শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
https://blu-ray.world/ download movies
Sex Cams
সর্বশেষ সংবাদ
গ্রেটার বড়লেখা এসোশিয়েশন ইউকে নতুন প্রজন্মদের নিয়ে কাজ করবে  » «   স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বিয়ানীবাজার প্রেসক্লাবের দোয়া ও ইফতার মাহফিল  » «   কানাডা যাত্রায়  ইমিগ্রেশন বিড়ম্বনা এড়াতে সচেতন হোন  » «   ব্রিটিশ রাজবধূ কেট মিডলটন ক্যানসারে আক্রান্ত  » «   যুদ্ধ বিধ্বস্ত গাজাবাসীদের সাহায্যার্থে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই ইন দ্য ইউকের অনুদান  » «   বড়লেখায় পাহাড়ি রাস্তা সম্প্রসারণে বেরিয়ে এলো শিলাখণ্ড  » «   মাইল এন্ড পার্কে ট্রিস ফর সিটিস এর কমিউনিটি বৃক্ষরোপণ  » «   রয়েল টাইগার্স স্পোর্টস ক্লাবের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন সম্পন্ন  » «   গোলাপগঞ্জ স্যোশাল এন্ড কালচারাল ট্রাস্ট ইউকে’র সাধারণ সভা ও নির্বাচন সম্পন্ন  » «   যুক্তরাজ্যবাসি  সাংবা‌দিক সাইদুল ইসলামের পিতা আব্দুল ওয়াহিদের ইন্তেকাল  » «   ইউকে বাংলা রিপোটার্স ইউনিটি‘র নতুন কার্যকরী কমিটির অভিষেক  » «   রোটারিয়ান মোহাম্মদ খতিবুর রহমান বার্লিন যাচ্ছেন  » «   টাওয়ার হ্যামলেটসের নতুন বাজেটে হাউজিং, শিক্ষা, অপরাধ দমন, তরুণ, বয়স্ক ও মহিলাদের জন্য বিশেষ কর্মসূচিতে বিপুল বিনিয়োগ প্রস্তাব  » «   আজীবন সম্মাননা পেলেন সৈয়দ আফসার উদ্দিন এমবিই  » «   লন্ডন বাংলা স্কুলের আয়োজনে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত  » «  
সাবস্ক্রাইব করুন
পেইজে লাইক দিন

নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও রাশিয়ার মুদ্রা রুবল’র উত্থান



সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

পশ্চিমা দেশগুলোর প্রবল নিষেধাজ্ঞাকে পাশ কাটিয়ে রাশিয়ার মুদ্রা রুবল বেশ নাটকীয়ভাবে শক্তি ফিরে পেয়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর আগে রুবল যে অবস্থায় ছিল, এখন তার চেয়েও শক্তিশালী হয়েছে।যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ব্যবসা ও অর্থনীতি বিষয়ক বিশ্বখ্যাত সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ বলছে, রুবল গত পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী অবস্থায় রয়েছে।

ইউক্রেনে আক্রমণ শুরুর করার পরপরই ইউরোপ এবং আমেরিকা মিলে রাশিয়ার উপর নানা ধরণের অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। এর ফলে রুবলের মান বেশ দ্রুত নিচের দিকে পড়তে থাকে।

পরিস্থিতি এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, অনেকেই ভেবেছিল রাশিয়ার মুদ্রা রুবল হয়তো দ্রুত মূল্যহীন হয়ে যাবে। সংকট সামাল দিতে টানা দুই সপ্তাহ মস্কোর শেয়ার বাজার বন্ধ রাখা হয়েছিল।

কারণ শেয়ার বাজার খুললেই রুবলের দাম আরও নিচের দিকে নামতো। কিন্তু মার্চ মাসের শেষের দিক থেকে রুবল আবারও ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে।

রুবল ঘুরে দাঁড়ানোর পেছনে অনেকে নানা কারণ বিশ্লেষণ করছেন। মুদ্রাটি যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে, তা অনেকের কাছেই বিস্ময়কর বলে মনে হয়ে হয়েছে।

