শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
https://blu-ray.world/ download movies
Sex Cams
সর্বশেষ সংবাদ
টাওয়ার হ্যামলেটসের বো এলাকায় নতুন কাউন্সিল ভবনের উদ্বোধন করেছেন নির্বাহী মেয়র লুৎফুর  » «   বাংলাদেশে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকের প্রাণহানি এবং সৃষ্ট অস্থিরতা-সহিংসতায় লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের ক্ষোভ-নিন্দা  » «   সৃজনের আলোয় মুস্তাফিজ শফি, লন্ডনে বর্ণাঢ্য সংবর্ধনা  » «   বৃটেনে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তাহমিনার অসাধারণ সাফল্য  » «   দুই বঙ্গকন্যা ব্রিটিশ মন্ত্রীসভায় স্থান পাওয়ায় বঙ্গবন্ধু লেখক এবং সাংবাদিক ফোরামের আনন্দ সভা ও মিষ্টি বিতরণ  » «   কেয়ার হোমের লাইসেন্স বাতিলের বিরুদ্ধে আইনী লড়াইয়ে ল’ম্যাটিক সলিসিটর্সের সাফল্য  » «   যুক্তরাজ্যে আবারও চার ব্রিটিশ-বাংলাদেশী  পার্লামেন্টে  » «   আমি লুলা গাঙ্গ : আমার আর্তনাদ কেউ  কী শুনবেন?  » «   বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদে লন্ডনে ইউনিভার্সেল ভয়েস ফর হিউম্যান রাইটসের সেমিনার অনুষ্ঠিত  » «   লন্ডনে বাংলা কবিতা উৎসব ৭ জুলাই  » «   হ্যাকনি সাউথ ও শর্ডিচ আসনে এমপি প্রার্থী শাহেদ হোসাইন  » «   ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই ইন দ্য ইউকে’র সাথে ঢাবি ভিসি প্রফেসর ড. এএসএম মাকসুদ কামালের মতবিনিময়  » «   মানুষের মৃত্যূ -পূর্ববর্তী শেষ দিনগুলোর প্রস্তুতি যেমন হওয়া উচিত  » «   ব্যারিস্টার সায়েফ উদ্দিন খালেদ টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের নতুন স্পীকার নির্বাচিত  » «   কানাডায় সিলেটের  কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলমকে সংবর্ধনা ও আশার আলো  » «  
সাবস্ক্রাইব করুন
পেইজে লাইক দিন

আমেরিকা কেন সবার আমেরিকা !



সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

একটি জোকস দিয়ে শুরু করি-

এক অফিসে জয়েন করেছেন একজন নতুন কর্মচারী। তিনি অফিসের নিয়ম কানুন সম্বন্ধে তখনও পূর্ণ ভাবে ওয়াকিবহাল নন।ক্যাফেটেরিয়াতে বসে হঠাৎ সামনে একটি ইন্টার কম ফোন দেখে ডায়াল করে দিলেন।

ওপাশ থেকে হ্যালো ! কি চাই ?

প্রশ্ন শুনে জবাব দিলেন আমাকে এক কাপ কফি এবং একটি স্যান্ডউইচ দেন তো।

ভদ্রলোক হয়তো মনে করেছিলেন- এখানে ফোনে অর্ডার করলে খাবার চলে আসে কিন্তু অপর প্রান্ত থেকে গম্ভীর স্বরে যখন উত্তর এলো- আপনি জানেন,আপনি কাকে ফোন করেছেন ? তখন ভদ্রলোক হকচকিয়ে উত্তর দিলেন – জ্বি না !

আপনি কে ? ওপাশ থেকে উত্তর এলো -আমি এই অফিসের বস !।

আপনার তো সাহস কম নয় আপনি আমাকে ফোন দিয়ে কফি চাচ্ছেন ?

আপনি কবে জয়েন করেছেন ?

এবার ভদ্রলোক উত্তর দিলেন-  ও স্যরি স্যার।

তা আপনি কি বুঝতে পেরেছেন আমি কে ?

উত্তরে অফিসের বস হুংকার দিয়ে বললেন- বুঝলে কি আর তুমি ফোনের উপর প্রান্তে এখনো জীবিত থাকতে!

এবার ভদ্রলোক ফোন রেখে দিয়ে বললেন- যাক বাবা, বাঁচা গেল, আমাকে তো চিনতে পারেনি।

এই জোকসের মর্ম হচ্ছে আমাদের দেশে কিংবা আমাদের আশেপাশে যারা আমেরিকাকে নিয়ে তাচ্ছিল্য করছেন তাদের সুবিধা হচ্ছে, আমেরিকা আসলে তাদের চিনেনা ; চেনার দরকারও নেই ।

এই সুযোগে অনেকেই আমেরিকাকে বুঝে না বুঝে একটু ভাব নিয়ে জ্ঞান গম্ভীর আলোচনা করে বুঝাতে চাচ্ছেন- হ্যাডম কেমন !

