২২ বছর পর ভারতকে হারালো বাংলাদেশ
- আপডেট সময় : ১০:১৮:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫
- / 113
২০০৩ সালে জাতীয় স্টেডিয়ামে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতকে শেষবারের মতো হারিয়েছিল বাংলাদেশ। এরপর দীর্ঘ দুই দশক প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের বিপক্ষে জয়ের দেখা মেলেনি লাল-সবুজদের। ২২ বছর পর আবারও একই মাঠে পুরনো স্মৃতি ফিরিয়ে আনেন ক্রিকেটাররা—হামজা-রাকিবরা। এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে শেখ মোরসালিনের গোলে জয় শুষ্কতা ভাঙে বাংলাদেশে। ভারতকে ১-০ গোলে হারিয়ে বাছাইপর্বে প্রথম জয় পেয়েছে জামাল ভূঁইয়ারা।
মঙ্গলবার ঢাকার জাতীয় স্টেডিয়ামে ভারতের বিরুদ্ধে প্রথমার্ধেই ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। গোলটি করেছেন শেখ মোরসালিন। শেষ পর্যন্ত তারই গোলটি জয় নিশ্চিত করে।
শুরুর দিকে মধ্যমাঠে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আক্রমণে এগোতে দেখা যায় ভারতকে। তবু গোলের দেখা পায় বাংলাদেশই। তৃতীয় মিনিটে রাকিব হোসেনের তুলনামূলকভাবে দুর্বল ভলিটি সহজেই গোলক্ষকের কাছে গেলে দর্শকরা উচ্ছ্বাসে ফেটে ওঠে। সপ্তম মিনিটে মোরসালিনের থ্রু পাসকে ধরা কেউ পায়নি। খেলাটি তখন কিছুটা সাবধানী ছন্দে চলছিল। এরপর ১২ মিনিটে মোরসালিন চোখধাঁধানো একটি গোল করে গ্যালারিকে জাগিয়ে তোলেন।
মাঝমাঠ থেকে রাকিবকে বল বাড়ান মোরসালিন; দৌড়ে বক্সের দিকে ঢুকে ডিফেন্ডারকে গতি দিয়ে পেছনে ফেলে মাপা পাস দেন রাকিবকে। অন্য প্রান্তে থাকা মোরসালিন টপকে গিয়ে গোলকিপারের দুই পায়ের ফাঁক দিয়ে বল জালে পাঠান এবং উদযাপনে মাতেন। দর্শকরাও উল্লাসে ফেটে পড়ে। লাল-সবুজ জার্সিতে এটিই তার সপ্তম গোল।
শুরু থেকে খুব স্বাচ্ছন্দ্য পাচ্ছিলেন না তারিক কাজী। অস্বস্তি বোধের কারণে ২৬ মিনিটে তাকে নামিয়ে মাঠে নামানো হয় শাকিল আহাদ তপুকে।
৩১ মিনিটে নিজেদের মধ্যে বল লেনদেনেই ভুল করে অনেকটা সামনে চলে এসে বিপদ ডেকে আনেন গোলরক্ষক মিতুল মারমা। কর্নারের কাছাকাছি বল হারানোর পর সুযোগ পায় লালিয়ানজুয়ালা চাংতে। তার শট রুখতে পোস্ট থেকে অনেক দূরে থাকা মিতুলের পক্ষে কিছু করার থাকে না। চাংতের হেড শটকে ঝাঁপিয়ে ক্লিয়ার করে বাংলাদেশকে রক্ষা করেন হামজা।
কিছুক্ষণ পর তপু বর্মণের করা একটি ফাউলকে কেন্দ্র করে দুই দলের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। কিছুটা ধাক্কাধাক্কিও হয়েছিল। রেফারি তপু ও নারাভি নিখিল প্রভুকে হলুদ কার্ড দেখান। ৩৯ মিনিটে ভারতের এক খেলোয়াড়ের হেড রাকিব রুখে দেন।
৪৪ মিনিটে হামজার শক্তিশালী ভলি পোস্টে লেগে অল্পের জন্য বাইরে যায়।
বিরতির পর ভারত আক্রমণ বাড়ায়। তারা গোলে সমতা ফেরাতে চেষ্টা করে; তবু সফল হয় না। এই সময়ে বাংলাদেশের খেলা কিছুটা অগোছাল মনে হওয়ায় ভারতের চাপ দেখা গেলেও রক্ষণভাগ দুর্ভেদ্য ছিল। হামজা-তপুরা কোনোভাবেই গোল ফেঁসে দিচ্ছিলেন না।
৫০ মিনিটে ফ্রি-কিক থেকে রাহুল ভেকের হেড কাছাকাছি পোস্টের বাইরের দিকে যায়। তিন মিনিট পর বদলি মহেষ সিংয়ের নিচু শটও লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
৭১ মিনিটে জায়ান চোট পান; তার পরিবর্তে মাঠে নামেন তাজ উদ্দিন। মোরসালিনের জায়গায় খেলেন শাহরিয়ার ইমন। নিজেদের গুছিয়ে নেয়ায় বাংলাদেশও কয়েকটি সুযোগ তৈরি করে। ৭৯ মিনিটে ভালো অবস্থান থেকে শাকিল আহাদ তপুর নেওয়া শট গোলকিপার বাঁ দিকে ঝুঁকে আংশিকভাবে আটকে দেন।
দুই মিনিট পর শাহরিয়ার ইমনের ক্রসে ফাহিমের হেড প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়ের মাথায় কেঁড়ে কর্নার হয়। বাংলাদেশ পেনাল্টির দাবি করলেও রেফারি সেই আহ্বান মেনে নেননি। সেই কর্নার থেকে ভারত আক্রমণে উঠলেও তা কাজে লাগে নি।
শেষ মুহূর্তে ভারত আবার তীব্রভাবে আক্রমণ করলেও গোল করা সম্ভব হয়নি। ১৬ বছর পর বাংলাদেশে এসে ভারত পরাজিত হয়ে ফিরে গেছে।
















