ঢাকা ০৪:০৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
আন্দোলনে থাকা প্রাথমিকের শিক্ষকদের বদলি, ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত তারেক রহমানের দেশে ফেরা আবার অনিশ্চিত, কীভাবে ভোটার হবেন? খালেদা জিয়া ছাড়া পরিবারের কেউ ভিভিআইপি সুবিধা পাবেন না কুকুরছানা হত্যা মামলায় মায়ের সঙ্গে কারাগারে ২ বছরের শিশু খালেদা জিয়াকে লন্ডন নিতে ঢাকায় আসছেন জুবাইদা যুক্তরাজ্যের ৯ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী! কাতারের রাজপরিবারের এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে যেসব অত্যাধুনিক সুবিধা রয়েছে কাকরদিয়া–তেরাদল–আলিপুর এডুকেশন ট্রাস্ট ইউকের আত্নপ্রকাশ আরও ৩৬টি আসনে প্রার্থী দিলো বিএনপি খালেদা জিয়ার সঙ্গে লন্ডনে কারা যাচ্ছেন, জানালো বিএনপি

যুক্তরাজ্যের ৯ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী!

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ১১:৫৬:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৫
  • / 102

যুক্তরাজ্যের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস

অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

যুক্তরাজ্যের কমপক্ষে নয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার পথ কার্যত বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ফিন্যান্সিয়াল টাইমস জানিয়েছে, ‘ভিসা অপব্যবহারের’ আশঙ্কা এবং দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কঠোর শর্তের কারণে এসব বিশ্ববিদ্যালয় এ দুই দেশের শিক্ষার্থীদের আবেদন গ্রহণ করছে না।

উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে যুক্তরাজ্যে গিয়ে পরবর্তীতে অনেকে আশ্রয় প্রার্থনা করেন এবং সেখানেই থেকে যেতে চান। এ ধরনের অভিবাসনপ্রত্যাশীর সংখ্যা বাড়ায় ব্রিটিশ সীমান্ত সুরক্ষা মন্ত্রী ডেম অ্যাঞ্জেলা ঈগল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সতর্ক করেছেন।

তিনি বলেছেন, উচ্চশিক্ষার ভিসা প্রক্রিয়াকে যুক্তরাজ্যে আশ্রয় নেওয়ার ‘কৌশল’ হিসেবে ব্যবহার করা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। এ পরিস্থিতিতে প্রকৃত শিক্ষার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সরকারের চাপের মুখে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।

বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তিতে কঠোর অবস্থান নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ইউনিভার্সিটি অব চেস্টার উল্লেখযোগ্য। ‘সাম্প্রতিক সময়ে অপ্রত্যাশিতভাবে ভিসা প্রত্যাখ্যানের হার বেড়ে যাওয়ার’ কারণ দেখিয়ে প্রতিষ্ঠানটি ২০২৬ সালের শরৎ পর্যন্ত পাকিস্তানি শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিত করেছে।

ইউনিভার্সিটি অব উলভারহ্যাম্পটন বাংলাদেশের ও পাকিস্তানের স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের আবেদন নিচ্ছে না। ইউনিভার্সিটি অব ইস্ট লন্ডনও পাকিস্তানি শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিত করেছে।

অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সান্ডারল্যান্ড ও কভেন্ট্রি বিশ্ববিদ্যালয়ও রয়েছে। এ দুটি বিশ্ববিদ্যালয় পাকিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি সাময়িকভাবে বন্ধ রেখেছে।

সান্ডারল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয় জানায়, তারা শিক্ষার্থী ভিসা প্রক্রিয়া কঠোরভাবে মানতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিতে দ্বিধা করবে না।

চলতি বছরের শুরুতে যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তিনটি ‘বেসিক কমপ্লায়েন্স অ্যাসেসমেন্টে’ (বিসিএ) পরিবর্তন আনে। বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি ও ব্যবস্থাপনার লাইসেন্স পেতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এসব মানদণ্ড অবশ্যই পূরণ করতে হয়।

অভিবাসন নীতির বড় ধরনের সংস্কারের অংশ হিসেবে এসব পরিবর্তন আনা হয়, যার লক্ষ্য অপব্যবহার ঠেকানো ও অভিবাসন কমানো। গত চার বছরে এ অভিবাসন সবচেয়ে কম পর্যায়ে নেমেছে।

