মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
https://blu-ray.world/ download movies
Sex Cams
সর্বশেষ সংবাদ
যুদ্ধ বিধ্বস্ত গাজাবাসীদের সাহায্যার্থে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই ইন দ্য ইউকের অনুদান  » «   বড়লেখায় পাহাড়ি রাস্তা সম্প্রসারণে বেরিয়ে এলো শিলাখণ্ড  » «   মাইল এন্ড পার্কে ট্রিস ফর সিটিস এর কমিউনিটি বৃক্ষরোপণ  » «   রয়েল টাইগার্স স্পোর্টস ক্লাবের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন সম্পন্ন  » «   গোলাপগঞ্জ স্যোশাল এন্ড কালচারাল ট্রাস্ট ইউকে’র সাধারণ সভা ও নির্বাচন সম্পন্ন  » «   যুক্তরাজ্যবাসি  সাংবা‌দিক সাইদুল ইসলামের পিতা আব্দুল ওয়াহিদের ইন্তেকাল  » «   ইউকে বাংলা রিপোটার্স ইউনিটি‘র নতুন কার্যকরী কমিটির অভিষেক  » «   রোটারিয়ান মোহাম্মদ খতিবুর রহমান বার্লিন যাচ্ছেন  » «   টাওয়ার হ্যামলেটসের নতুন বাজেটে হাউজিং, শিক্ষা, অপরাধ দমন, তরুণ, বয়স্ক ও মহিলাদের জন্য বিশেষ কর্মসূচিতে বিপুল বিনিয়োগ প্রস্তাব  » «   আজীবন সম্মাননা পেলেন সৈয়দ আফসার উদ্দিন এমবিই  » «   লন্ডন বাংলা স্কুলের আয়োজনে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত  » «   লন্ডনবাসী প্রবীণ মুরব্বী জমির উদ্দিন( টেনাই মিয়া)র ইন্তেকাল  » «   কবি সংগঠক ফারুক আহমেদ রনির পিতা মুমিন উদ্দীনের ইন্তেকাল  » «   একসেস ট্যু জাস্টিস নিশ্চিত করা আইনের শাসনের প্রধান স্তম্ভ  » «   বৃহত্তর সিলেট এডুকেশন ট্রাস্টের নির্বাহী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত  » «  
সাবস্ক্রাইব করুন
পেইজে লাইক দিন

টি আলী স্যারকে নিয়ে লেখা আব্দুল গাফফার চৌধুরী’র গানে সুর দিলেন মকসুদ জামিল মিন্টু



সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

‘শিক্ষাব্রতী মহান পুরুষ/মানুষ গড়ার কারিগর/অজ্ঞানতার তিমিরে তুমি যে ছিলে এক বাতিঘর/জ্ঞানের মশাল করেছো বহন সারাজীবন/তোমার আলোয় আলোকিত আজ হাজার জন’…।

সিলেট জেলার বিয়ানীবাজারের কৃতি সন্তান একজন মানুষ গড়ার কারিগর হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শ্রদ্ধেয় শিক্ষক টি আলী স্যারের কর্মময় জীবন নিয়ে এই গানটি লিখেছেন প্রথিতযশা সাংবাদিক-কলামিষ্ট এবং মহান একুশে ফেব্রুয়ারি নিয়ে অমর সৃষ্টি ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি…’ গানের রচয়িতা আব্দুল গাফফার চৌধুরী।

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কারপ্রাপ্ত সংগীত পরিচালক- ‘ও আমার উড়াল পংকিরে, একটা ছিল সোনার কন্যা ‘ চাঁদনী পশরে কে আমারে স্মরন করে’ সহ অসংখ্য জনপ্রিয় গানের সুরকার মকসুদ জামিল মিন্টুর সংগীতায়োজনে গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন বিখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী রফিকুল আলম। একই সাথে গানটির সার্বিক তত্ত্বাবধানে থাকা টি আলী স্যারের আরেক শিক্ষার্থী নাট্যব্যক্তিত্ব ঝুনা চৌধুরীর নির্দেশনায় মহান শিক্ষক টি আলীর কর্মস্মৃতিবিজড়িত হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে গানটির দৃশ্য ধারণের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

 

আগামী ২৮ জানুয়ারি গানটির দৃশ্যধারণে এই মহান শিক্ষকের সকল সাবেক শিক্ষার্থী, গুণগ্রাহি ও বিশিষ্টজনসহ হবিগঞ্জের সর্বস্তরের মানুষ উপস্থিত থাকবেন বলে আশা করেছেন আয়োজকরা। এরই মধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। বিখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী রফিকুল আলম শুটিং স্পটে উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও অসুস্থতার কারণে আসবেন না।

