শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
https://blu-ray.world/ download movies
Sex Cams
সর্বশেষ সংবাদ
টাওয়ার হ্যামলেটসের বো এলাকায় নতুন কাউন্সিল ভবনের উদ্বোধন করেছেন নির্বাহী মেয়র লুৎফুর  » «   বাংলাদেশে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকের প্রাণহানি এবং সৃষ্ট অস্থিরতা-সহিংসতায় লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের ক্ষোভ-নিন্দা  » «   সৃজনের আলোয় মুস্তাফিজ শফি, লন্ডনে বর্ণাঢ্য সংবর্ধনা  » «   বৃটেনে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তাহমিনার অসাধারণ সাফল্য  » «   দুই বঙ্গকন্যা ব্রিটিশ মন্ত্রীসভায় স্থান পাওয়ায় বঙ্গবন্ধু লেখক এবং সাংবাদিক ফোরামের আনন্দ সভা ও মিষ্টি বিতরণ  » «   কেয়ার হোমের লাইসেন্স বাতিলের বিরুদ্ধে আইনী লড়াইয়ে ল’ম্যাটিক সলিসিটর্সের সাফল্য  » «   যুক্তরাজ্যে আবারও চার ব্রিটিশ-বাংলাদেশী  পার্লামেন্টে  » «   আমি লুলা গাঙ্গ : আমার আর্তনাদ কেউ  কী শুনবেন?  » «   বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদে লন্ডনে ইউনিভার্সেল ভয়েস ফর হিউম্যান রাইটসের সেমিনার অনুষ্ঠিত  » «   লন্ডনে বাংলা কবিতা উৎসব ৭ জুলাই  » «   হ্যাকনি সাউথ ও শর্ডিচ আসনে এমপি প্রার্থী শাহেদ হোসাইন  » «   ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই ইন দ্য ইউকে’র সাথে ঢাবি ভিসি প্রফেসর ড. এএসএম মাকসুদ কামালের মতবিনিময়  » «   মানুষের মৃত্যূ -পূর্ববর্তী শেষ দিনগুলোর প্রস্তুতি যেমন হওয়া উচিত  » «   ব্যারিস্টার সায়েফ উদ্দিন খালেদ টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের নতুন স্পীকার নির্বাচিত  » «   কানাডায় সিলেটের  কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলমকে সংবর্ধনা ও আশার আলো  » «  
সাবস্ক্রাইব করুন
পেইজে লাইক দিন

ঈদের দিনে বিলেত প্রবাসীদের মনোবেদনা
নূর লোদী



সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

 

সোমবার থেকে রোববার হিসেব করতে করতে কখন যে বছর শেষ হয়ে যায়, নিজেও বলতে পারি না। দেশ থেকে যখন খবর আসে নিয়মিত মাসিক খরচের টাকার সাথে মোটা অংকের টাকা পাঠানোর জন্য  ঈদের আনন্দ সকলে ভাগাভাগি করে নিতে কিছু কেনাকাটা করতে হবে। তখন বুঝা যায়  বছরের সময় দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে। পরিবারকে সমাজের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে নিজেদের কষ্টার্জিত সকল টাকা বাড়িতে অভিভাবকের কাছে পাঠাতে হয়, যত্সামান্য টাকা দিয়ে নিজে কোনভাবে ভরণ- পোষণ করে নেয়া, এভাবেই চলছে স্বপ্ন দেশ বিলেত প্রবাসের জীবন।

ঈদ মানে আনন্দের জোয়ার, ঈদ মানে খুশির সঞ্চার, ঘরে ঘরে নিয়ে আসে খুশির বার্তা। মুসলিম উম্মাহ বছরে দুটি ঈদ- ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা পালন করেন। আমরা যখন ঈদের আনন্দে মেতে উঠব, আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-পড়শিদের নিয়ে আনন্দ উপভোগের এই  সুযোগ হয়তো অনেকেই হাতছাড়া করবেন না।

কিন্তু ঈদ সময়ে স্টাফদের জন্য দৃশ্যপট মোটামোটি এরকম।…. আগামী কালকে পবিত্র ঈদ, এক দিকে ঘরে ঘরে চলছে ঈদের প্রস্তুতি, অন্য দিকে যারা পরিবার সহ সকলের আনন্দের জন্য অর্থ যোগান দিয়ে আসছেন রেস্টুরেন্টে কাজ করে, তাদের চলছে ভিন্ন প্রস্তুতি, কারণ ঈদের দিনে পবিত্র নামাজ জামাতে আদায় করার জন্য ঈদের দিন দুপুরে রেস্টুরেন্ট বন্ধ রাখা হবে, তাই ঈদের দিনের দুপুরের কাজ আগের রাত্রে শেষ করে যেতে হচ্ছে। অতিরিক্ত কাজের চাপ, রাত্রি প্রায় শেষের দিকে, বাসায় যেতে হবে, সকাল ৭টায় ঈদের প্রথম জামাত, তার পর স্ত্রী- সন্তানদের সাথে  একটু সময় থাকা-  ঈদের আনন্দ এখানেই সমাপ্তি ঘটবে। একটু বিশ্রাম নিয়ে আবার কর্ম স্তলে যেতে হবে।

