ঢাকা ১২:৫০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে আরও ৩০ দেশের নাগরিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা খাঁচা থেকে বের হওয়া সিংহী আড়াই ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে লন্ডনে ফ্লাই রবিবার, নির্জন কারাবাস থেকেই খালেদা জিয়ার ‘নানা রোগের সূচনা’ জানালেন ফখরুল মহাকাশ থেকে পবিত্র  কাবা শরিফের উজ্জ্বল ছবি আন্দোলনে থাকা প্রাথমিকের শিক্ষকদের বদলি, ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত তারেক রহমানের দেশে ফেরা আবার অনিশ্চিত, কীভাবে ভোটার হবেন? খালেদা জিয়া ছাড়া পরিবারের কেউ ভিভিআইপি সুবিধা পাবেন না কুকুরছানা হত্যা মামলায় মায়ের সঙ্গে কারাগারে ২ বছরের শিশু খালেদা জিয়াকে লন্ডন নিতে ঢাকায় আসছেন জুবাইদা যুক্তরাজ্যের ৯ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী!

শোক প্রকাশ কি ঠেকানো গেল?

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ১২:০১:০৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৫
  • / 105

বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকীতে শিল্পীর আঁকা পোস্টার

অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নাদিম মাহমুদ

গত ১৬ বছর ধরে ফেইসবুক ব্যবহার করছি। এই দীর্ঘ সময়ে অনেকবার ১৫ আগস্ট পার করেছি। বিদায়ী শেখ হাসিনা সরকারের আমলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকীতে আয়োজিত সরকারি শোক দিবসের উদযাপন আর এবারের ১৫ আগস্টের মধ্যে বিস্তর মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। পার্থক্যটা অনেকই বলবেন, ক্ষমতার রদবদল হয়েছে, কিন্তু সেটার বাহিরে একটা বেশ কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে, যা আমি গত দেড় দশকে অন্তত দেখতে পাইনি। সেই বিষয়গুলো নিয়ে আমার কিছু পর্যবেক্ষণ তুলে ধরছি।

আপনি যদি ফেইসবুক ব্যবহার করে থাকেন, তাহলে নিশ্চিয় এই পরিবর্তনটা আপনার নজরে এসেছে। গত ১২ ঘণ্টায় ফেইসবুকে যত পোস্ট টাইমলাইনে ভেসে এসেছে, তার ৯৮ শতাংশ পোস্টই ‘স্বাধীনতার স্থপতি’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে। যদিও প্রতিবছর এই ধরনের ট্রেন্ট ছিল, কিন্তু এবারের প্রসঙ্গটি একবারেই ভিন্ন। শেখ হাসিনার ক্ষমতার সময় যারা ‘জাতির পিতা’ বঙ্গবন্ধু বলে মুখে ফেনা তুলে ফেলত, যারা ফেইসবুক ও অন্যন্য মাধ্যমে ‘মুজিবসেনা’ প্রমাণে ব্যস্ত থাকত, সেই মানুষগুলো গত বছর ৫ আগস্টের পর অনেকটাই নাই হয়ে গিয়েছে। ওদের টাইমলাইন আজ অনেকটাই ফাঁকা। বরং তাঁরা ব্যস্ত ক্ষমতাশীনদের প্রশংসা নিয়ে।

কিন্তু এবার যারা পোস্ট করছে, তাদের মধ্যে একটি বড় অংশ গত পনের বছর শেখ হাসিনা শাসনামলে এই দিনটিতে ‘এইভাবে শেখ মুজিবকে’ স্মরণ করেননি, কিন্তু এবার তারা স্বেচ্ছায় ভালোবেসেই শোক দিবসে নিজের অবস্থান জানান দিচ্ছে। বলতে গেলে, শেখ মুজিবুর রহমানকে দলীয় দৃষ্টিকোণের বাহিরে রেখে, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর অবদানকে স্মরণ করতেই ‘অর্গানিক মুজিব ভক্ত’ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ছেয়ে গেছে। এই অর্গানিক শেখ মুজিবুর রহমান প্রেমী মানুষগুলোকে গত পনের বছর ‘আওয়ামীলীগ’ জাগতে দেয়নি কিংবা সেই সুযোগ তৈরি করেনি, কিন্তু এবার তাদের অনুপস্থিতিতে সজাগ হয়েছে ‘দল-মতের’ বাহিরে থাকা মানুষগুলো, যাদের ভালোবাসাই যেকোন সময়ের চেয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের শোক দিবস অনেক মর্যাদাবান, অনেক আবেগময়।

