মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫ খ্রীষ্টাব্দ | ৪ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
https://blu-ray.world/ download movies
সর্বশেষ সংবাদ
আরসা প্রধান জুনুনিকে গ্রেপ্তারের দাবি র‌্যাবের  » «   হিন্দুদের ওপর আক্রমণ ধর্মীয় নয়, রাজনৈতিক: মার্কিন সিনেটরকে প্রধান উপদেষ্টা  » «   দেশের দীর্ঘতম যমুনা রেলসেতুর উদ্বোধন  » «   বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে উদ্বিগ্ন: তুলসী গ্যাবার্ড  » «   রেমিটেন্সের নামে এক ব্যক্তি এনেছেন ৭৩০ কোটি টাকা!  » «   সিলেটে ভালোবাসায় সিক্ত হামজা চৌধুরী, বললেন, ‘ইনশাল্লাহ আমরা উইন খরমু’  » «   এমসি কলেজে ধর্ষণের বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালেই  » «   জাতিসংঘ মহাসচিবের সফরে এক ঢিলে তিন পাখি  » «   অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতাদের আরেকটি দল আসছে, নেতৃত্বে শিবিরের সাবেকরা  » «   আসছেন হামজা চৌধুরী, গ্রামে উৎসবের আমেজ  » «   ঈদের আগে চাঙা প্রবাসী আয়, ১৫ দিনে এলো ১৬৫ কোটি ডলার  » «   বালোচ লিবারেশন আর্মি কারা এবং কেন পাকিস্তানে হামলা চালাচ্ছে?  » «   সিপিবি অফিস দখলে পিনাকীর ডাকে সাড়া মিলেনি  » «   গুতেরেসের সঙ্গে কেন বৈঠক, ‘আমি ঠিক বুঝিনি’: ফখরুল  » «   ধর্ষণবিরোধী গণমিছিল নিয়ে বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা, কর্মসূচি স্থগিত করল বাম সংগঠনগুলো  » «  
সাবস্ক্রাইব করুন
পেইজে লাইক দিন

বিলেতে ঈদ উৎসব এবং বাঙ্গালী কমিউনিটির অন্তর্জ্বালা



সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

গ্রেট ব্রিটেন বহু সংস্কৃতির দেশ ৷ এই দেশে আছে বিশ্বের প্রায় সব কয়টি সম্প্রদায়ের বসবাস ৷ প্রত্যেকের আছে স্বাতন্ত্র্য সংস্কৃতি ৷ আমরাও এর ব্যতিক্রম নই৷  আমাদের আছে আছে গোলাভরা ঐতিহ্য, সংস্কৃতি।আছে আমাদের অসংখ্য  গৌরব গাঁথা ৷তবে আছে দুঃখ ও অন্তর্জ্বালাও৷  কোন কোন ক্ষেত্রে লজ্জার, দুঃখের, কষ্টের আর অপমানেরও৷

আমাদের লালসা, অর্থলিপ্সা আমাদের সুখ, শান্তি, সম্প্রীতি কিংবা আবেগ কে ছাড়িয়ে অপমান আর অভিমানের চরম সীমায় নিয়ে গেছে কিছু ক্ষেত্রে- তা নিয়ে এক শ্রেণীর মানুষের কোন ভ্রক্ষেপ নাই৷

চাইনিজরা তাঁদের নিউ ইয়ার কে উৎসব হিসাবে নিয়ে ১৬ দিন পর্যন্ত তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখে ৷ এমনি করে প্রত্যেকটি দেশের অভিবাসী তাঁদের জাতীয় দিবস এবং ধর্মীয় উৎসবের দিন তাদের প্রতিষ্ঠান বন্ধ বা স্টাফদের ছুটি দিলেও  বাঙালি মুসলমান কর্মচারিদের  বছরে দুইটি বড় ধর্মীয়  ঈদ উৎসবেও  কপাল পোড়ে কিছু লালসা আর অর্থলিপ্সু ব্যবসায়িদের  কারণে ৷

