গণমানুষের কবি দিলওয়ারের ৬ষ্ঠ প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে সাপ্তাহিক পত্রিকা অফিসে এক সাহিত্য ও স্মরণ সভা গত ১০ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হয়। কবি রেণু লুতফার সভাপতিত্বে কবি দিলওয়ারের সাহিত্য ও সৃষ্টি নিয়ে আলোচনায় অংশ নেন সাংবাদিক নজরুল ইসলাম বাসন, কবি হামিদ মোহাম্মদ, আশরাফ মাহমুদ নেসওয়ার, কবি মজিবুল হক, গয়াছুর রহমান গয়াছ, সাপ্তাহিক পত্রিকার সম্পাদক ও লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ এমদাদুল হক চৌধুরী এবং কবি রেণু লুতফা।
কবি দিলওয়ার সুরমাপারের কবি হলেও আর্ন্তজাতিক -আশির দশকে ড. কাজী আবদুল মান্নানের এই মন্তব্য যে কবি দিলওয়ার সম্পর্কে কত সঠিক তা কবি দিলওয়ারের সৃষ্ট সাহিত্যই প্রমাণ করে। আলোচনায় বক্তারা বলেন, কবি দিলওয়ার বাংলা একাডেমী এবং একুশে পদকে ভুষিত হলেও তাকে বাংলা সাহিত্যের একজন অন্যতম কবি হিসেবে মূল্যায়ন তেমন করা হয়নি। তিনি মফস্বলে বাস করতেন বলে নাগরিক কবিদের কাছে অনেকটা অবহেলিত রয়েছে। কবির সৃষ্টি নিয়ে আরো ব্যাপক আলোচনা প্রয়োজন এই জন্য যে, আমাদের উত্তরসূরীদের মধ্যে কবির মানবতাবাদী মানসকে তুলে ধরলে সমাজ ও দেশ উপকৃত হবে। নির্লোভ ও বিশ্বাসের প্রতি অবিচল থাকা কবি দিলওয়ার কোনোদিনই লোভের কাছে মাথা নত করেননি। চরম দরিদ্রতা তাকে কাবু করতে পারেনি। অল্পতে তুষ্ট থাকা কবি দিলওয়ারের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ছিল।
মুক্তিযুদ্ধে কবি দিলওয়ারের ঐতিহাসিক ভূমিকা ও তার অবদান জাতি চিরদিন স্মরণ করবে উল্লেখ করে বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে তিনি সিলেটের লেখক, কবি, সাংবাদিক, চিত্র ও কণ্ঠশিল্পী এবং সংস্কৃতিকর্মীদের সমন্বয়ে গড়ে তুলেন ‘কলম তুলি কণ্ঠ সংগ্রাম পরিষদ’–যে সংগঠন মুক্তিযুদ্ধে দেশবাসীকে উদ্ভুদ্ধ করতে অপরিসীম ভূমিকা রাখে।
উল্লেখ্য, কবি দিলওয়ার জন্ম ১লা জানুয়ারি ১৯৩৭। ২০১৩ সালের ১০ অক্টোবর পরলোকগমণ করেন তিনি। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ বাংলা তোমার আমার, সনিষ্ঠ সনেট, রক্তে আমার অনাদি অস্থি, সপৃথিবী সবুজ ও এক শত ছড়া। ১৯৮১ সালে বাংলা একাডেমী ও ২০০৮ সালে রাষ্ট্রীয় একুশে পদকে ভুষিত তিনি এবং ১৯৭৮ সালে কবি দিলওয়ারকে সিলেটে নাগরিক সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।