ঢাকা ১১:৩২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৩২ ঘণ্টা পর ৬০ ফুট নিচ থেকে শিশু সাজিদকে উদ্ধার

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ১০:২৭:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫
  • / 35

৬০ ফুট গর্ত থেকে শিশুকে উদ্ধার

অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

রাজশাহীর তানোরে নলকূপের একটি পরিত্যক্ত গর্তে পড়ে যাওয়ার ৩২ ঘণ্টা পর শিশু সাজিদকে উদ্ধার করা হয়েছে। প্রায় ৬০ ফুট নিচ থেকে তাকে তুলে আনা হয়। শিশুটিকে উদ্ধার করে তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়েছে। সে জীবিত না মৃত—এখনও তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) রাত ৯টা ৫ মিনিটে তাকে উদ্ধার করা হয়।

ফায়ার সার্ভিসের অপারেশন ডিরেক্টর লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, শিশুটিকে ৬০ ফুট নিচ থেকে তোলা হয়েছে। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়েছে। চিকিৎসকের পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বিস্তারিত জানা যাবে।

এর আগে বুধবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুর ১টার দিকে দুই বছর বয়সী সাজিদ গভীর ওই গর্তে পড়ে যায়। সে সময় মায়ের হাত ধরে কেটে নেওয়া ধানের ক্ষেতে হাঁটছিল। তখন হঠাৎ সে গর্তে পিছলে পড়ে যায়। তানোর উপজেলার কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামের রাকিবুল ইসলাম তার বাবা। রাকিব ঢাকার একটি জুট মিলে ব্যবস্থাপক পদে চাকরি করেন।

ঘটনার পর বিকাল থেকে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট উদ্ধার কাজে নামে। শিশুটিকে বাঁচাতে গর্তে পাইপের মাধ্যমে অক্সিজেন সরবরাহ করা হয়। পাশাপাশি গভীর সুড়ঙ্গ খনন করে তাকে উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যান ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা।

ফায়ার সার্ভিসের রাজশাহী বিভাগের সহকারী পরিচালক দিদারুল আলম জানান, শিশুটি গর্তে পড়ার খবর তারা পান বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে। গিয়ে দেখেন, স্থানীয়রা চেষ্টা করতে গিয়ে গর্তে কিছু মাটি ফেলে দিয়েছেন। বিকাল ৪টা পর্যন্ত শিশুটির সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল। কিন্তু পরে মানুষের ভিড় ও হট্টগোলের কারণে আর সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না। ফায়ার সার্ভিসের তিন ইউনিট উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রাখে এবং শিশুটিকে উদ্ধারে সব ধরনের চেষ্টা করা হয়।

শিশুর মা রুনা খাতুন বলেন, দুপুর ১টার দিকে মেজো ছেলে সাজিদের হাত ধরে তিনি বাড়ির পাশের মাঠে যাচ্ছিলেন। কোলে ছিল তার আরেক সন্তান। হাঁটার সময় হঠাৎ সাজিদ ‘মা’ বলে ডাক দেয়। পেছনে তাকিয়ে দেখেন, ছেলে নেই; গর্তের ভেতর থেকে ‘মা, মা’ বলে ডাকছে। গর্তটির ওপরে খড় বিছানো থাকায় তিনি বুঝতে পারেননি যে সেখানে গর্ত রয়েছে—ছেলেও পারেনি। পা দেওয়া মাত্রই সে গর্তে পড়ে যায়। লোকজনকে ডাকতে ডাকতেই শিশুটি নিচে নেমে যায়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, তানোর উপজেলার পচন্দর ইউনিয়নের এই এলাকায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর অনেক নিচে নেমে গেছে। ফলে গভীর নলকূপ বসানো এখানে নিষিদ্ধ। এমন পরিস্থিতিতেও কোয়েলহাট গ্রামের জমির মালিক কছির উদ্দিন প্রায় এক বছর আগে একটি গভীর নলকূপ স্থাপনের জন্য ৮ ফুট ব্যাসার্ধের মুখ করে গর্ত খনন করেন। পানি না পাওয়ায় নলকূপ বসানো হয়নি। গর্তটি ভরাটও করা হয়েছিল, কিন্তু বর্ষায় মাটি বসে গিয়ে নতুন করে ওই গর্ত সৃষ্টি হয়। সেখানেই পড়ে যায় শিশু সাজিদ।