এদের জন্য শেখ সাদীর সেই উক্তিটিই যথার্থ- দরজা খুলে ঘুমানো সাহসের প্রতীক; একই সাথে নির্বুদ্ধিতারও।

 

বলা হয় পৃথিবীর মধ্যে আরেকটি পৃথিবী হলো আমেরিকা ।

আপনি স্বীকার করুন কিংবা নাই করুন বাস্তবতা হচ্ছে পৃথিবী আসলে দুই ভাগে বিভক্ত। একটি ভাগ হলো আমেরিকা অন্য ভাগ হলো বাকি পৃথিবী ।

একটি বহুল প্রচলিত প্রবাদ রয়েছে- আমেরিকা যার বন্ধু তার আর শত্রুর দরকার নেই।

এখানে মজার ব্যাপারটি হচ্ছে আমেরিকাকে যেভাবে এখানে গিল্টি বানানো হচ্ছে , বাস্তবে কিন্তু সবাই করছে তার ঠিক উল্টো।

যেমন আমেরিকার বন্ধু হবার জন্য বিশ্বের সকল দেশই উদ্গ্রীব হয়ে থাকে। আমেরিকার কৃপা নেওয়ার জন্য বিশ্বের অধিকাংশ দেশ লোলুপ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে।

প্রশ্ন জাগতে পারে- আমেরিকা যার বন্ধু তার আর শত্রুর প্রয়োজন নেই এ কথাটির মর্মার্থ তাহলে কী হবে ?

উত্তর হচ্ছে  আপনি যখন আমেরিকার বন্ধু হয়ে যাবেন তখন পৃথিবীর আর কেউ আপনার শত্রু হয়ে বেঁচে থাকার জন্য আসলে বেচেঁ নেই।

উদাহরণ হিসাবে অনেকেই উত্তর কোরিয়া -চীন কিংবা রাশিয়ার কথা বলতে পারেন এবং ব্যাপারখানা সত্য। পৃথিবীর যে দুই বা তিন ভাগে বিভক্ত এর মূল কারণ এখানেই।

এটাকে আপনি পৃথিবীর ভারসাম্যও বলতে পারেন। কারণ ক্ষমতার যে বিচরণ, ক্ষমতার যে প্রতাপ,  সেখানে কোন না কোনভাবেই ক্ষমতার একটি পারিপার্শ্বিক দ্বন্দ্ব থাকবেই কিন্তু শেষ পর্যন্ত পৃথিবীর ভালো কিংবা মন্দ যে কোন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে আমেরিকা-ই সর্বশেষ কথা।

কারণ আমেরিকার সাথে ইউরোপ- ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বাকি বিশ্বের গরীবরা এমনিতেই এসে দাঁড়িয়ে যায়।

অন্যতম কারণ  -আমেরিকা হলো এই বিশ্বের সেই রবিনহুড চরিত্রের রাষ্ট্রীয় রূপ ; যে নিজে লুটপাট করবে কিন্তু বিলিয়ে দিবে গরিবদের কারণ তার সময়ে- অসময়ে এই রাষ্ট্রীয় ভোট কিংবা ভ্যাটো পাওয়ার সবকিছুই দরকার এবং ছলে, বলে, কৌশলে কিংবা যে কোনো পন্থায় আমেরিকা সেটি করবেই করে।

এই যে আমেরিকার একটি ভিসা নীতি নিয়ে সারা দেশব্যাপী সোশ্যাল মিডিয়াতে যেভাবে বলা হচ্ছে- আমেরিকাতে যায় কয়জন ! তাদের উত্তরে বলি- সাবিনা ইয়াসমিনের সেই বাংলাদেশ গানের সাথে সোনালী ধানের মাঝে বাচ্চাদের বাংলাদেশের পতাকা হাতে দৌড়ানোর যে ছবি, সেই ছবির সব বাচ্চাদের হাতে আমেরিকার ভিসা দিয়ে দিলে কেউ আর দেশে থাকবে না; অনুরূপভাবে আমেরিকা কাউকে যখন  ভিসা রেস্ট্রিকশন দেয় তখন ইউরোপে তার মিত্ররাও একই পথে হাটে।

তারপরও কতজন আমেরিকা- ইউরোপ যায়?

এজন্য পরিসংখ্যানবিদ হওয়ার দরকার নেই। বাংলাদেশের যারা এলিটিজম কিংবা আমলা সহ সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারী প্রশাসনের লোক এবং রাজনৈতিক এমপি- মন্ত্রী- এদের উপর একটি পরিসংখ্যান চালিয়ে দেখুন, এদের ফ্যামিলির বউ বাচ্চা সহ অনেকেই ইউরোপ- আমেরিকা সেটেল্ড এবং অনেকের বাচ্চারা বিদেশে লেখাপড়া করে ।

এখন আমেরিকান ভিসার দরকার সবার কিন্তু প্রাপ্তির তালিকায় উপরে উল্লেখিত গুণীজনরাই সর্বাগ্রে। এবার তারাই যদি ভিসা না পান তাহলে আমেরিকা- ইউরোপ বাঁচবে কী করে- সেটি একটি বড় প্রশ্ন হতে পারে ।