বিসিএর নতুন নিয়ম সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে। এখন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিশ্চিত করতে হবে— তাদের ভিসা আবেদনগুলোর সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ যেন প্রত্যাখ্যাত হয়। আগে এই সীমা ছিল ১০ শতাংশ।

ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের তথ্যমতে, ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এক বছরে পাকিস্তান থেকে ১৮ শতাংশ এবং বাংলাদেশ থেকে ২২ শতাংশ ভিসা আবেদন বাতিল হয়েছে— যা নির্ধারিত সীমার অনেক ওপরে।

ওই সময়কালে যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মোট ২৩ হাজার ৩৬টি ভিসা আবেদন নাকচ করেছে, যার অর্ধেকই বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের। একই সময়ে এ দুই দেশ থেকে আশ্রয়ের আবেদনও বেড়েছে, যাদের অধিকাংশই কাজ বা শিক্ষার্থী ভিসায় যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করেছিলেন।

আন্তর্জাতিক উচ্চশিক্ষাবিষয়ক কনসালটেন্ট ভিনসেঞ্জো রাইমো বলেন, বিদেশি শিক্ষার্থীর ওপর নির্ভরশীল কম টিউশনফি’র বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য এটি ‘একটি গভীর সংকট’। সামান্য সমস্যাও তাদের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মানদণ্ড পূরণে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।

তিনি আরও জানান, বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ইতোমধ্যে ভর্তি পদ্ধতিতে পরিবর্তন এনেছে। যেমন— ইউনিভার্সিটি অব হার্টফোর্ডশায়ারকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কঠোর কর্মপরিকল্পনার আওতায় রেখেছে। ‘ভিসা প্রক্রিয়াকরণের দীর্ঘ সময়’ লাগার যুক্তিতে তারা ২০২৬ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পাকিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিত করেছে।

ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের তথ্যমতে, গ্লাসগো ক্যালেডোনিয়ান ইউনিভার্সিটিও কর্মপরিকল্পনার অধীনে আছে। প্রতিষ্ঠানটি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তির নীতিতে অস্থায়ী পরিবর্তন এনেছে।

গ্লাসগো ক্যালেডোনিয়ান ইউনিভার্সিটির এক মুখপাত্র জানান, সেপ্টেম্বরের জন্য তারা কয়েকটি প্রোগ্রামে ভর্তি স্থগিত করেছে। তবে জানুয়ারিতে শুরুর কোর্সগুলোর ভর্তি আবার চালু হয়েছে।

অক্সফোর্ড ব্রুকস ইউনিভার্সিটি ২০২৬ সালের জানুয়ারিতে শুরু হতে যাওয়া আন্ডারগ্র্যাজুয়েট কোর্সগুলোর জন্য বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ রেখেছে। তারাও ‘ভিসা প্রক্রিয়ার দীর্ঘ সময়’কে কারণ হিসেবে দেখিয়েছে। তবে সেপ্টেম্বরে পুনরায় ভর্তি শুরু করার কথাও বলছে।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বিপিপি ইউনিভার্সিটি ‘ঝুঁকি প্রশমনের’ অংশ হিসেবে পাকিস্তান থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে।

লন্ডন মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি গত গ্রীষ্মে বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ রেখেছিল। প্রতিষ্ঠানটির ক্ষেত্রে ভিসা প্রত্যাখ্যানের ৬০ শতাংশ আবেদন এসেছে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে।

লাহোরভিত্তিক শিক্ষা সংস্থা ‘এডভ্যান্স অ্যাডভাইজারস’-এর প্রতিষ্ঠাতা মরিয়ম আব্বাস যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর এই কঠোরতায় হতাশা প্রকাশ করে বলেন, “এসব সিদ্ধান্ত প্রকৃত শিক্ষার্থীদের জন্য ‘হৃদয়বিদারক’; কারণ শেষ মুহূর্তে গিয়ে তাদের আবেদন আটকে যাচ্ছে।”

ইউনিভার্সিটিজ ইউকে ইন্টারন্যাশনালের পরিচালক জেমি অ্যারোস্মিথ বলেন, নতুন নিয়ম মানতে অনেক প্রতিষ্ঠানকে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তিতে বৈচিত্র্য আনতে হবে এবং আবেদন প্রক্রিয়া ও আমানত নীতি আরও উন্নত করতে হবে।

তিনি বলেন, কঠোর নিয়মগুলো অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য চ্যালেঞ্জিং হলেও আস্থা বজায় রাখার জন্য এটি জরুরি।

যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়। তাই প্রকৃত শিক্ষার্থী নিশ্চিত করতে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে দায়িত্ব পালনে আরও সচেতন করতে নিয়ম কঠোর করা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

যুক্তরাজ্যের ৯ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী!

