স্পেনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সারওয়ার মাহমুদ, এনডিসি, ০৪ অক্টোবর মঙ্গলবার মাদ্রিদে স্পেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক সেক্রেটারি অফ স্টেট পিলার ক্যানসেলা রড্রিগেজের সাথে তাঁর দপ্তরে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন।
বৈঠকে রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশের অব্যাহত অগ্রযাত্রার বিষয়ে সেক্রেটারি রড্রিগেজকে অবহিত করে বলেন, “২০৩৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের ২৫তম বৃহৎ অর্থনীতিতে পরিণত হবে। এ বছর স্পেন ও বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন করছে। বাণিজ্য ছাড়াও নতুন নতুন অনেক ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সম্প্রসারণের অবারিত সম্ভাবনা রয়েছে।” স্পেন ও বাংলাদেশের মধ্যে বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন ক্রীড়া ও যুব উন্নয়ন, সাংস্কৃতিক সহযোগিতা, দুই দেশের কূটনৈতিক প্রশিক্ষণ একাডেমির মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক সহযোগিতা, কূটনৈতিক ও অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের পারস্পরিক ভিসা বিলোপন, মেরিটাইম প্রশিক্ষণ এবং স্পেনের কৃষিখাতে বাংলাদেশ থেকে মৌসুমি কর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি দ্রুত স্বাক্ষরে সেক্রেটারি রড্রিগেজের সহায়তা কামনা করেন রাষ্ট্রদূত। তিনি রোহিঙ্গাদের স্বদেশে প্রত্যাবর্তনে স্পেনের সমর্থন জোরদারের আহ্বান জানান এবং ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অফ জাস্টিসে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলায় গাম্বিয়াকে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, নেদারল্যান্ড ও জার্মানির সক্রিয় সমর্থনের বিষয়টি উল্লেখপূর্বক এক্ষেত্রে স্পেনের সমর্থন প্রত্যাশা করেন। রাষ্ট্রদূত ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবসের স্বীকৃতি প্রদান এবং জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল ও আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থার আসন্ন নির্বাচনে বাংলাদেশের প্রার্থীতার প্রতিও স্পেনের সমর্থন কামনা করেন।
রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের সাথে Spanish Agency for International Development Cooperation (AECID) এর সহযোগিতা সম্প্রসারণেরও প্রস্তাব করেন। রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের জাতীয় অবস্থানের প্রশংসা করে সেক্রেটারি রড্রিগেজ বলেন, “এক্ষেত্রে সম্মিলিত আন্তর্জাতিক প্রয়াস জরুরি। ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অফ জাস্টিসে গাম্বিয়াকে সমর্থনের বিষয়টি খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেবে স্পেন। বাংলাদেশ ও স্পেন উভয়েই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ। দুই দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক নৈকট্য সুদৃঢ় করা ছাড়াও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বৃদ্ধির যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।
এসময় রাষ্ট্রদূত স্প্যনিশ ভাষা শিক্ষায় বাংলাদেশের নবীন কূটনীতিকদের স্কলারশিপ প্রদানের জন্য স্পেন সরকারকে অনুরোধ করেন। সেক্রেটারি রড্রিগেজ এ প্রস্তাবকে স্বাগত জানান। রাষ্ট্রদূত সেক্রেটারি রড্রিগেজকে পারস্পরিক সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের উষ্ণ আমন্ত্রণ জানান। অত্যন্ত হৃদ্যতাপূর্ণ পরিবেশে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।