ইউরোপ আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ার অর্থনীতি ধসে পড়বে বলে যে আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল তা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। রুবল ঘুরে দাঁড়ানোর মূল কারণ হচ্ছে, রাশিয়ার জীবাশ্ম জ্বালানী। অর্থাৎ গ্যাস ও তেল রপ্তানি।

রাশিয়ার কাছ থেকে ইউরোপের দেশগুলো যে গ্যাস ও তেল ক্রয় করে তার মূল্য পরিশোধ করা হতো ইউরোতে। রাশিয়ার সঙ্গে এটাই ছিল তাদের চুক্তি।

কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর মস্কো জানিয়েছে যে, তাদের কাছ থেকে যারা তেল গ্যাস ক্রয় করবে সেই মূল্য পরিশোধ করতে হবে রাশিয়ার মুদ্রা রুবলের মাধ্যমে। এর ফলে ইউরোকে রুবলে পরিবর্তন করা হয়।

ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ কারণেই রাশিয়ার মুদ্রা রুবল শক্তিশালী হয়েছে। তাছাড়া চীন এবং ভারতের কাছে জ্বালানী বিক্রির মাধ্যমে রাশিয়ায় বৈদেশিক মুদ্রাও আসছে। রাশিয়ার রপ্তানি করা পণ্যের মধ্যে ৬০ শতাংশই হচ্ছে গ্যাস এবং তেল। দেশটির রপ্তানি আয়ের ৪০ শতাংশ আসে তেল ও গ্যাস বিক্রি থেকে।

ইউরোপের দেশগুলো রাশিয়ার গ্যাস এবং তেলের উপর উপর নির্ভরশীল। গ্যাস এবং তেল আমদানি বাবদ রাশিয়াকে প্রতিদিন চল্লিশ কোটি ইউরো পরিশোধ করে ইউরোপের দেশগুলো।

রাশিয়ার সেন্ট পিটাসবার্গ ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক তাতিয়ানা রোমানোভা বিবিসি বাংলাকে বলেন, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ার তেল-গ্যাস রপ্তানির পরিমাণ কমেছে এ কথা ঠিক। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে তেল-গ্যাসের দাম বেড়ে যাওয়ায় রাশিয়া সেটি পুষিয়ে নিচ্ছে।

অধ্যাপক তাতিয়ানা রোমানোভার বিশ্লেষণ হচ্ছে, পুরো বিষয়টি নির্ভর করছে রুবলের চাহিদা ও যোগানের উপর। তিনি বলেন, রাশিয়ার উপর নানা ধরণের নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কারণে দেশটি অনেক জিনিস আমদানি করতে পারছে না এবং রাশিয়ার মানুষ আগের মতো বিদেশে যেতে পারছে না। ফলে তাদের ডলার ও ইউরোর চাহিদা কমে গেছে।

অন্যদিকে তেল-গ্যাস বিক্রি বাবদ অর্থ রুবলে কনভার্ট করে নেওয়ায় রাশিয়ার মুদ্রার চাহিদা বেড়েছে।
ফলে মার্কিন ডলারের বিপরীতে রুবল শক্তি ফিরে পেয়েছে বলে উল্লেখ করেন অধ্যাপক তাতিয়ানা রোমানোভা।

যেহেতু ইউরোকে রুবলে কনভার্ট করে রাশিয়ার কাছ থেকে জ্বালানী ক্রয় করতে হয়, সেজন্য রাশিয়ার মুদ্রা রুবলের চাহিদা বেড়েছে। এছাড়া রুবলের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে মস্কো দেশের ভেতরে আরও কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে।

অনেক বিদেশি বিনিয়োগকারী রাশিয়ায় কর্পোরেট শেয়ার এবং সরকারি বন্ড ক্রয় করেছে। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার পরে তারা সেগুলো বিক্রি করে দিতে চাইবে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তারা যেন সেটা করতে না পারে সে পদক্ষেপ নিয়েছে পুতিন সরকার।