আপডেট সময় : ১১:৫৬:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৫

যুক্তরাজ্যের কমপক্ষে নয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার পথ কার্যত বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ফিন্যান্সিয়াল টাইমস জানিয়েছে, ‘ভিসা অপব্যবহারের’ আশঙ্কা এবং দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কঠোর শর্তের কারণে এসব বিশ্ববিদ্যালয় এ দুই দেশের শিক্ষার্থীদের আবেদন গ্রহণ করছে না।

উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে যুক্তরাজ্যে গিয়ে পরবর্তীতে অনেকে আশ্রয় প্রার্থনা করেন এবং সেখানেই থেকে যেতে চান। এ ধরনের অভিবাসনপ্রত্যাশীর সংখ্যা বাড়ায় ব্রিটিশ সীমান্ত সুরক্ষা মন্ত্রী ডেম অ্যাঞ্জেলা ঈগল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সতর্ক করেছেন।

তিনি বলেছেন, উচ্চশিক্ষার ভিসা প্রক্রিয়াকে যুক্তরাজ্যে আশ্রয় নেওয়ার ‘কৌশল’ হিসেবে ব্যবহার করা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। এ পরিস্থিতিতে প্রকৃত শিক্ষার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সরকারের চাপের মুখে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।

বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তিতে কঠোর অবস্থান নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ইউনিভার্সিটি অব চেস্টার উল্লেখযোগ্য। ‘সাম্প্রতিক সময়ে অপ্রত্যাশিতভাবে ভিসা প্রত্যাখ্যানের হার বেড়ে যাওয়ার’ কারণ দেখিয়ে প্রতিষ্ঠানটি ২০২৬ সালের শরৎ পর্যন্ত পাকিস্তানি শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিত করেছে।

ইউনিভার্সিটি অব উলভারহ্যাম্পটন বাংলাদেশের ও পাকিস্তানের স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের আবেদন নিচ্ছে না। ইউনিভার্সিটি অব ইস্ট লন্ডনও পাকিস্তানি শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিত করেছে।

অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সান্ডারল্যান্ড ও কভেন্ট্রি বিশ্ববিদ্যালয়ও রয়েছে। এ দুটি বিশ্ববিদ্যালয় পাকিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি সাময়িকভাবে বন্ধ রেখেছে।

সান্ডারল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয় জানায়, তারা শিক্ষার্থী ভিসা প্রক্রিয়া কঠোরভাবে মানতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিতে দ্বিধা করবে না।

চলতি বছরের শুরুতে যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তিনটি ‘বেসিক কমপ্লায়েন্স অ্যাসেসমেন্টে’ (বিসিএ) পরিবর্তন আনে। বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি ও ব্যবস্থাপনার লাইসেন্স পেতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এসব মানদণ্ড অবশ্যই পূরণ করতে হয়।

অভিবাসন নীতির বড় ধরনের সংস্কারের অংশ হিসেবে এসব পরিবর্তন আনা হয়, যার লক্ষ্য অপব্যবহার ঠেকানো ও অভিবাসন কমানো। গত চার বছরে এ অভিবাসন সবচেয়ে কম পর্যায়ে নেমেছে।

বিসিএর নতুন নিয়ম সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে। এখন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিশ্চিত করতে হবে— তাদের ভিসা আবেদনগুলোর সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ যেন প্রত্যাখ্যাত হয়। আগে এই সীমা ছিল ১০ শতাংশ।

ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের তথ্যমতে, ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এক বছরে পাকিস্তান থেকে ১৮ শতাংশ এবং বাংলাদেশ থেকে ২২ শতাংশ ভিসা আবেদন বাতিল হয়েছে— যা নির্ধারিত সীমার অনেক ওপরে।

