আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গনমাধ্যম থেকে নেয়া তথ্য থেকে জানা গেছে, নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দুটি মসজিদে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় নিহত মানুষের সংখ্যা বেড়ে ৪৯ জনে পৌঁছেছে। নিহত লোকজনের মধ্যে ৩ জন বাংলাদেশি। তাঁদের পরিচয়ের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে। হামলায় কমপক্ষে ২০ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। হামলা থেকে অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সদস্যরা।
হামলাকারী অস্ট্রেলীয় নাগরিক বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।হামলার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে এক নারীসহ চারজনকে আটক করেছে নিউজিল্যান্ড পুলিশ। বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে একটি গাড়ি থেকে। নিউজিল্যান্ডের কোথাও কোনো মসজিদে মুসলিমদের যেতে নিষেধ করেছে পুলিশ। সেই সঙ্গে মসজিদগুলো আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাসিন্দাদের বাড়ি থেকে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে। শহরজুড়ে পুলিশ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।
শুক্রবার স্থানীয় সময় বেলা দেড়টার দিকে ক্রাইস্টচার্চের আল নুর মসজিদে জুমার নামাজ আদায়রত মুসলমানদের ওপর হামলা চালান ওই বন্দুকধারী। পরে কাছাকাছি শহরতলি লিনউডের মসজিদে হামলা চালানো হয়। তবে দ্বিতীয় মসজিদে হামলাকারী একই ব্যক্তি কি না, তা এখনো নিশ্চিত করা হয়নি।
প্রত্যক্ষদর্শী কারও কারও মতে, হামলাকারী একাধিক ছিলেন।
নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা অ্যারডের্ন এ ঘটনার নিন্দা প্রকাশ করে বলেছেন, এ ঘটনা নিউজিল্যান্ডের জন্য ঘোর অমানিশা। জেসিন্ডা অ্যারডের্ন টুইটে বলেছেন, ‘ক্রাইস্টচার্চে নজিরবিহীন সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। নিউজিল্যান্ডে সন্ত্রাসী হামলার জায়গা নেই। ক্ষতিগ্রস্ত অনেকে নিউজিল্যান্ডের অভিবাসী সম্প্রদায়ের। নিউজিল্যান্ডেই তাঁদের বাড়ি। তাঁরা আমাদের লোক।’
নিউজিল্যান্ড পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৯ জন হয়েছে। তবে হামলাকারীর যে ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে, আটক ব্যক্তিদের মধ্যে ওই হামলাকারী আছেন কি না, তা নিশ্চিত করেনি পুলিশ। স্থানীয় সময় রাত নয়টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কমিশনার মাইক বুশ মৃতের সংখ্যা বাড়ার তথ্য জানান। তিনি বলেন, ভয়াবহ হামলার ঘটনায় ৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আটক ব্যক্তিরা ছাড়াও আর কেউ হামলায় জড়িত ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তিনি আরও জানান, দুইটি ঘটনাস্থল থেকেই কয়েকটি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
এর আগে সংবাদ সম্মেলনে মাইক বুশ বলেছিলেন, বন্দুকধারীর হামলায় গুরুতর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। পুলিশ পরিস্থিতি মোকাবিলায় সম্পূর্ণ সক্ষমতা নিয়ে কাজ করছে। তবে এখনো মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বাসিন্দাদের ক্রাইস্টচার্চ সড়ক দিয়ে চলাচলে নিষেধ করা হয়েছে এবং পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত ঘর থেকে বের না হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।