পাঁচদিন একটানা মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে অবশেষে চলে গেলেন সোনাগাজীর অগ্নিদগ্ধ মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি । আজ বুধবার (১০ এপ্রিল) বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৯টার সময় তাকে মৃত ঘোষণা করেন ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক সামন্ত লাল সেন। গত ২৭ মার্চ নুসরাত জাহান রাফিকে নিজ কক্ষে নিয়ে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে আটক করে পুলিশ। ওই ঘটনার পর থেকে তিনি কারাগারে।
এ ঘটনায় রাফির মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন। গত ৬ এপ্রিল (শনিবার) সকালে রাফি আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসায় যান। এ সময় মাদরাসার এক ছাত্রী তার বান্ধবী নিশাতকে ছাদের উপর কেউ মারধর করছে- এমন সংবাদ দিলে তিনি ওই বিল্ডিংয়ের চার তলায় যান। সেখানে মুখোশ পরা চার-পাঁচজন তাকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। রাফি অস্বীকৃতি জানালে তারা তার গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়।
উল্লেখ্য, নুসরাত জাহান রাফিকে (১৮) পুড়িয়ে হত্যা চেষ্টার ঘটনায় জেলহাজতে থাকা অধ্যক্ষ এস এম সিরাজ উদদৌলাহর ৭দিন এবং প্রভাষক আবছার উদ্দিন ও পরীক্ষার্থী আরিফুল ইসলামের ৫দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সরাফ উদ্দিন আহমেদের আদালত। বুধবার সকালে পুলিশের রিমান্ড আবেদনের উপর দীর্ঘ শুনানী শেষে আদালত এ আদেশ দেন। পুলিশের আদালত পরিদর্শক গোলাম জিলানী ৩জনের রিমান্ড মঞ্জুরের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সকালে কড়া নিরাপত্তায় ওই ৩জনকে এজলাসে হাজির করা হয়। এর আগে ৯এপ্রিল অপর ৪ জনের ৫ দিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করেন একই আদালত। তারা হলেন মাদ্রাসার প্রাক্তন ছাত্র আলাউদ্দিন, যুবলীগ কর্মী নুর হোসেন হোনা, কেফায়েত উল্লাহ জনি ও শহিদুল ইসলাম। অপরদিকে দায়িত্বে অবহেলা করায় ১০ এপ্রিল সকালে সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মো. মোয়াজ্জেম হোসেনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানান ফেনীর পুলিশ সুপার এসএম জাহাঙ্গীর আলম সরকার।