বছরে মাত্র দুইটা দিন ঈদ কে উপলক্ষ করে আমাদের বাঙ্গালি মুসলমানদের  নারি-পুরুষ, ছেলে-মেয়ে বাবা-মায়ের কত আবেগ অনুভূতি জড়িয়ে আছে। প্রত্যেকে যার যার সর্বোচ্চ চেষ্টা থেকে সওদা করে ঈদ আনন্দের প্রস্তুতি নিয়ে থাকেন ৷  কিন্তু কতিপয় অর্থলিপ্সু ব্যবসায়ির কারণে সব আনন্দ বিষাদে রূপ নেয় ; অন্তর্জ্বালায় হ্নদয়ে রক্তক্ষরণ হয়৷ বিশেষ দিনে ছুটি না থাকার কারণে বয়ঃবৃদ্ধ বাবা-মায়ের পা ছুঁয়ে আশীর্বাদ কিংবা ছোট ছেলে-মেয়েদের কপালে আঁদর দেয়া হয়না । এমনকি  অনেক রেস্টুরেন্টের কর্মচারিরা ঈদের নামাজ পর্যন্ত আদায় করতে পারেন না।

এই অন্তর্জ্বালার পিছনের মানুষগুলো অভিশাপ পায় ; অভিশপ্ত হয়৷ অভিশাপ খুব কঠিন এক শাস্তি। ঈদের মতো পবিত্র ও আনন্দের দিনকে যারা নিরানন্দ, অভিশপ্ত করে তুলেন- সেইসব ব্যবসায়িরা অনুভব করে না বা তাদের অনুভূতি ভোতা হয়ে আছে ।

অথচ এইসব ব্যবসায়িরা  তাদের প্রতিষ্ঠানে একটু মানবিক  হলে অভিশপ্ত না হয়ে আশীর্বাদ এবং ভালোবাসায় সিক্ত হতে পারতেন।সমাজে দ্বিগুন মান-মর্যাদায় বাচতে পারতেন।

বহু ভাষা ও সংস্কৃতির এই দেশে আমাদের অনেক আলোকিত অর্জন আছে। সেখানে আমরা জাতিগতভাবে আরও পজিটিভ উদাহরণ রাখতে পারি। বছরে মাত্র দুটি দিন । এই দুই দিনে মালিক-স্টাফ মিলে আনন্দ উপভোগ করলে, কাজে ও ব্যক্তিগত জীবনে সম্পর্ক আরও গভীর হয়। আত্নিক হয়। কাজের মানষিক স্পিহা ও গতি বাড়ে- এটা কি তারা আসলে বুঝেন না, নাকি না বোঝার ভান করেন- সেটা এই সময়ে এসেও বার বার বলতে হয় সাধারণ মানুষদের।

একজন মুসলমান ধর্মীয় বিশ্বাসীর কাছে পবিত্র ঈদে ইসলামী বিধান মেনে না চলা মোটাদাগে পাপ। পরিবার, স্বজনদের নিয়ে আনন্দ উপভোগ করা মুসলমান মাত্র সকলের জন্য সমান। এখানে অর্থনৈতিক বিষয়টি সামনে এনে, নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে সমাজে অমানবিক সংস্কৃতি চালু করেছেন এবং যারা করছেন তাদের মনে মানবিকতার পরশ যত দ্রুত লাগবে ততোই গোটা কমিউনিটির জন্য মঙ্গল।

মানুষের যাপিত জীবনে ভুল একটি বড় অধ্যায়। আবার এই মানুষই তার অতীত অভিজ্ঞতাকে বিবেচনায় নিয়ে সংশোধিত হয়। পরিশুদ্ধ হয় এবং সমাজে আলোকিত সাফল্যময় উদাহরণ রাখে।

আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি ৫২বাংলা ও পত্রিকার যৌথ উদ্যোগে যুক্তরাজ্যে ঈদের ছুটি চাই সামাজিক ক্যাম্পেইনের দৃশ্যপট দেখে, কমিউনিটির সংখ্যাগরিষ্ট অংশের আবেগ অনুভূতি, সমালোচনা, মন্তব্য দেখে তাদের বোধদয় হবে। বছরের মাত্র দুটি ঈদের দিনে মুসলমান ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ছুটি দিয়ে মানবিকতার উজ্জ্বল উদাহরণ রেখে,  আলোর পথে তারা এখন থেকে হাটবেন। কমিউনিটিকে তারা একটি আলোকিত বার্তা দিবেন- যা ডাইভার্স কমিউনিটির জন্যও একটি অনুকরণীয় উদাহরণ হয়ে থাকবে।

এম আতিকুর  রহমান, সাবেক শিক্ষক ও কমিউনিটি সংগঠক , লন্ডন ৷

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন