টনটনের খেলার পর দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে থাকা বাঙালিদের মনে নতুন স্বপ্ন জাগিয়ে তুলেছেন টাইগাররা। অন্যদিকে সাকিব আল হাসানের সেঞ্চুরি কিংবা লিটন দাসের চমক লাগানো ৯৪ রানে সারা বিশ্বের ক্রিকেট দর্শকরা যেন চমকে গেছেন। সাকিব আবারো উঠে এসেছেন টপ ক্রিকেটারদের প্রথম চার্টে। ব্রিটেনের গণমাধ্যমে সাকিবকে নিয়ে চলছে ক্রিকেট ক্রিটিকদের অন্তহীন আলোচনা। বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই খেলায় বিশ্ব যেন আরেক শক্তিশালী বাংলাদেশকে চিনতে পেরেছে।
এদিকে ক্যারিবীয়দের তুলাধুনো করার আনন্দে গা না ভাসিয়ে কেঙ্গারু বধের রণ-পরিকল্পনায় শান দিচ্ছেন শাকিব-মাশরাফিরা। ক্রিকেট পরাশক্তি অস্ট্রেলিয়ার বিপরীতে আগামীকাল বাংলাদেশ দলকে অত্যন্ত শক্তভাবেই মাঠে নামতে হবে। বোলিং-ব্যাটিং-ফিল্ডিংয়ের পাশাপাশি মানসিকভাবেও মোকাবেলা করতে হবে তাদের।
অস্ট্রেলিয়ার ঝড়ো ব্যাটিং ও বাউন্সি বলের ফণা কিভাবে সামাল দেবে বাংলাদেশ- তা নিয়ে শঙ্কিত ব্রিটেনের বাঙালিরাও। আর সেজন্যই তারা মানসিক শক্তি দিতে চায় বাংলাদেশ দলকে। টনটনে সমর্থকরা নেচেছেন গ্যালারিতে, এমনকি গ্যালারির বাইরে তরুণ-তরুণীরা রীতিমতো নেচে নেচে গান গেয়েছেন। অসংখ্য দর্শক উপভোগ করেছে বাংলাদেশের এসব কোলাহল। কিন্তু কোনভাবেই বাংলাদেশি সমর্থকরা মাঠে বিদ্রুপাত্মক মন্তব্যে মেতে উঠেননি। সেজন্য কমেন্টেটররাও বিভিন্ন সময় প্রশংসা করেছেন তাদের। আগামীকাল নটিংহাম স্টেডিয়ামেও সেই ধারা অব্যাহত রাখতে চান তারা।
এমনিতে অস্ট্রেলিয়া খুব শক্তিশালী দল হলেও এবারের হট ফেভারিট ধরা হচ্ছে ইংল্যান্ডকে। সে হিসেবে বাংলাদেশিদের মনে একটা আশার আলোও আছে। অনেকেই মনে করছেন, অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে মাঠের যুদ্ধে আগামীকালের লড়াইয়ে জয় পাওয়া খুব একটা অসম্ভব না।
বাংলাদেশের প্রতিটি খেলার দর্শক এবং সেরা দর্শক হিসেবে মাঠে পুরস্কারপ্রাপ্ত টাইগার সমর্থক জুয়েল বলেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে খেলার দিন টনটন যেন হয়ে উঠেছিল মিরপুর স্টেডিয়াম। আমরা কালও আমাদের সাপোর্ট, আমাদের প্রেরণা দিয়ে টাইগারদের উজ্জীবিত করব। নটিংহামও আরেক মিরপুর স্টেডিয়াম হবে আগামীকাল।
টনটনে মাথায় বাংলাদেশের পতাকার ব্যাজ জড়িয়ে, উন্মুক্ত শরীরে বাংলাদেশের পতাকা এঁকে, মাথায় গামছা বেঁধে কিংবা সাময়িক সময়ের জন্য লুঙ্গি পরেও কেউ কেউ তাদের বাংলাদেশ প্রীতি দেখিয়েছেন। হাজারো মানুষ কিংবা টিভিতে লাখ লাখ দর্শক উপভোগ করেছে দর্শকদের এই বাংলাদেশ প্রীতি। নটিংহামও এভাবেই বাংলাদেশময় হবে, একটা দিনের জন্য হবে ব্রিটেনে আমাদের দর্শকদের একটা নিজস্ব স্টেডিয়াম- এই উদ্দীপনা নিয়েই মাঠে যাবে দর্শক, খেলতে নামবে টাইগাররা, সাহসের সঙ্গে লড়াই করে জয় ছিনিয়ে আনবে বীর বাঙালি।