নিউজটি শেয়ার করুন

৩২ ঘণ্টা পর ৬০ ফুট নিচ থেকে শিশু সাজিদকে উদ্ধার

আপডেট সময় : ১০:২৭:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫

রাজশাহীর তানোরে নলকূপের একটি পরিত্যক্ত গর্তে পড়ে যাওয়ার ৩২ ঘণ্টা পর শিশু সাজিদকে উদ্ধার করা হয়েছে। প্রায় ৬০ ফুট নিচ থেকে তাকে তুলে আনা হয়। শিশুটিকে উদ্ধার করে তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়েছে। সে জীবিত না মৃত—এখনও তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) রাত ৯টা ৫ মিনিটে তাকে উদ্ধার করা হয়।

ফায়ার সার্ভিসের অপারেশন ডিরেক্টর লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, শিশুটিকে ৬০ ফুট নিচ থেকে তোলা হয়েছে। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়েছে। চিকিৎসকের পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বিস্তারিত জানা যাবে।

এর আগে বুধবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুর ১টার দিকে দুই বছর বয়সী সাজিদ গভীর ওই গর্তে পড়ে যায়। সে সময় মায়ের হাত ধরে কেটে নেওয়া ধানের ক্ষেতে হাঁটছিল। তখন হঠাৎ সে গর্তে পিছলে পড়ে যায়। তানোর উপজেলার কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামের রাকিবুল ইসলাম তার বাবা। রাকিব ঢাকার একটি জুট মিলে ব্যবস্থাপক পদে চাকরি করেন।

ঘটনার পর বিকাল থেকে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট উদ্ধার কাজে নামে। শিশুটিকে বাঁচাতে গর্তে পাইপের মাধ্যমে অক্সিজেন সরবরাহ করা হয়। পাশাপাশি গভীর সুড়ঙ্গ খনন করে তাকে উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যান ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা।

ফায়ার সার্ভিসের রাজশাহী বিভাগের সহকারী পরিচালক দিদারুল আলম জানান, শিশুটি গর্তে পড়ার খবর তারা পান বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে। গিয়ে দেখেন, স্থানীয়রা চেষ্টা করতে গিয়ে গর্তে কিছু মাটি ফেলে দিয়েছেন। বিকাল ৪টা পর্যন্ত শিশুটির সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল। কিন্তু পরে মানুষের ভিড় ও হট্টগোলের কারণে আর সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না। ফায়ার সার্ভিসের তিন ইউনিট উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রাখে এবং শিশুটিকে উদ্ধারে সব ধরনের চেষ্টা করা হয়।

শিশুর মা রুনা খাতুন বলেন, দুপুর ১টার দিকে মেজো ছেলে সাজিদের হাত ধরে তিনি বাড়ির পাশের মাঠে যাচ্ছিলেন। কোলে ছিল তার আরেক সন্তান। হাঁটার সময় হঠাৎ সাজিদ ‘মা’ বলে ডাক দেয়। পেছনে তাকিয়ে দেখেন, ছেলে নেই; গর্তের ভেতর থেকে ‘মা, মা’ বলে ডাকছে। গর্তটির ওপরে খড় বিছানো থাকায় তিনি বুঝতে পারেননি যে সেখানে গর্ত রয়েছে—ছেলেও পারেনি। পা দেওয়া মাত্রই সে গর্তে পড়ে যায়। লোকজনকে ডাকতে ডাকতেই শিশুটি নিচে নেমে যায়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, তানোর উপজেলার পচন্দর ইউনিয়নের এই এলাকায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর অনেক নিচে নেমে গেছে। ফলে গভীর নলকূপ বসানো এখানে নিষিদ্ধ। এমন পরিস্থিতিতেও কোয়েলহাট গ্রামের জমির মালিক কছির উদ্দিন প্রায় এক বছর আগে একটি গভীর নলকূপ স্থাপনের জন্য ৮ ফুট ব্যাসার্ধের মুখ করে গর্ত খনন করেন। পানি না পাওয়ায় নলকূপ বসানো হয়নি। গর্তটি ভরাটও করা হয়েছিল, কিন্তু বর্ষায় মাটি বসে গিয়ে নতুন করে ওই গর্ত সৃষ্টি হয়। সেখানেই পড়ে যায় শিশু সাজিদ।