দূর প্রবাসে হাজার প্রতিকুলতার মধ্য থেকেও, সবাই স্ব-স্ব স্থান থেকে তুলে ধরি নিজের দেশ কে, কেউ জেনে, আবার কেউ অজান্তে। তেমনই কিছু করেছেন বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার রাউজান থানার, কদলপুর গ্রামের ফারুক ইসলাম। তার পিতার নাম নুরুল হক। আজমানের নাইমিয়াতে জ্বলন্ত বিল্ডিংয়ের দিকে তাকিয়ে থাকা লোকেদের ভিড়ের মধ্যে ৫৭ বছরের এই সাহসী প্রবাসী দৌড়ে এসে প্রাণ বাঁচান তিনবছর বয়সী একটি বাচ্চার যাকে তার মা আগুন লাগায় তৃতীয় তলা থেকে নিচে ছেড়ে দেয়।
ছেলেটির জীবন রক্ষা করার জন্য মঙ্গলবার ফারুক ইসলাম কে আজমান সিভিল ডিফেন্সের পক্ষ থেকে সম্মানিত করা হয়।
তিনি বাইরে এসে মহিলার চিৎকার শুনতে পান। তিনি তাকিয়ে দেখলেন মা তার বাচ্চাকে ধরে রেখে একটি বড় জানালার পাশে দাঁড়িয়ে আছেন। সেখানে জনতার ভিড় ছিল, কিন্তু কেউ তাকে উদ্ধার করার চিন্তা করে নি। এই মহিলা ও তার সন্তানকে বাঁচানোর জন্য ফারুক এগিয়ে আসেন ।
শনিবার রাতে নুয়াইমিয়ায় তিন তলার এই অ্যাপার্টমেন্টটিতে ভীষণভাবে আগুন লাগায়, কালো, কালো ধোঁয়ায় একটু সময়েই পুরো ফ্ল্যাট ভরে যায়। জানালা ছাড়া অন্য কোন পথ খুঁজে বের করা সম্ভব হচ্ছিলো না।
বাচ্চা কে সুরক্ষিত দেখে, মা ও সেখান থেকে লাফ মারেন, কিন্তু পার্কিং এ রাখা একটি গাড়ির উপর পরে, উনি গুরুতর ভাবে আহত হন l তিনি এখন শেখ খালীফা হাসপাতাল এ চিকিৎসাধীন আছেন।
বাচ্চার বাবা যিনি ঘটনার সময় অফিস এ ছিলেন, উনি ফারুক ইসলামের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন যে তিনি উনাদের জন্য কোন ফেরেস্তার চেয়ে কম না।
আরব আমিরাতের প্রভাবশালী সকল পত্রিকায় তাঁর এ বীরত্বের কথা ছাপা হয়েছে। এ জন্য আরব আমিরাতে থাকা বাংলাদেশীরাও অনেক খুশি।
মেশিনে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটগুলির কারণে ভবনটিতে আগুন লাগে, যার ফলে ভবনটিতে কালো ধোঁয়া দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আরো একটি মহিলা ও পুরুষ ও জানালা দিয়ে লাফ মারেন আর এখন সুস্থ আছেন।
এমন ভালো কাজে পুরস্কৃত হওয়ায় তিনি খুব খুশি, এবং বাংলাদেশী প্রবাসীদেরও নিজ-নিজ ভাবে দেশকে তুলে ধরতে বলেন।