চীনের শিনজিয়াং পুলিশের কম্পিউটার সার্ভার থেকে উইঘুর নির্যাতনের তথ্য হ্যাক হয়েছে। আর এতে মিলেছে হাজার হাজার মানুষের ছবি, যাদেরকে বিভিন্ন পুনঃশিক্ষণ কেন্দ্রে আটকে রাখা হয়েছে। এছাড়া, যারা এখান থেকে পালাতে চায় তাদেরকে সরাসরি গুলির নির্দেশনার প্রমাণও পাওয়া গেছে। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।
এ বছরের প্রথমে বিবিসির কাছে এই ফাইল পাঠানো হয়েছিল। এ নিয়ে কয়েক মাস ধরে তদন্ত করে বৃটিশ গণমাধ্যমটি। এরপর তারা এ বিষয়ে নিশ্চিত হয়। বর্তমানে চীন সফরে রয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনার মিশেল ব্যাচলেট। ৬ দিনের এ সফরের মধ্যে তিনি শিনজিয়াংও যাবেন। ধারণা করা হচ্ছে, চীন সরকারের কঠিন নিয়ন্ত্রণের মধ্য থেকেই তাকে সেখানকার পরিস্থিতি দেখানো হবে। তার এই সফরের সময়ই বিবিসি এ রিপোর্ট প্রকাশ করলো।
হ্যাক হওয়া ওই ফাইলগুলোতে চীনের পুনঃশিক্ষণ কেন্দ্র সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে, তবে এটি চীনের প্রথাগত কারাগার থেকে আলাদা। চীনের দাবি, ২০১৭ সালে এই পুনঃশিক্ষণ কেন্দ্রগুলো নির্মাণ করা হয়েছে এবং এগুলো স্কুল ছাড়া কিছুই নয়। ওই নথিগুলো থেকে জানা গেছে, এই কেন্দ্রগুলো মূলত উইঘুর পরিচয়, সংস্কৃতি এবং ইসলামিক বিশ্বাসকে টার্গেট করে নির্মাণ করা হয়েছে। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এর অধীনেই এসব শিবির পরিচালিত হয় বলেও জানিয়েছে বিবিসি।
হ্যাক হওয়া ফাইলগুলোতে ৫ হাজারের বেশি উইঘুরের ছবি রয়েছে। এসব ছবি ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে জুলাই মাসের মধ্যে তোলা হয়েছে। তাদের মধ্যে ২ হাজার ৮৮৪ জন আটক রয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। চীনের দাবি এসব কেন্দ্রে ‘শিক্ষার্থীরা’ নিজের ইচ্ছায় থাকছে। যদিও এমন দাবির সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি ওই নথিতে।
ছবিগুলোতে দেখা গেছে অনেকের সাথেই লাঠি হাতে দাঁড়িয়ে আছে পুলিশ। যদিও চীনের দাবি তাদের সাথে কোনো জবরদস্তি করা হয়নি। ২০১৯ সালে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই জানিয়েছিলেন, এসব পুনঃশিক্ষণ কেন্দ্র উইঘুরদের সন্ত্রাসবাদ থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করছে। যদিও বাস্তবে দেখা গেছে, শুধুমাত্র ইসলামিক জীবনযাপন করার কারণে কিংবা মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ সফরের কারণেই কাউকে কাউকে এনে এসব শিবিরে রাখা হয়েছে। নথিতে পাওয়া সব থেকে কম বয়স্ক হচ্ছেন রাহিল ওমার নামের এক কিশোরী। তাকে মাত্র ১৫ বছর বয়সে শিবিরে পাঠানো হয়েছিল। অপরদিকে সবথেকে বয়স্ক হচ্ছেন ৭৩ বছরের আনিহান হামিদ।