আমার পর্যবেক্ষণ বলছে, অন্তবর্তীকালিন সরকারের ‘মুজিব পীড়ন’ মতাদর্শের একটি বড় জবাব দিচ্ছে এই দেশের সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে ‘শোক প্রকাশে’ বাধা দেয়ার ঘোষণায় কিংবা মুক্তিযুদ্ধ ও শেখ মুজিবুর রহমানকে ছোট করার মানসিকতার প্রতিত্তুরে ফেইসবুকে প্রতিবাদ স্বরুপ ‘বঙ্গবন্ধুর’ প্রতি শোক প্রকাশে ঢল নেমেছে। সরকার গত এক বছরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যে আঘাত হেনেছে, সরকারের নীরব সমর্থনে স্বাধীনতার স্মৃতি বিজড়িত বঙ্গবন্ধুর বত্রিশ নাম্বার বাসভবনে যে ভাঙচুর করা হয়েছে, গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে তার প্রতিবাদ এসেছে আজকের এই দিনে ভার্চুয়ালে। মুক্তিযুদ্ধের সাথে জড়িয়ে থাকা শেখ মুজিবুর রহমানকে মুছে ফেলা যে যায় না, তার প্রমাণ আজকে সাধারণ মানুষের ‘বঙ্গবন্ধু’ প্রতি ভালোবাসা।

যে মানুষগুলো আজ শেখ মুজিবুর রহমানের পঞ্চাশতম শাহাদাত বার্ষিকী স্মরণ করছে, এটা দেখে ভাববার সুযোগ নেই, যে এরা সবাই আওয়ামীলীগের সমর্থক কিংবা আওয়ামীলীগ করে। বরং যারা তাকে স্মরণ করছে, তাদের মধ্যে একটি বড় অংশই এই দেশের রাজনীতির সাথে জড়িত নন, কিংবা ভিন্ন ঘরোনার রাজনীতির সাথে জড়িত। ব্যক্তি কিংবা শাসক মুজিবের হিসেব নিকেশ উর্ধ্বে রেখে মহান মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক হয়ে উঠা শেখ মুজিবকে ইতিহাসের মর্যাদাটুকু দিচ্ছে।

ফেইসবুকের পোস্টগুলোর বাহিরে আর একটি বিষয় লক্ষ্যণীয় তাহলো, গণমাধ্যমগুলো বঙ্গবন্ধুর পঞ্চাশতম শাহাদাত বার্ষিকীতে প্রথম পাতায় বক্স সংবাদ ছেপেছে, সম্পাদকীয়-উপ-সম্পাদকীয় ছেপেছে। এইসব সংবাদ যখন তাদের পেইজগুলোতে এসেছে, তখন হাজার হাজার মানুষ কমেন্ট করে ‘বিনম্র শ্রদ্ধা’ জানাচ্ছে। এই কমেন্টগুলোতে কেউই নোংরা কথা বলছে না, যা অন্য সময়গুলোতে করত।

এই যে পরিবর্তনগুলো আমরা গত এক বছর পর লক্ষ্য করলাম, এটাই সম্ভবত শাসকগোষ্ঠিদের জন্য একটি বড় বার্তা যে, শেখ মুজিবুর রহমানকে আপনি কিছুতেই মুছে ফেলতে পারবেন না। শোক দিবস পালনে বাধা দিয়েও আপনি ভাচুর্য়াল বাধা ঠেকাতে পারবেন না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা জাতির জন্য যে কলংকময় অধ্যায় তা কেবল তা একাত্তরের স্বাধীনতা বিরোধীরা ব্যতিত সবার কাছে পরম শোকের, পরম বিয়োগের। তাই এর আগে বলেছি, বঙ্গবন্ধু’ বত্রিশ নাম্বারে নেই, টুঙ্গিপাড়ায় নেই। শত শত নামকরণ কিংবা ভাস্কর্যেও নেই। সেখানে ফুল দিয়ে আপনি তাকে পাবেন না। কিন্তু আপনি যদি মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, যদি মনে করেন তিনি স্বাধীনতার স্থপতি, তাহলে বঙ্গবন্ধু মিশে আছে আপনার মাঝে, আমার মাঝে এই বাংলাদেশের মাঝে! বঙ্গবন্ধু কোন রাজনৈতিক দলের সম্পদ নয়, তিনি আমাদের সবার, তিনি এই বাংলাদেশের।