স্বদেশে স্বজনেরা মিলে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্য কষ্ট করে অথবা অনেক ক্ষেত্রে ধারদেনা করে হলেও সন্তুষ্ট জনক টাকা পাঠাতে একজন বিলেত প্রবাসীর মনে তেমন কষ্ট লাগেনা। কিন্তু, মন তখনি বিষন্ন হয়,যখন ঈদের দিন নামাজ শেষে স্ত্রী সন্তানদের সাথে ভালো- মন্দ জিজ্ঞেস করে কাজের জায়গায় চলে যেতে হয়। এমনকি অনেকের দুপুরের খাবারটাও একসাথে খাওয়ার সুযোগ হয়ে উঠে না ।কাজের জায়গায় কলিকদের সাথে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করে একে অপরের মনের কষ্টের কথা বলতে বলতে নিজেদের অজান্তেই চোখে জল  আসে, ফেলতে হয় আনন্দদিনে কষ্টের দীর্ঘ নি:শ্বাস  ।

আর যারা পরিবার ছাড়া একাকিত্ব জীবনে আছেন তাদের প্রবাসে ঈদ আনন্দ হচ্ছে, দেশে থাকা স্বজনের সাথে ফোনে কুশল বিনিময়। ঈদের আনন্দ এখানেই সমাপ্তি বাকীটুকু কষ্টমাখা দীর্ঘশ্বাস। যারা রেস্টুরেন্টে কাজ করেন , অনেকে ঈদের নামাজ আদায় করতে পারেন না, কারণ কাজের জায়গায় আশপাশে  ঈদের নামাজের কোন ব্যবস্থা থাকে না বলে।

যেহেতু বিলেতে বড়ো একটি অংশ রেস্টুরেন্ট ব্যবসার সঙ্গে জড়িত এবং প্রায় ৭০/৮০ হাজার  এর মতো বাংলাদেশী এই ক্যাটারিং সেক্টরে কাজ করছেন, তাই প্রথমেই রেস্টুরেন্ট মালিকদেরকে এই অমানবিকতা থেকে বেরিয়ে আসা দরকার।

সমাজের সংখ্যাগরিষ্টরা বিশ্বাস করেন, ঈদের দিন রেস্টুরেন্ট বন্ধ করে মানবিকতার স্বাক্ষর রাখা যায়। এই কাজটি শুরুতে সবাই করবে না, এটাও ঠিক। পরবর্তীতে দেখা যাবে, যে সকল মুসলমান ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ঈদের দিন খোলা রাখেন, বিবেকের তাড়নায় সেই সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে বাধ্য হবেন।

বিলেতে পাড়ি জমানো বাংলাদেশি মানুষের জন্য জীবনের বড়ো একটি স্বপ্ন, কিন্তু এই স্বপ্নের দেশে আসার পর কেমনে যেন নীরবে মনোযন্ত্রণায় নিজেদের ভীতরটাকে তিলে তিলে ঝাঁঝরা করে দেয়। না পারে বলতে, না পারে সইতে। পাড়া প্রতিবেশী, শৈশব, কৈশোরের সহপাঠী সহ আত্মীয়- স্বজন, পরিবার –পরিজন, মা -বাবা সকল হয়ে যান শুধুই স্মৃতি। অনেক প্রবাসী তখন ভাবতে থাকে হয়তো জীবনের সব থেকে বড় ভুল সিদ্ধান্ত ছিল প্রবাস জীবনকে বেঁচে নেয়া। কিন্তু এই ভুল সংশোধন করার কোন উপায় থাকে না নানা কারণে।

ঈদ মানবিকতা,ভ্রাতিৃত্ব,সহমর্মিতা,ঐক্যের বন্ধন তৈরীর বাণী নিয়েই মুসলমানদের ঘরে ঘরে আসে। ব্রিটেনে আমরা মুসলমান ব্যবসায়ীরা যদি ঈদের মর্মবাণীকে ধারণ করেন তাহলে বছরে মাত্র দুটি দিনে ছুটি দেয়া কোন বড় ইস্যু নয়। খুব সরল, মানবিক এবং অবশ্যই পূণ্যের কাজ।

প্রবাসে ঈদ হোক  মালিক-স্টাফ সবার সমান-এই প্রত্যাশা।

নূর লোদী : সংগঠক ও স্যোসাল একটিভিস্ট, লন্ডন।


সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন