গুরুতর অসুস্থ হয়ে লাইফসাপোর্টে রয়েছেন বরেণ্য অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান। রাজধানীর ডেমরায় অবস্থিত আজগর আলী হাসপাতালে চলছে তার চিকিৎসা। এরই মধ্যে বেশ কয়েকবার একুশে পদকজয়ী এই অভিনেতার মৃত্যু গুজব ছড়িয়েছে।
তবে আজ শনিবার থেকে আবার শুরু হয়েছে গুজব ছড়ানো। তার ‘মৃত্যুর গুজবে’ ভাসছে একশ্রেণীর ফেইসবুক ইউজারের ওয়াল! অতি উৎসাহী অনেকে এসব শেয়ার করে ‘ইন্নালিল্লাহি…..’ দোয়া পড়ে দেদারছে মন্তব্য, প্রতিমন্তব্যে যুক্ত হচ্ছেন। অনেক মিডিয়ার কর্মীরাও এ গুজবে পা দিয়েছেন।
এদিকে বারবার মৃত্যু গুজব ছড়ানোতে বিরক্ত এটিএম শামসুজ্জামানের পরিবার। এই অভিনেতার ছোট ভাই সালেহ জামান সেলিম নিশ্চিত করেন, ‘বেঁচে আছেন এটিএম শামসুজ্জামান’। শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে একটু ভালো। আজ (শনিবার) দুপুরে উনার লাইফসাপোর্ট খোলে দেয়া হয়।
এটিএম শামসুজ্জামানের ভাই সেলিম আরও বলেন, ‘আল্লাহর রহমতে ভাই ভালো আছেন। আমরা খুবই বিরক্ত। একটা মানুষকে কেন মরার আগেই বারবার মেরে ফেলা হচ্ছে! মানুষের মৃত্যুর নিউজ ছড়িয়ে কী আনন্দ পায় তারা? আর এসব খবর পায়ই বা কোথায়! আল্লাহর দোহাই লাগে পরিবারের কারও সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত না হয়ে যেন নিউজ না হয় বা মৃত্যুর গুজব ছড়ানো না হয়।’
প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত নানা অসুখে ভুগছেন এটিএম শামসুজ্জামান। হঠাৎ অসুস্থবোধ করায় গত ২৬ এপ্রিল দিবাগত রাতে রাজধানীর আজগর আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এই অভিনেতাকে। ওইদিন এটিএম শামসুজ্জামানকে স্যালাইন দেয়া হয়। তখন হঠাৎ করে তার মলত্যাগে জটিলতা দেখা দেয়।
২৭ এপ্রিল দুপুরে জরুরি ভিত্তিতে তাকে অপারেশন থিয়েটারে নেয়া হয়। অস্ত্রোপচার সফলভাবে শেষে ২৮ এপ্রিল সকালে তাকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু ৩০ এপ্রিল তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় এদিন বেলা ৩টার দিকে তাকে লাইফসাপোর্টে রাখা হয়।
এরপর অবস্থা কিছুটা উন্নতি হওয়ায় গত ৩ মে শুক্রবার সকালে তার লাইফসাপোর্ট খুলে দেয়া হয়। রাখা হয় নিবিড় পর্যবেক্ষণে। কিন্তু আবারও শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় বর্তমানে তাকে ফের লাইফসাপোর্টে নেয়া হয়, যা আজ খুলে ফেলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এটিএম শামসুজ্জামান অভিনয়ে পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। শিল্পকলায় অবদানের জন্য ২০১৫ সালে তাঁকে একুশে পদক প্রদান করা হয়েছে। অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি একজন প্রযোজক, চিত্রনাট্যকার এবং নির্মাতাও।