নিউজটি শেয়ার করুন

শোক প্রকাশ কি ঠেকানো গেল?

আপডেট সময় : ১২:০১:০৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৫

নাদিম মাহমুদ

গত ১৬ বছর ধরে ফেইসবুক ব্যবহার করছি। এই দীর্ঘ সময়ে অনেকবার ১৫ আগস্ট পার করেছি। বিদায়ী শেখ হাসিনা সরকারের আমলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকীতে আয়োজিত সরকারি শোক দিবসের উদযাপন আর এবারের ১৫ আগস্টের মধ্যে বিস্তর মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। পার্থক্যটা অনেকই বলবেন, ক্ষমতার রদবদল হয়েছে, কিন্তু সেটার বাহিরে একটা বেশ কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে, যা আমি গত দেড় দশকে অন্তত দেখতে পাইনি। সেই বিষয়গুলো নিয়ে আমার কিছু পর্যবেক্ষণ তুলে ধরছি।

আপনি যদি ফেইসবুক ব্যবহার করে থাকেন, তাহলে নিশ্চিয় এই পরিবর্তনটা আপনার নজরে এসেছে। গত ১২ ঘণ্টায় ফেইসবুকে যত পোস্ট টাইমলাইনে ভেসে এসেছে, তার ৯৮ শতাংশ পোস্টই ‘স্বাধীনতার স্থপতি’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে। যদিও প্রতিবছর এই ধরনের ট্রেন্ট ছিল, কিন্তু এবারের প্রসঙ্গটি একবারেই ভিন্ন। শেখ হাসিনার ক্ষমতার সময় যারা ‘জাতির পিতা’ বঙ্গবন্ধু বলে মুখে ফেনা তুলে ফেলত, যারা ফেইসবুক ও অন্যন্য মাধ্যমে ‘মুজিবসেনা’ প্রমাণে ব্যস্ত থাকত, সেই মানুষগুলো গত বছর ৫ আগস্টের পর অনেকটাই নাই হয়ে গিয়েছে। ওদের টাইমলাইন আজ অনেকটাই ফাঁকা। বরং তাঁরা ব্যস্ত ক্ষমতাশীনদের প্রশংসা নিয়ে।

কিন্তু এবার যারা পোস্ট করছে, তাদের মধ্যে একটি বড় অংশ গত পনের বছর শেখ হাসিনা শাসনামলে এই দিনটিতে ‘এইভাবে শেখ মুজিবকে’ স্মরণ করেননি, কিন্তু এবার তারা স্বেচ্ছায় ভালোবেসেই শোক দিবসে নিজের অবস্থান জানান দিচ্ছে। বলতে গেলে, শেখ মুজিবুর রহমানকে দলীয় দৃষ্টিকোণের বাহিরে রেখে, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর অবদানকে স্মরণ করতেই ‘অর্গানিক মুজিব ভক্ত’ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ছেয়ে গেছে। এই অর্গানিক শেখ মুজিবুর রহমান প্রেমী মানুষগুলোকে গত পনের বছর ‘আওয়ামীলীগ’ জাগতে দেয়নি কিংবা সেই সুযোগ তৈরি করেনি, কিন্তু এবার তাদের অনুপস্থিতিতে সজাগ হয়েছে ‘দল-মতের’ বাহিরে থাকা মানুষগুলো, যাদের ভালোবাসাই যেকোন সময়ের চেয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের শোক দিবস অনেক মর্যাদাবান, অনেক আবেগময়।

