গভীর শ্রদ্ধাজ্ঞাপন পূর্বক আমার প্রাণপ্রিয় কুলাউড়াবাসী, স্থানীয় আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের উদ্দেশ্যে নিবেদন করছি-
আজ দুঃখভারাক্রান্ত হৃদয়ে আপনাদের প্রতি নিবেদন করছি যে, কুলাউড়ার গত সাত দশকের রাজনৈতিক ও সামাজিক ইতিহাস বন্ধুত্ব, সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি ও মানবিক মূল্যবোধের ইতিহাস। ধনী, দরিদ্র, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সামাজিকতা ও ভ্রাতৃত্বের ইতিহাস। যা আমরা সকলেরই পরম গৌরবের তীর্থক্ষেত্র। যা কুলাউড়ার সুনাম ও ঐতিহ্য। দলমত নির্বিশেষ সম্প্রীতিময় ঐক্যবদ্ধ কুলাউড়া আমাদের জন্য মহান সম্মানজনক।
কিন্তু, আজ কেন এ কুলাউড়ার জনগণকে বিভক্ত করা হচ্ছে? আমাদের পাস্পরিক সম্মানকে ভূলুন্ঠিত করা হচ্ছে? আমাদের তরুণসমাজকে হিংসা, বিদ্ধেষ ও পারস্পরিক ঘৃনার অন্ধকারে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে?
বরাবরই যে কোন নির্বাচনের সময় কুলাউড়ার মানুষ স্বাচ্ছন্দ্যে নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশগ্রহন করেছে, যাকে খুশি তাকে ভোট প্রদান করেছে, নির্বাচনী আনন্দ আমরা প্রতিপক্ষের সাথেও বন্ধুত্ব ও সম্প্রীতির মাধ্যমে উপভোগ করেছি। এতে সকলেই সম্মানিত হয়েছি। যা ছিলো এই কুলাউড়ার অহংকার আমাদের পূর্ব পুরুষগণের শিক্ষা। তবে আজ কে বা কাদের ইন্ধনে আমরা আমাদের পূর্ব পুরুষদের শিক্ষাকে পদদলিত করছি।
আজ নির্বাচনী আনন্দযজ্ঞের সময়ে ঐক্যফ্রন্ট ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের আমার নেতাকর্মীদের বিনা কারণে ও কৃত্রিম অজুহাতে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। ক্ষমতার বদৌলতে তাদের নামে মিথ্যা মামলা, হুলিয়া জারীকরা হচ্ছে। তারা বাড়ী ঘরে থাকতে পারছেনা। তাদের পরিবার পরিজন উৎকন্ঠায়। আজ তাদের মায়ের চোখের অশ্রু আর বোনের কান্নায় কুলাউড়ার আকাশ বাতাস ভারী হচ্ছে। সমাজ হচ্ছে কলুষিত? কেন বিনা অপরাধে কারান্তরীণ সন্তানের জন্য একেকজন পিতার করুন আর্তনাদ শুনা যাচ্ছে? কেন স্বামীর জন্য প্রিয়তমা স্ত্রীর কান্না আর সন্তানদের আহাজারীতে কুলাউড়ার ঘরে ঘরে উৎকন্ঠা ও বিষাদের করুণ সুর প্রতিধ্বনিত হচ্ছে? এতো আমাদের পূর্ব পুরুষের মানবিক মূল্যবোধের কুলাউড়া নয়! এভাবে কি কোন সম্প্রীতির সমাজ কল্পনা করা যায়? এভাবে কি সামাজিক মুল্যবোধের সহাবস্থান সম্ভব? যা অতীব দুঃখজনক। আমি মিথ্যা মামলা ও পুলিশী নির্যাতনের শিকার প্রতিটি নেতাকর্মী এবং তাদের বেদনাকাঁতর ও উৎকন্ঠিত পরিবার পরিজনের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।
রাজনীতি মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার। আমাদের সমাজে একই পরিবারের সন্তান নানা দলের রাজনীতি করেন। সুতরাং, আমরা নানা দল ও আদর্শে বিভক্ত থাকলেও আমাদের মধ্যে আত্নীয়তা, রক্ত ও বন্ধুত্বের সম্পর্ক বিদ্যমান। একটি পরিবারে আঘাত লাগলে অন্য পরিবারে কান্নার রোল উঠে। তাই আমি সর্বদা সম্প্রীতিময় ঐক্যবদ্ধ কুলাউড়ায় বিশ্বাসী। আমি যখন এম পি ছিলাম একটি মূহুর্তের জন্য ঘূনাক্ষরেও আমি প্রতিপক্ষ দলের নেতাকর্মীদের দমনের চিন্তা করি নাই। আমি দেখেছি কুলাউড়ার মান মর্যাদা। আমি দেখেছি কুলাউড়াবাসীর ঐক্য ও গৌরব। ছলে বলে কৌশলে প্রতিপক্ষ দমনের কৌশল কখনো রাজনীতির হাতিয়ার হতে পারেনা। তা মানুষের মাঝে ঘৃনা ও হিংসার বিষবাষ্প ছড়ায়। যা একটি সমাজের মানবিক মূল্যবোধকে ধ্বংস করে দেয়।
আজ কুলাউড়ার নির্বাচনী মাঠে প্রতিটি দলের প্রার্থী, নেতাকর্মী, সংগটক, সমর্থক, ভোটার, কুলাউড়ার সাধারণ জনগণ ও প্রশাসনের উদ্দেশ্যে আমার আকুল আবেদন, আসুন, আমরা স্বাধীনভাবে প্রত্যেকের নির্বাচনী কার্যক্রম চালিয়ে যাই এবং কুলাউড়ার আবহমান কালের চিরায়ত সম্প্রীতির ঐতিহ্য রক্ষা করি। এরই সাথে যারা বিনা অপরাধে ছলে বলে কৌশলে ঘৃণ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের উপর সাজানো মিথ্যা মামলা-হুলিয়া জারীর পাঁয়তারা করছেন তাদের প্রত্যাখান ও প্রতিরোধ করি। এরা আমাদের বন্ধু নয় শত্রু। এদেরকে সমাজ ও মানবতার দুশমন হিসেবে চিহ্নিত করি।
সম্প্রীতিময় কুলাউড়ার জয় হোক। অশুভ শক্তির বিনাশ হোক।
বিনীত
সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ
৫২বাংলা ডেক্স: জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০১৮ এ মৌলভীবাজার ২ (কুলাউড়া) আসনে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী, সাবেক সংসদ সদস্য ও ডাকসু ভিপি জননেতা সুলতান মনসুরের সমর্থিত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে মিথ্যা মামলা, গণগ্রেপ্তার, পুলিশী নির্যাতন ও হয়রানীর প্রতিবাদে কুলাউড়ার জনসাধারণ ও স্থানীয় আইন শৃংখলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের উদ্দেশ্যে আবহমান কালের কুলাউড়ার সামাজিক সম্প্রীতি রক্ষার আহ্বান জানিয়ে জননেতা সুলতান মনসুরের খোলা চিটি। যা স্থানীয় জনসাধারণের মধ্যে বিলি করা হচ্ছে এবং স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিক, সাপ্তাহিক পত্রিকা ও অনলাইন পোর্টাল ইত্যাদি প্রচার মাধ্যমে প্রেরণ করা হয়েছে।