ওই সময়কালে যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মোট ২৩ হাজার ৩৬টি ভিসা আবেদন নাকচ করেছে, যার অর্ধেকই বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের। একই সময়ে এ দুই দেশ থেকে আশ্রয়ের আবেদনও বেড়েছে, যাদের অধিকাংশই কাজ বা শিক্ষার্থী ভিসায় যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করেছিলেন।

আন্তর্জাতিক উচ্চশিক্ষাবিষয়ক কনসালটেন্ট ভিনসেঞ্জো রাইমো বলেন, বিদেশি শিক্ষার্থীর ওপর নির্ভরশীল কম টিউশনফি’র বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য এটি ‘একটি গভীর সংকট’। সামান্য সমস্যাও তাদের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মানদণ্ড পূরণে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।

তিনি আরও জানান, বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ইতোমধ্যে ভর্তি পদ্ধতিতে পরিবর্তন এনেছে। যেমন— ইউনিভার্সিটি অব হার্টফোর্ডশায়ারকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কঠোর কর্মপরিকল্পনার আওতায় রেখেছে। ‘ভিসা প্রক্রিয়াকরণের দীর্ঘ সময়’ লাগার যুক্তিতে তারা ২০২৬ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পাকিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিত করেছে।

ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের তথ্যমতে, গ্লাসগো ক্যালেডোনিয়ান ইউনিভার্সিটিও কর্মপরিকল্পনার অধীনে আছে। প্রতিষ্ঠানটি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তির নীতিতে অস্থায়ী পরিবর্তন এনেছে।

গ্লাসগো ক্যালেডোনিয়ান ইউনিভার্সিটির এক মুখপাত্র জানান, সেপ্টেম্বরের জন্য তারা কয়েকটি প্রোগ্রামে ভর্তি স্থগিত করেছে। তবে জানুয়ারিতে শুরুর কোর্সগুলোর ভর্তি আবার চালু হয়েছে।

অক্সফোর্ড ব্রুকস ইউনিভার্সিটি ২০২৬ সালের জানুয়ারিতে শুরু হতে যাওয়া আন্ডারগ্র্যাজুয়েট কোর্সগুলোর জন্য বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ রেখেছে। তারাও ‘ভিসা প্রক্রিয়ার দীর্ঘ সময়’কে কারণ হিসেবে দেখিয়েছে। তবে সেপ্টেম্বরে পুনরায় ভর্তি শুরু করার কথাও বলছে।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বিপিপি ইউনিভার্সিটি ‘ঝুঁকি প্রশমনের’ অংশ হিসেবে পাকিস্তান থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে।

লন্ডন মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি গত গ্রীষ্মে বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ রেখেছিল। প্রতিষ্ঠানটির ক্ষেত্রে ভিসা প্রত্যাখ্যানের ৬০ শতাংশ আবেদন এসেছে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে।

লাহোরভিত্তিক শিক্ষা সংস্থা ‘এডভ্যান্স অ্যাডভাইজারস’-এর প্রতিষ্ঠাতা মরিয়ম আব্বাস যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর এই কঠোরতায় হতাশা প্রকাশ করে বলেন, “এসব সিদ্ধান্ত প্রকৃত শিক্ষার্থীদের জন্য ‘হৃদয়বিদারক’; কারণ শেষ মুহূর্তে গিয়ে তাদের আবেদন আটকে যাচ্ছে।”

ইউনিভার্সিটিজ ইউকে ইন্টারন্যাশনালের পরিচালক জেমি অ্যারোস্মিথ বলেন, নতুন নিয়ম মানতে অনেক প্রতিষ্ঠানকে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তিতে বৈচিত্র্য আনতে হবে এবং আবেদন প্রক্রিয়া ও আমানত নীতি আরও উন্নত করতে হবে।

তিনি বলেন, কঠোর নিয়মগুলো অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য চ্যালেঞ্জিং হলেও আস্থা বজায় রাখার জন্য এটি জরুরি।

যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়। তাই প্রকৃত শিক্ষার্থী নিশ্চিত করতে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে দায়িত্ব পালনে আরও সচেতন করতে নিয়ম কঠোর করা হয়েছে।