আমার পর্যবেক্ষণ বলছে, অন্তবর্তীকালিন সরকারের ‘মুজিব পীড়ন’ মতাদর্শের একটি বড় জবাব দিচ্ছে এই দেশের সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে ‘শোক প্রকাশে’ বাধা দেয়ার ঘোষণায় কিংবা মুক্তিযুদ্ধ ও শেখ মুজিবুর রহমানকে ছোট করার মানসিকতার প্রতিত্তুরে ফেইসবুকে প্রতিবাদ স্বরুপ ‘বঙ্গবন্ধুর’ প্রতি শোক প্রকাশে ঢল নেমেছে। সরকার গত এক বছরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যে আঘাত হেনেছে, সরকারের নীরব সমর্থনে স্বাধীনতার স্মৃতি বিজড়িত বঙ্গবন্ধুর বত্রিশ নাম্বার বাসভবনে যে ভাঙচুর করা হয়েছে, গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে তার প্রতিবাদ এসেছে আজকের এই দিনে ভার্চুয়ালে। মুক্তিযুদ্ধের সাথে জড়িয়ে থাকা শেখ মুজিবুর রহমানকে মুছে ফেলা যে যায় না, তার প্রমাণ আজকে সাধারণ মানুষের ‘বঙ্গবন্ধু’ প্রতি ভালোবাসা।

যে মানুষগুলো আজ শেখ মুজিবুর রহমানের পঞ্চাশতম শাহাদাত বার্ষিকী স্মরণ করছে, এটা দেখে ভাববার সুযোগ নেই, যে এরা সবাই আওয়ামীলীগের সমর্থক কিংবা আওয়ামীলীগ করে। বরং যারা তাকে স্মরণ করছে, তাদের মধ্যে একটি বড় অংশই এই দেশের রাজনীতির সাথে জড়িত নন, কিংবা ভিন্ন ঘরোনার রাজনীতির সাথে জড়িত। ব্যক্তি কিংবা শাসক মুজিবের হিসেব নিকেশ উর্ধ্বে রেখে মহান মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক হয়ে উঠা শেখ মুজিবকে ইতিহাসের মর্যাদাটুকু দিচ্ছে।

ফেইসবুকের পোস্টগুলোর বাহিরে আর একটি বিষয় লক্ষ্যণীয় তাহলো, গণমাধ্যমগুলো বঙ্গবন্ধুর পঞ্চাশতম শাহাদাত বার্ষিকীতে প্রথম পাতায় বক্স সংবাদ ছেপেছে, সম্পাদকীয়-উপ-সম্পাদকীয় ছেপেছে। এইসব সংবাদ যখন তাদের পেইজগুলোতে এসেছে, তখন হাজার হাজার মানুষ কমেন্ট করে ‘বিনম্র শ্রদ্ধা’ জানাচ্ছে। এই কমেন্টগুলোতে কেউই নোংরা কথা বলছে না, যা অন্য সময়গুলোতে করত।

এই যে পরিবর্তনগুলো আমরা গত এক বছর পর লক্ষ্য করলাম, এটাই সম্ভবত শাসকগোষ্ঠিদের জন্য একটি বড় বার্তা যে, শেখ মুজিবুর রহমানকে আপনি কিছুতেই মুছে ফেলতে পারবেন না। শোক দিবস পালনে বাধা দিয়েও আপনি ভাচুর্য়াল বাধা ঠেকাতে পারবেন না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা জাতির জন্য যে কলংকময় অধ্যায় তা কেবল তা একাত্তরের স্বাধীনতা বিরোধীরা ব্যতিত সবার কাছে পরম শোকের, পরম বিয়োগের। তাই এর আগে বলেছি, বঙ্গবন্ধু’ বত্রিশ নাম্বারে নেই, টুঙ্গিপাড়ায় নেই। শত শত নামকরণ কিংবা ভাস্কর্যেও নেই। সেখানে ফুল দিয়ে আপনি তাকে পাবেন না। কিন্তু আপনি যদি মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, যদি মনে করেন তিনি স্বাধীনতার স্থপতি, তাহলে বঙ্গবন্ধু মিশে আছে আপনার মাঝে, আমার মাঝে এই বাংলাদেশের মাঝে! বঙ্গবন্ধু কোন রাজনৈতিক দলের সম্পদ নয়, তিনি আমাদের সবার, তিনি এই বাংলাদেশের।