বুধবার (১০ ডিসেম্বর) চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১–এ মামলার আসামি সজীব ওয়াজেদ জয় ও জুনাইদ আহমেদ পলকের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানিতে এ অভিযোগ তোলা হয়।
শুনানিতে পলকের পক্ষে বক্তব্য দেন ব্যারিস্টার এম. লিটন আহমেদ। প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
শুনানি শেষে ব্যারিস্টার এম. লিটন আহমেদ জানান, কারাগারে থাকা অবস্থায় পলক পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং টেলিফোনে কথা বলার সুযোগ পেতেন। তবে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়া এবং জাতীয় সংগীত গাওয়ার পর থেকে এসব সুযোগ তিনি আর পাচ্ছেন না। বিষয়টি জেল কোড অনুযায়ী বিবেচনার জন্য ট্রাইব্যুনালকে অবহিত করা হয়েছে এবং এ বিষয়ে ট্রাইব্যুনাল আদেশ দেবেন বলেও তিনি জানান।
মূলত কারাগারের শৃঙ্খলা ভঙ্গের ঘটনায় জেল কোড অনুসারে কারা কর্তৃপক্ষ প্রিজন্স অ্যাক্ট অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়ে থাকে।
দ্য প্রিজন্স অ্যাক্ট, ১৮৯৪ অনুযায়ী আইনজীবী, আত্মীয়স্বজন ও অনুমোদিত অন্যান্য ব্যক্তির সঙ্গে বন্দিদের সাক্ষাৎ ও যোগাযোগের বিধান রয়েছে। আইনে বলা হয়েছে—
(১) বন্দিরা কারা কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ও তাদের নির্ধারিত তারিখ ও সময়ে নিম্নবর্ণিত ব্যক্তিবর্গের সহিত সাক্ষাৎ করিতে পারিবেন, যথা:
(ক) আইনজীবী;
(খ) পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব বা অনুমোদিত অন্যান্য ব্যক্তি;
(গ) বিদেশি বন্দির ক্ষেত্রে, সরকারের অনুমোদনসাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট দূতাবাস বা হাইকমিশন মনোনীত প্রতিনিধি;
(ঘ) তিনি যে কর্মক্ষেত্র বা ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বা সংশ্লিষ্ট ছিলেন, প্রয়োজনে উক্ত কর্মক্ষেত্র বা ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী বা সহকর্মী ইত্যাদি।
(২) উপধারা (১)-এ উল্লিখিত সাক্ষাতের জন্য নির্ধারিত তারিখ ও সময় কারাগারের নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার স্বার্থে কারা কর্তৃপক্ষ বাতিল, স্থগিত বা পরিবর্তন করিতে পারিবে।
(৩) বন্দি কারাগারের শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার পরিপন্থি নয় এবং সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ না হয়—এমন বিষয় বিবেচনায় রেখে কারা কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, উপধারা (১)-এ বর্ণিত ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে যোগাযোগ করিতে পারিবে।
কারাগারে শৃঙ্খলা ভঙ্গের ক্ষেত্রে কারাবিধি অনুযায়ী অপরাধের গুরুত্ব অনুসারে বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এর মধ্যে রয়েছে সাধারণ সুযোগ-সুবিধা হ্রাস (যেমন—ডিভিশন বাতিল বা কমানো), একাকী কারাবাস, অতিরিক্ত কাজ করানো কিংবা খাদ্য ও পোশাকের মানে পরিবর্তন। এসব ব্যবস্থার মূল উদ্দেশ্য হলো বন্দিদের নিয়মানুবর্তিতা নিশ্চিত করা এবং কারাগারের নিরাপত্তা বজায় রাখা, যা জেল কোড ও বাংলাদেশ কারা ও সংশোধন পরিসেবা আইন, ২০২৩ (খসড়া) দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।