বাংলাদেশ চলচিত্র উন্নয়ন সংস্থার (এফডিসি) শুটিং সহকারী হিসেবে কর্মরত সাদ্দাম হোসেন নামক এক যুবকের লাশ ২ জুন রবিবার বিকেল ৩টার দিকে বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার ভুতেরদিয়া এলাকার একটি নদী থেকে উদ্ধার করেছে স্থানীয় পুলিশ।
৫২বাংলা‘র এই প্রতিবেদক নিহত সাদ্দামের দুলাভাই মাইনুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, ‘ছুটিতে গত ৩১ মে ঢাকা-ভান্ডারিয়া রুটে চলাচলকারী এমভি ফারহান-১০ লঞ্চযোগে ঢাকা থেকে বাড়ির উদ্দেশে বের হন সাদ্দাম। আসার পথে লঞ্চের ভিতরে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে সে। এ সময় অজ্ঞান পার্টির সদস্যদের সাথে হাতাহাতি হয় সাদ্দামের। এক পর্যায়ে অবিশ্বাস্য ভাবে লঞ্চ স্টাফরাও সাদ্দামের ওপর হামলা চালায়। ঘটনার কিছু সময় পরেই সাদ্দাম তাকে ফোন দিয়ে জানান তারা সবাই মিলে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে’।
সাদ্দামের বন্ধু আনোয়ার হোসেন বলেন, লঞ্চের কর্মচারীরা তাঁকে মেরে ফেলবে এ কথা সাদ্দাম বুঝতে পেরে তাকেও অবগত করেছিলেন। লঞ্চে নিজ এলাকার দুইজনকে পেয়েছিলেন যাদের আরেকজন নাঈম। দুলাভাই- ভাগ্নে ভাগ্নিরজন্য কেনা নতুন জামা কাপড় সাদ্দাম নাঈমের হাতে তুলে দেন। নাঈমকে বলেন, ‘আমি যদি কোনোভাবে বাড়ি যেতে না পারি তাহলে এটা তুমি পৌঁছে দিও।‘
সাদ্দামের দুলাভাই মাইনুল ইসলাম আরো জানান, ‘সাদ্দাম রাত আড়াইটায় যখন ফোন দেয় তখন লঞ্চ মধ্যপথে। তাকে নিজে গিয়ে নিয়ে আসারও কোন পথ ছিল না, তা না হলে মটর সাইকেল করে নিয়ে আসতে পারতাম। ফোন রাখার কিছু সময় পর থেকে তার ফোন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।’
তারপর সকাল আটটার দিকে লঞ্চঘাট থেকে আনোয়ার নাঈমের কাছ থেকে সাদ্দামের দেয়া ভাগ্নে-ভাগ্নিদের জন্য কাপড় আর তার মোবাইল গ্রহন করেন তিনি।
বাবুগঞ্জ থানার ওসি দিবাকর চন্দ্র দাস জানান, লাশটি ভাসতে দেখে এলাকাবাসী থানায় খবর দেয়। পরে পুলিশ লাশটিউদ্ধার করে খবর পেয়ে মাইনুল ইসলাম(নিহতের দুলাভাই) নামের এক ব্যক্তি থানায় গিয়ে লাশ সনাক্ত করেন। পরে ময়না তদন্তের জন্য তার লাশ বরিশাল মর্গে প্রেরণ করা হয়।
এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগসহ একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে বলে জানান ওসি। দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেয়ারও আশ্বাস দেন ।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শিল্পী সমাজের অনেককেই সাদ্দাম হত্যার প্রতিবাদ এবং বিচার চাইতে দেখা গেছে। হত্যাকারীদের কঠোর বিচার দাবী করেন তারা। আজ বিকেলে শিল্পী ও পরিচালকেরা মগবাজারে বিক্ষোভসমাবেশ ও মানববন্ধনের ডাক দিয়েছেন।