আন্দোলনে থাকা প্রাথমিকের শিক্ষকদের বদলি, ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত
- আপডেট সময় : ০৯:১৭:১৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৫
- / 49
তিন দফা দাবিতে চলমান আন্দোলনের মধ্যেই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বহু সহকারী শিক্ষককে ‘প্রশাসনিক কারণ’ দেখিয়ে ভিন্ন জেলায় বদলি করা হয়েছে। আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা পাঁচজনসহ মোট ৪২ জনকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ আদেশে পাশের জেলাগুলোতে পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) রাতে মন্ত্রণালয় জারি করা আদেশে এসব বদলির অনুমোদন দেওয়া হয়।
বদলির তালিকায় আন্দোলনের পাঁচ শীর্ষ নেতার নাম রয়েছে। তারা হলেন— প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক খায়রুন নাহার লিপি; বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও নোয়াখালী সদরের কৃপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. শামছুদ্দীন মাসুদ; বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার চানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. আবুল কাশেম; প্রাথমিক শিক্ষক দশম গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদের সমন্বয়ক এবং জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবর রহমান এবং কিশোরগঞ্জের মিঠামইনের ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মনিরুজ্জামান।
এদিকে দেশের ৬৫ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে দুই শিক্ষক সংগঠন। বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ এবং বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদ যৌথ প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, শিক্ষার্থীদের স্বার্থ ও মানবিক বিবেচনায় আগামী রবিবার (৭ ডিসেম্বর) থেকে পরীক্ষা চলাকালে সারাদেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তালাবদ্ধ কর্মসূচি স্থগিত থাকবে এবং বার্ষিক পরীক্ষা স্বাভাবিকভাবে অনুষ্ঠিত হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, সহকারী শিক্ষকদের ন্যায্য তিন দফা দাবি আদায়ের অংশ হিসেবে চলমান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। তবে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি এড়াতে পরীক্ষা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করার জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পরবর্তী কর্মসূচি আলোচনা করে পরে ঘোষণা করা হবে বলেও জানানো হয়।
এর আগে প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের অন্যতম আহ্বায়ক মো. মাহবুবর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, “আমরা আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, সকালে বৈঠক হলে তাৎক্ষণিকভাবে পরীক্ষার আয়োজন করব। কিন্তু বৈঠক না হওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। এরপরও আমরা রোববার থেকে পরীক্ষা নেব। এসব শিক্ষার্থীরা আমাদের সন্তান। তাদের ক্ষতি আমরা চাই না। দুই দিন পিছিয়ে গেছে, কিন্তু এতে শিক্ষাজীবন অচল হবে না।”
অভিভাবকদের প্রতিক্রিয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষকরা অভিভাবকদের চাপে পড়েছেন। কেউ কেউ উত্তেজিত হয়েছেন। কিন্তু বছরের পড়াশোনা শেষ। পরীক্ষা দুই দিন পর হলে বড় সমস্যা হওয়ার কথা নয়। আন্দোলনের অন্যান্য কর্মসূচি চলবে, তবে পরীক্ষা এর আওতামুক্ত থাকবে।”
প্রসঙ্গত, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবির আন্দোলন চলমান অবস্থায় মোট ৪২ শিক্ষকে ভিন্ন জেলায় বদলি করা হয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ৪ ডিসেম্বরের আদেশে এসব বদলির অনুমোদন দেওয়া হয়। তালিকায় আন্দোলনের পাঁচ শীর্ষ নেতা খায়রুন নাহার লিপি, মো. শামছুদ্দীন মাসুদ, মো. আবুল কাশেম, মো. মাহবুবর রহমান এবং মো. মনিরুজ্জামানও রয়েছেন।















