ও ইসরায়েল পরস্পরকে লক্ষ্য করে হামলা চালানোয় মধ্যপ্রাচ্যে যে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে, তার মধ্যে এমন তথ্য পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, নয় কোটি জনসংখ্যার একটি দেশে পারমাণবিক হামলা চালানো শুধু অসংখ্য নিরীহ মানুষের মৃত্যুই ডেকে আনবে না, বরং গোটা অঞ্চল দীর্ঘ সময় ধরে তেজস্ক্রিয়তায় আক্রান্ত হবে, এবং বিশ্বব্যাপী সংঘাতের জটিলতা আরও বাড়বে।

প্রসঙ্গত, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাঁর ক্ষমতাকালে একাধিকবার ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, তিনি ‘এন্ডলেস ওয়ার’—অর্থাৎ অনন্তকাল ধরে চলা যুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা করবেন। কিন্তু সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলো সেই প্রতিশ্রুতির বিপরীত পথেই হাঁটছে বলে মত বিশ্লেষকদের।