জানা যায়, বৃহত্তর সিলেটের বিয়ানীবাজারের শ্রদ্ধেয় টি আলী স্যারকে নিয়ে শিক্ষার্থী ও গুণগ্রাহীদের উদ্যোগে ২০০৪ সালে প্রকাশিত প্রথম স্মারকগ্রন্থটি এক সময় পৌঁছায় কিংবদন্তি লেখক ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো…’ আব্দুল গাফফার চৌধুরীর হাতে। এক গুণি মানুষ আরেকজন গুণি মানুষের জীবনীটি নিবিড়ভাবে পাঠ করেন। হবিগঞ্জে টি আলী স্যারের ছাত্রদের উদ্যোগে স্মারক গ্রন্থ প্রকাশ হওয়ায় তিনি মুগ্ধ হন। তিনি বলেন, হবিগঞ্জের মানুষ যে সম্মান দিয়েছেন। তারা একটা ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। এ ধরনের কাজ দেখে অনেকে শিক্ষকদের নিয়ে লিখবেন। দেশে-বিদেশে সুপ্রতিষ্ঠিত শিক্ষকদের অসংখ্য প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। এসব প্রতিষ্ঠিত নাগরিক নিজেদের অবস্থান থেকে পরিবার, সমাজ এবং রাষ্ট্রীয় উন্নয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। মা-বাবাকে নিয়ে গান লিখা হচ্ছে। অথচ শিক্ষকদের নিয়ে লিখা হচ্ছে না। তিনি বলেন, যেহেতু সুবীর নন্দী টি, আলী স্যারের সরাসরি ছাত্র সুবীর গানটি গাইলে তিনি শিক্ষককে নিয়ে একটি গান লিখবেন। শিক্ষকের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের গানটি নিয়ে সুবীর নন্দীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি আপ্লুত হন প্রিয় শিক্ষককে নিয়ে গান গাইবার সুযোগ পেয়ে। ২০১২ সালে লিখা গানটির সুর করেছিলেন মীর লিয়াকত আলী। কিন্তু আকস্মিক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হওয়ায় সকলের প্রিয় শিল্পী সুবীর নন্দীর আর গানটি গাওয়া হয়নি।

উল্লেখ্য, টি আলী স্যার ১৯১৩ সালে সিলেট জেলার বিয়ানীবাজার উপজেলার জলঢুপ গ্রামের এক সম্ভান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করলেও একজন মানুষ গড়ার কারিগর হিসাবে ১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত টানা ৩১ বছর সিলেটের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীট হবিগঞ্জ সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন। পাশাপাশি হোস্টেল সুপারেরও দায়িত্ব পালন করেছেন। ভারত-পাকিস্তান হয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম হলেও তিনি এ প্রতিষ্ঠান থেকে অবসরে যান ১৯৭৮ সালে।
আদর্শ জীবনযাপন ও শিক্ষার্থীদের প্রতি মমত্ববোধের কারনে সাবেক শিক্ষার্থী ও হবিগঞ্জবাসীর কাছে ছিলেন তিনি অনুকরনীয়। ২০১৯ সালে তার ছাত্র ও শুভানুধ্যায়ীরা হবিগঞ্জ সরকারী স্কুলের সামনের রাস্তার নামকরন করেছেন ‘টি,আলী স্যার সড়ক’। হবিগঞ্জ সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের দক্ষিন পার্শ্বে অবস্থিত ক্রসরোড এখন থেকে পরিচিত হয় টি আলী স্যার সড়ক হিসেবে। ২০১৯ সালে তিনকোনা পুকুরপার এলাকায় হবিগঞ্জ-৩ আসনের এমপি এড. আবু জাহির সড়কের নামক ফলক উন্মোচন করেন।
এই গুণী শিক্ষক ২০০০ সালে মৃত্যুর পর স্যারের গুণগ্রাহী তাঁর ছাত্রদের উদ্যোগে ২০০৪ সালে প্রথম ও ২০১৯ সালে দ্বিতীয় স্মারক গ্রন্থ প্রকাশ হয়।
টি আলী স্যার এর সন্তানদের উদ্যোগে বিয়ানীবাজার উপজেলার ঐতিহ্যবাহি জলঢুপ উচ্চ বিদ্যালয়ে “টি আলী মেমোরিয়াল লাইব্রেরি” প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

গুণী এই শিক্ষক হবিগঞ্জে থাকা অবস্থায় গ্রামের বাড়িতে চিকিৎসার অভাবে ৪ ছেলে ও ২ মেয়ে মারা যান। একে একে ৩ থেকে ৬ মাস বয়সি ৪ ছেলে ও দুই মেয়েকে হারান তিনি। সন্তানের মৃত্যুর সময় স্ত্রীর পাশে সান্ত¡না হয়েও দাঁড়াতে পারেননি। জীবন ও তারুণ্যের গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলো ব্যয় করেছেন শিক্ষাদান করেই। তাদের জানাযায় পর্যন্ত তিনি অংশ নিতে পারেননি এই শিক্ষক।

শিক্ষকদের কল্যাণে ২০১৭ সালে যুক্তরাজ্যে তার নামানুসারে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে- টি আলী স্যার ফাউন্ডেশন। ফাউন্ডেশনটি প্রতিবছর ‘টি আলী স্যার ফাউন্ডেশন সম্মাননা পদক’ প্রদান করছে। ২০২২ সালে সিলেট জেলার ২৪ জন অবসরপ্রাপ্ত আদর্শ শিক্ষককে টি আলী স্যার ফাউন্ডেশন সম্মাননা আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মাননা প্রদান করেছে । আগামী ৩০ এপ্রিল হবিগঞ্জ জেলার ১৮ জন অবসরপ্রাপ্ত আদর্শ শিক্ষককে সম্মাননা প্রদান করবে এ সংস্থা।


সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন