স্বপ্নের দেশ ইউরোপে পাড়ি জমাতে যাওয়ার পথে নৌকাডুবে নিহতদের মধ্যে সিলেটের নাগরিক রয়েছেন ১৫ জন। নিহত ৬০ জনের মধ্যে অধিকাংশই বাংলাদেশি বলে জানা গেছে।
সিলেটের নিহত নাগরিকদের মধ্যে ৫ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। এরা হলেন- সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শাহরিয়ার আলম সামাদের ছোট ভাই শামীম আলম, সাবেক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক মাসুদ আহমদের ছোট ভাই মারুফ আহমদ, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার কটালপুর এলাকার মুয়িদ পুর গ্রামের হারুন মিয়ার ছেলে আব্দুল আজিজ (২৫), একই গ্রামের মন্টু মিয়ার ছেলে আহমদ (২৪) এবং সিরাজ মিয়ার ছেলে লিটন (২৪)। এ ঘটনায় ফেঞ্চুগঞ্জের দিনপুর গ্রামের আরেকজন নিহত হয়েছে। আর অপর ৯ জনের নাম পরিচয় জানা যায়নি।
বেঁচে যাওয়া লোকজন তিউনিসিয়ার রেড ক্রিসেন্টকে জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে লিবিয়ার উপকূল থেকে ৭৫ জন অভিবাসী একটি বড় নৌকায় করে ইটালির উদ্দেশে রওনা হন। গভীর সাগরে তাদের বড় নৌকাটি থেকে অপেক্ষাকৃত ছোটো একটি নৌকায় তোলা হলে কিছুক্ষণের মধ্যে সেটি ডুবে যায়।
তিউনিসিয়ার রেড ক্রিসেন্ট কর্মকর্তা মঙ্গি স্লিমকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, রাবারের তৈরি ‘ইনফ্লেটেবেল’ নৌকাটি ১০ মিনিটের মধ্যে ডুবে যায়। তিউনিসিয়ার জেলেরা ১৬ জনকে উদ্ধার করে শনিবার সকালে জারযিজ শহরের তীরে নিয়ে আসেন।
উদ্ধার হওয়া অভিবাসীরা জানান, সাগরের ঠান্ডা পানিতে তারা প্রায় আট ঘণ্টা ভেসে ছিলেন। উদ্ধার হওয়া ১৬ জনের ১৪ জনই বাংলাদেশি। যে ১৬ জনকে শনিবার সকালে সাগর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে তাদের একজন সিলেটের আহমেদ বিলাল। ওই নৌকায় আরও কয়েকজন সিলেটের নাগরিক ছিলেন বলে জানা গেছে।
ত্রিপলিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শেখ সিকান্দার আলী বলেন, তারা দুর্ঘটনার কথা জানেন এবং তিউনিসিয়ার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। যত দ্রুত সম্ভব তারা জারযিজে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।
অভিবাসীদের ভাষ্যমতে, নৌকাটিতে ৫১ জন বাংলাদেশি ছাড়াও তিনজন মিশরীয় এবং মরক্কো, শাদ এবং আফ্রিকার অন্যান্য কয়েকটি দেশের নাগরিক ছিলেন।
তিউনিসিয়ার জেলেরা নৌকার আরোহীদের মধ্যে ১৬ জনকে উদ্ধার করেন। তাঁদের মধ্যে ১ শিশুসহ ১৪ জন বাংলাদেশি।
জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) জানায়, অভিবাসীবাহী নৌকাটি বৃহস্পতিবার লিবিয়ার জুওয়ারা থেকে রওনা হয়। ইতালি যাওয়ার পথে নৌকাটি ডুবে যায়। বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, নৌকাটি প্রবল ঢেউয়ের মধ্যে পড়ে ডুবে যায়।
ইউএনএইচসিআরের তথ্যমতে, চলতি বছরের প্রথম চার মাসে লিবিয়া থেকে ইউরোপে পাড়ি জমাতে গিয়ে অন্তত ১৬৪ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে।