স্পেনে কমিউনিটির এক অকৃত্রিম বন্ধু মো. ফজলে এলাহী ,বিস্তারিত দেখুন ৫২বাংলাটিভি প্রতিবেদনে
ফজলে এলাহী স্পেনে লিভায়েন্তে বাংলার সভাপতি। দিনে দিনে স্পেনে বাংলাদেশির সংখ্যা বেড়েছে। এক সময়ের ছোট এক অভিবাসী কমিউনিটি সমস্যা সম্ভাবনা নিয়ে প্রতিষ্ঠা পেয়েছিল এ সংগঠনের। সময়ের সঙ্গে সোসাইটির দায়িত্বও বেড়েছে। প্রত্যাশা বেড়েছে স্পেন প্রবাসীদেরও।
বর্তমান সময়ে বৃহত্তর এ সংগঠনটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন ফজলে এলাহী। একজন সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে স্পেনে স্বদেশীদের যে কোনো সমস্যায় তাঁকে ছুটে আসতে দেখা যায়। কাগজপত্রহীন অভিবাসীর সমস্যা থেকে শুরু করে, হেইট ক্রাইমসহ নানা সমস্যায় পড়া স্বদেশীদের খোঁজ খবর নেন ফজলে এলাহী।
ব্রাম্ণবাড়ীয়া জেলার সরাইল থানার ভূইশহর সাহেব বাড়ী জন্ম এলাহী‘র। ২০০৫ সালে স্পেনে ইমিগ্রান্ট হিসেবে আসার পর প্রথমে সাধারণ শ্রমিক হিসেবে কাজ শুরু করেন।প্রবাসীদের কোটায় ২০০৬ সালে সিটি কর্পোরেশনের সাধারন জনগণের ভোট মেসা দে কনভিয়েনসায় (মেম্বার) নির্বাচিত হন। তখন তিনি প্রায়ই বাংলাদেশিদের বিভিন্ন সমস্যা দেখে কমিউনিটির জন্য কিছু করার তাড়না থেকে ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠা করেন লিভায়েন্তে বাংলার।প্রতিষ্ঠার পর থেকে কমিউনিটি তথা প্রবাসীদের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে স্প্যানিশ এনজিও দের সাথে পাল্লা দিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন আজ অবধি। এসব কাজ করতে গিয়ে বিভিন্ন সময় স্প্যানিশ পত্রিকার শিরোনাম ও হয়েছেন।
১৪ অক্টোবর শনিবার স্পেনের প্রবীন সাংবাদিক ও উপস্থাপক জিদ্দি চৌধুরী’র উপস্থানায় প্রবাসীদের নিয়ে একটি ব্যাতিক্রমী অনুষ্ঠান ‘আড্ডা’ অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের প্রধান আকর্ষণ ছিলেন মো. ফজলে এলাহী। এ সময় উপস্থাপক জিদ্দি চৌধুরী ছাড়া ও উপস্থিত হল ভর্তি প্রবাসীরা বিভিন্ন প্রশ্ন করেন ফজলে এলাহীকে।
দেশে থাকতেই রাজনীতি আর সমাজকর্মের প্রতি আকর্ষণ ছিল ফজলে এলাহীর। প্রবাসী হওয়ার পর জড়িয়ে পড়েন কমিউনিটির নানা কাজ কর্মে। ২০০৮ সাল থেকে মাদ্রিদ সিটি কর্পোরেশনের ইনফোরমেশন সেন্টারে জব নিয়ে এখন পর্যন্ত অত্যন্ত দক্ষতার সহিত এ দায়িত্ব পানল করে চলেছেন।প্রতিনিত দিয়ে যাচ্ছেন প্রবাসীদের নানা সেবা সমূহ।
লিভায়েন্তে বাংলার সভাপতি হিসেবে জানালেন, অনেক কিছু করার ইচ্ছা থাকলেও নানা সীমাবদ্ধতায় করা হয়ে ওঠে না। জানালেন, সোসাইটিকে শক্তশালী করারা জন্য সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। সংগঠনের তহবিল বৃদ্ধি করা হয়েছে। স্পেনে বাংলাদেশী শিশুদের জন্য বাংলা স্কুল প্রতিষ্ঠা করা করার জন্য কাজ করছেন।বর্তমানে স্পেনে নতুন আসা বাংলাদেশিদের জন্য ফ্রী ল্যাংগুয়েজ কোর্স চালু করা হয়েছে।রয়েছে ফ্রী আইনী পরামর্শ। এর মধ্যে দেশে নানা বিপর্যয়ে, এমনকি সাম্প্রতিক রোহিঙ্গা সমস্যায় স্পেন থেকে পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে। নতুন অভিবাসীদের সাহায্য প্রদান করা হয়। নতুন অভিবাসী হিসেবে আসার জন্য অসংখ্য প্রবাসীকে ফ্রী এড্রেস এর ব্যবস্থা করে দেওয়ার কথা জানালেন ফজলে এলাহী।
নিজে মূলধারার রাজনীতিতে আগ্রহী না হলেও মনে প্রাণে চান, স্পেনে বাংলাদেশী কমিউনিটি যেন স্পেনের মূলধারার রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হয়। এ নিয়ে ব্যক্তিগত ও সংগঠনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়ার কথা জানালেন তিনি। স্পেনের কোনো কোনো এলাকায় অচিরেই মূলধারার রাজনীতিতে বাংলাদেশির সাফল্য আসবে বলে আশাবাদের কথা জানালেন।ফজলে এলাহী বলেন, ‘আমাদের যে করেই হোক নিজেদের ঐক্য সংহত রাখতে হবে। নিজেরা সংগঠিত থাকলেই এগিয়ে যাওয়া সহজ হবে।’
স্পেনে স্বদেশীদের নানা সংগঠন, বিভক্তি নিয়েও কথা বলেন ফজলে এলাহী ,‘ সংগঠিত হওয়ার মধ্যে দোষের কিছু নেই। এসব কমিউনিটি সংগঠন ছোট বড় অনেক কাজ করে থাকে। একজনের বিপদে আপদে অন্যজন পাশে দাঁড়ায়।’ যদিও বিভক্তি নানা বিবাদ সৃষ্টি করে উল্লেখ করে জানালেন, বেশকটি সংগঠনের বিভক্তি দূর করতে তাঁরা ভূমিকা রাখছেন।
নিত্যদিন কমিউনিটির সেবায় অন্তপ্রাণ ফজলে এলাহী জানালেন, সোসাইটিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই এখন তার বড় স্বপ্ন। এ কাজে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।