ঈদ মানে আনন্দের জোয়ার। ঈদ মানে খুশির সঞ্চার। মুসলমানদের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব হচ্ছে ঈদ। সবাই স্বপ্ন দেখেন অন্ততপক্ষে ওই দিন পরিবার-পরিজন নিয়ে উৎসব করবেন। সকালে পরিবারের সদস্যদের সাথে নিয়ে ঈদের নামাজ পড়বেন। বাসায় এসে সবাই মিলে সেমাই, পিঠা, সন্দেশ খাবেন।
আল্লাহর পক্ষ থেকে ঈদ হচ্ছে বান্দার জন্য বিরাট এক আতিথেয়তা। দীর্ঘ এক মাসের রোজা মুসলমানদের ঘরে নিয়ে আসে ঈদ আনন্দ। এদিন নতুন জামাকাপড় পরিধান করা, ঈদের নামাজ পড়া এবং কোলাকুলি, সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি ও ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হন সবাই। ফলে এদিন সবার মাঝে প্রবাহিত হয় আনন্দের ফল্গুধারা।
দুঃখজনক হলেও সত্যি যে ব্রিটেনে অনেকেই ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও পরিবার নিয়ে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারেন না। কেননা ওই দিন তাদের কাজ করতে হয়। অন্যান্য ধর্মাবলম্বীর মানুষ কোম্পানি বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে ছুটি পেলেও বাংলাদেশি মালিকানাধীন রেস্টুরেন্ট-টেকওয়েতে যারা কাজ করেন, তাদের জন্য ঈদের কোনো ছুটি নেই। ভাবতে অবাক লাগে, ভিন্নধর্মী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকরা ঈদের দিন তাদের কর্মচারীদের ছুটি দিলেও বাংলাদেশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকদের কাছে তাদের কর্মচারীরা ছুটির আশা করতে পারেন না।
দীর্ঘদিন থেকে ৫২বাংলা টিভি ও সাপ্তাহিক পত্রিকা ঈদের দিন ‘যুক্তরাজ্যে ঈদের ছুটি চাই’ সামাজিক ক্যাম্পেইন করে আসছে। গত বছর (২০২২ সাল) এই ক্যাম্পেইনের অন্যতম উদ্যোক্তা সরওয়ার হোসেন এবং কবি ও সাংবাদিক আনোয়ারুল ইসলাম অভি ভাইকে নিয়ে এলভি২৪ টিভিতে একটি অনুষ্ঠান করেছিলাম। ঈদের দিন কেন ছুটির প্রয়োজন, সে ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করা হয় অনুষ্ঠানে। অনেকে বলেছিলেন, মানবতার খাতিরে হলেও অন্ততপক্ষে ৩৬৫ দিনের মধ্যে ২ দিন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখলে খুব একটা ক্ষতি হওয়ার কথা নয়। এর জন্য প্রয়োজন সবার সমন্বিত উদ্যোগ।
পুরো মাস রোজা রেখে ঈদের নামাজ না পড়তে পারাটা অনেক কষ্টের। ঈদের দিন কাজ করলে মনে খুব অভিমান তৈরি হয়। শুধু যিনি কাজ করেন তিনিই নন, পুরো পরিবারই ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয়।
ইসলাম ধর্মাবলম্বী বাঙালির বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব হচ্ছে ঈদ। তাই ঈদের সর্বজনীন উৎসব যেন সবাই উপভোগ করতে পারি, সে জন্য যুক্তরাজ্যে ঈদের ছুটি ক্যাম্পেইনে সবার অংশগ্রহণ খুবই জরুরি। আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি ৫২বাংলা টিভি ও সাপ্তাহিক পত্রিকা পরিবারকে, যাঁরা এ রকম একটি উদ্যোগ সামনে নিয়ে এসেছেন।
আনোয়ার শাহজাহান: সম্পাদক, আমাদের প্রতিদিন ও সিইও , জালালাবাদ টিভি ও সংগঠক