বিশ্বের সকল মুসলমানদের জন্য বছর ঘুরে আসে দুটি ঈদ। এই দুটি ঈদ মুসলমানদেৱ জন্য সবচেয়ে আনন্দের এবং বড় উৎসব হিসেবে সবাই পালন করে থাকে। খ্ৰিষ্টানদের সবচেয়ে বড় উৎসবের দিন ক্রিসমাস ডে আমরা সব কিছু বন্ধ করে রাখি। কিন্তু আমাদের ধর্মীয় উৎসব দিনে আমাদের দ্বারা পরিচালিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখি না।বিলেতে বাংলাদেশীদের দ্বারা অনেক আলাকিত কাজ হয়েছে। এবং জাতীয়ভাবে আমাদের অবদানও দিন দিন বাড়ছে। সবাই ঈদের ছুটির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে সোচ্চার হলে ঈদের ছুটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে আমার বিশ্বাস।
একজন প্রবাসী হিসাবে প্রবাসের প্রথম ঈদ ছিল অনেক কষ্টের। এখনও প্রবাসে যে ঈদ সুখের হয়েছে তাও বলবো না।
নিজের অভিজ্ঞতায় দেখেছি অনেক প্রবাসী জানেন না- কোনদিন ঈদ আসে আর কখন ঈদ যায়। আমি প্রথম বিলেতে আসার ১০ দিন পরেই ছিল- কোরবানির ঈদ। তখন আমি একটি জায়গায় কাজে ছিলাম। ঈদের দিন আমার ডে-অফ ছিলনা। ঈদের নামাজ পড়ার খুব ইচ্ছা ছিল। কিন্তু মসজিদ দূরে থাকায় এবং কাজের সময়মতো রেস্টুরেন্টে ফিরে আসা যাবে না তাই ইচ্ছে থাকা সত্বেও আমি বিলেতের প্রথম ঈদের নামাজ পড়তে পারিনি।
রমজানের ঈদে লন্ডনের একটি পার্কে গেলাম নামাজ পড়তে। দেখলাম সবাই শুধু ঘড়ির দিকে তাকিয়ে আছে। আবার অনেকে গেটের সামনে থেকে খুতবা শুনছেন। নামাজ শেষ হলে যেন তাড়াতাড়ি কাজে যেতে পারেন। বন্ধুদের সাথে কোলাকোলি করার সময়টিও যেন নেই।
দেশ থেকে মা ফোন করে বলেন ঈদে গেছোনি? হান্দেশ খাইছোনি? মায়ের প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে অন্য প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলি। আমার এক ভাই ঈদের দিন তার ঘরে আমাকে নেয়ার জন্য অপেক্ষা করছিল।সে জানে আমাকে এখন কজে যেতে হবে। কষ্ট লুকিয়ে, অন্যদিকে চেয়ে তাকে বলেছিলাম- তুমি চলে যাও,আমার দেরী হয়ে গেছে এমনিতেই। বাস্তবতা হলো- গাভনার সময় মতো যাওয়ার জন্য কড়া কথায় বলে দিয়েছেন।দেরি হবে বলে সোজা কাজের উদ্দেশ্যে যাত্রা করি। ঈদের দিন প্রচন্ড মনোকষ্ট নিয়েই কাজ করতে হয়েছে।
আমার বিশ্বাস রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীরা একটি সম্মিলিত উদ্যোগ নিলে তারা ঈদের দুইটি দিনে ছুটি বাস্তবায়ন করতে পারবেন। এবং তা হলে বাংলাদশী কারী ইন্ড্রাস্ট্রির নেতৃবৃন্দ বিলেতে আমাদের কমিউনিটিতে হিরো হয়ে থাকবেন।
সাপ্তাহিক পত্রিকা ও ৫২বাংলার যৌথ উদ্যোগে যুক্তরাজ্যে ঈদের ছুটি চাই ক্যাম্পেইনটি ইতিমধ্যে গোটা ব্রিটেনে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।কমিউনিটির বিশিষ্টজনরাও ইতিমধ্যে একাত্নতা প্রকাশ অব্যাহত রেখেছেন। ঈদের ছুটি আসন্ন ঈদুল আযহা থেকে ব্রিটেনের মুসলমান প্রতিষ্ঠানে মালিক পক্ষ বাস্তবায়ন করে মানবিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করবেন বলে আমার বিশ্বাস।
জাহেদ আহমদ রাজ : সাংবাদিক ও সংগঠক। লন্ডন।