আরেকটি মজার ব্যাপার হলো- এই যে কানাডাতে বেগম পাড়া, আমেরিকাতে অনেকের বাড়ি -গাড়ি; পাচারের তালিকায় মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম কিংবা ইদানিং ইংল্যান্ডে যে পরিমাণ  টাকা পাচার হয়েছে- সেগুলি ওই ১৬ কোটি জনগণ করেনি। এগুলি করেছে দেশ নির্বাচনে ক্ষমতা দেখানোর মতো লোকেরাই। এই শ্রেণীই দেশটাকে লুটেপুটে খাচ্ছে, ক্ষমতার আশেপাশে তারাই থাকে ;এখন সেই ক্ষমতার আশেপাশে থাকাই যদি তাদের জন্য কাল হয়ে ওঠে তাহলে সেখানেই মূল সমস্যার এবং সমাধানের সূত্র রয়েছে।

কারো কারো মতে, বুথে গুন্ডামি কিংবা সন্ত্রাসী এগুলি তো স্থানীয় রাজনীতিবিদরাই করে ।

কথা সত্য তবে বাস্তবতা হচ্ছে পুলিশী কিংবা সেনা টহল হলে সেই গুন্ডামি বন্ধ হয়ে যায় কেন ?

কারণও সবার জানা আছে,  প্রশাসন যদি ঠিক হয়ে যায় বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে কখনোই কোন গুন্ডাই গুন্ডামি করতে পারেনি। আমেরিকার স্যাংশন মূলত বিসিএস ক্যাডার ,ব্যাংক কর্মকর্তা, স্কুল ও কলেজের টিচার সহ যে বা যারা নির্বাচনী কার্যক্রমে জড়িত থাকেন -তাদেরকে ঠিক করে দেওয়ার একটি সমন মাত্র। এবং বাস্তবতা হলো উনাদের সাথে প্রশাসন যদি একই সূত্রে চলে তাহলে বাংলাদেশের শুধু নির্বাচন না সবকিছুই ভালো হয়ে চলবে। এ কথা সত্য সবকিছু ঠিক করে দেয়- সেই স্থানের স্থানীয়রা ।

সেটা দেশ কিংবা যে কোন জায়গা হতে পারে । আমেরিকা যেমন আওয়ামীলীগ কিংবা বিএনপি কাউকেই জোর করে ক্ষমতায় বসাতে কিংবা সরাতে পারবে না। যেমনটি  সারা দেশে একচ্ছত্র ক্ষমতা প্রয়োগ করেও আওয়ামী লীগ তাদেরই বিদ্রোহী এক প্রার্থীকে হারাতে পারেনি ।

সবার ক্ষমতার দৌড় একটি সীমা পর্যন্ত থাকে, সেটা রাজনৈতিক হোক, ভৌগোলিক হোক কিংবা আঞ্চলিক হোক। হ্যাঁ আমেরিকা কিংবা রাশিয়া –চীন এবং ইদানিং ভারত যেটা করে সেটা হলো- সে ঐরকম একচ্ছত্র রাস্ট্র ক্ষমতার  পতনকে ত্বরান্বিত করার একটি সূত্র বের করে দেয়। এছাড়া বাহিরের শক্তির কিছু করার নেই।

এবার একটি রিয়েল লাইফ জোকস বলে বিদায় নিচ্ছি-

সিলেট হেড পোস্ট অফিসে চিঠি ছাড়তে গিয়ে দেখি লম্বা লাইন।লাইনে হুজুরদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করি- এখানে এত হুজুর কোথায় চিঠি ছাড়তে আসলেন। একজন বললেন,  ডিবি লটারি ছাড়তে এসেছি। আমি অবাক হয়ে একজন হুজুরকে বললাম, আপনারা সারাদিন মিছিল, মিটিং, সভা, সমাবেশ করেন আমেরিকার বিরুদ্ধে অথচ আমেরিকা যাওয়ার জন্য দীর্ঘ লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। কাহিনী কি ?

উত্তরে  হুজুর বললেন, আমরা আমেরিকাকে গালাগালি করি ঠিকই এবং এদের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থানও ঠিক।

আমি বললাম- তাহলে আমেরিকায় যাবেন কেন ?

উত্তরে তিনি বললেন আমরা আমেরিকায় গিয়ে আমেরিকানদের মারতে চাই ।

এই হলো আমেরিকা ।

ফুটবলের মেসি কিংবা রোনালদোর মতো আপনি তাদেরকে অপছন্দ করতে পারেন কিন্তু অস্বীকার কিংবা ইগনোর করার ক্ষমতা কারো নেই।

ফুজেল আহমদ:  রম্য লেখক।টরন্টো, কানাডা। ২৭মে ২০২৩

আরও পড়ুন-

দুই প্রেসিডেন্টের কথার লড়াই ও ক্রীড়াঙ্গণের থলের বিড়াল

 

 


সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

"এই বিভাগে প্রকাশিত মতামত ও লেখার দায় লেখকের একান্তই নিজস্ব " -সম্পাদক