এর ফলে একদিকে যেমন রাশিয়ার স্টক ও বন্ড মার্কেটের পতন ঠেকিয়ে রাখা হয়েছে, অন্যদিকে মুদ্রা দেশের বাইরে যেতে পারেনি। এসব কিছু রুবলের পতন ঠেকিয়ে রেখেছে।

ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার দ্বিগুণ বাড়িয়েছে। যারা রুবল বিক্রি করে ডলার বা ইউরো কিনবেন না, অর্থাৎ রুবল সঞ্চয় করবেন, তাদের জন্য প্রণোদনা ঘোষণা করা হয়েছে।

রাশিয়ার অনেক কোম্পানি বিদেশি কোম্পানিগুলোর সঙ্গে ব্যবসা করে ডলার, ইউরো এবং ইউয়েন আয় করছে। কিন্তু এখন রাশিয়ার কোম্পানিগুলো বিদেশে ব্যবসা করে যে আয় করবে তার ৮০ শতাংশ রুবলে কনভার্ট করে নিতে হবে।

এর ফলে রাশিয়ার মুদ্রা রুবলের একটি বড় চাহিদা তৈরি হয়েছে। রাশিয়ার কোন নাগরিক যেন দেশের বাইরে অর্থ নিতে না পারে সেজন্য ব্যবস্থা নিয়েছে পুতিন সরকার। কারণ দেশের বাইরে অর্থ পাঠাতে হলে সেটি ডলার বা ইউরোতে পাঠতে হতো। যেহেতু সেটি বন্ধ করা হয়েছে সেজন্য ডলার বা ইউরোর চাহিদা কমেছে।

ফলে অনেক বৈদেশিক মুদ্রা দেশের ভেতরেই রয়ে গেছে। এটি রুবলের দরপতন ঠেকাতে সাহায্য করেছে। তবে এ নিয়ম কিছুটা শিথিল করা হয়েছে।

অধ্যাপক তাতিয়ানা রোমানোভা বলছেন, কোন ব্যক্তি এখন চাইলে নগদ ১০ হাজার মার্কিন ডলার ব্যাংক থেকে উত্তোলন করতে পারবেন। কিন্তু এর বেশি পারবেন না।

বর্তমানে এক মার্কিন ডলার সমান ৬২ রুবল। বিশ্লেষকরা বলছেন, রুবল যেভাবে শক্তিশালী হচ্ছে তাতে এক ডলার সমান ৫০ রুবল হয়ে যেতে পারে। কিন্তু রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক অবশ্য চায় না যে রুবল বেশি শক্তিশালী হোক।

কারণ রুবল বেশি শক্তিশালী হলে তেল-গ্যাস রপ্তানি বাবদ রাশিয়ার আয় কমে যাবে। রাশিয়ার বাজেটের একটি বড় অংশ আসে রপ্তানি আয় থেকে। এজন্য রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক যেসব বিধি-নিষেধ জারি করেছিল সেগুলো কিছুটা শিথিল করেছে। কিন্তু তারপরেও রুবল শক্তিশালী হওয়া ঠেকাতে পারছে না।

তবে রুবল শক্তিশালী হওয়ার বিষয়টি স্বাভাবিক নয় এবং এটি কতটা দীর্ঘমেয়াদি হবে তা নিয়ে সংশয় আছে। অধ্যাপক তাতিয়ানা রোমানোভা বলেন, ডলারের বিপরীতে রুবলের যে বিনিময়মূল্য সেটা বাস্তবসম্মত নয়। কারণ বাজারের স্বাভাবিক গতিপ্রকৃতির মাধ্যমে এটি নির্ধারিত হয়নি। বাজারে হস্তক্ষেপের মাধ্যমে এটি করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন অধ্যাপক তাতিয়ানা রোমানোভা।


সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন