আলোকিত মানুষ গড়ার কারিগর প্রবীন শিক্ষক মো. সমছুল ইসলাম (১৯৩৪-২০১৬) এর ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী ১১ নভেম্বর শুক্রবার বিভিন্ন মানবিক কাজের মাধ্যমে আত্নার মাগফিরাতের জন্য দোয়া ও স্বরণ করা হয়েছে। বিয়ানীবাজার এর প্রবীন এই শিক্ষাবিদ দীর্ঘ ৩১বছর সিলেট জেলার বিভিন্ন স্কুলে সুনামে শিক্ষকতা করেন। শিক্ষকতা জীবনে সততা ও নিষ্ঠায় তিনি ছিলেন অত্যন্ত কঠোর এবং নীতির ক্ষেত্রে আপোষহীন।
১৯৬০ সালে সহকারী শিক্ষক হিসাবে শাহবাজপুর মডেল প্রাইমারী বিদ্যালয় থেকে বর্ণাঢ্য শিক্ষকতা শুরু। ১৯৯১ সালের ১৯আগষ্ট অবসর পূর্ব পর্যন্ত র্দীর্ঘ ২১ বছর তার গ্রামের -জলঢুপ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসাবে শিক্ষকতা করেছেন শুনী এই শিক্ষক।
শিক্ষকতা জীবনে দীর্ঘ সময় তার কর্মস্থল- ফেঞ্চুগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার দুই উপজেলায় ইউনিয়ন শিক্ষক সম্পাদক হিসাবে সুনামে দায়িত্বশীল কাজ করেছেন।
একজন প্রবীন শিক্ষক হিসাবে এদতঅঞ্চলে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সামাজিক সংগঠন ও শিক্ষানুরাগী কর্মকান্ডে তার উজ্জল ভূমিকা রয়েছে।
মাষ্টার মো. সমছুল ইসলাম এর বাবা মরহুম মুফিজ আলী সরপঞ্চ ও মা মরহুমা সিতারা বিবি। পাঁচভাই ও দুই-বোনের মাঝে তিনি ষষ্ঠ। তার বাড়ী লাউতা ইউনিয়নের জলঢুপ বড়বাড়ী।
তার সুযোগ্য ছয় সন্তানদের হাত ধরে প্রতিষ্ঠিত অন্ধকারে আলো শ্লোগাণে- সমছুল-করিমা ফাউন্ডেশন ২০০৪ সাল থেকে শিক্ষা ও শিক্ষক সম্পর্কিত সমাজবান্ধ ও মানবিক কাজে বিয়ানীবাজার উপজেলায় ধারাবাহিকভাবে সুনামের সাথে কাজ করছে।
৬ষ্ঠ মৃত্যবার্ষিকীতে সমছুল-করিমা ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে নেয়া হয় বিভিন্ন মানবিক উদ্যোগ- নিজবাড়ী, জলঢুপ বড়বাড়িতে কোরানখানি ,দোয়া ও তার সহকর্মী-স্বজনদের আপ্যায়ন। সমছুল-করিমা ফাউন্ডেশনের ধারাবাহিক প্রকল্প- ‘সবুজে হাসি সবুজে বাঁচি’ প্রকল্প এর অংশ হিসাবে বিয়ানীবাজার উপজেলার ১০নং মুড়িয়া ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী অঞ্চল নওয়াগ্রাম প্রগতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ফুল, ফল ও ঔষধি গাছের সমন্বিত বাগান করে দেয়া হয়েছে।
নওয়াগ্রাম প্রগতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: আলতাফ হোসেন দলুর সভাপতিত্বে স্কুলের সহকারী শিক্ষিকা জাকিয়া সুলতানার সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান ছিলেন পরগনাই দৌলতপুর সিনিয়র আলিম মাদ্রাসার অবসরপ্রাপ্ত আরবী প্রভাষক মাওলানা আব্দুল মতিন।
বিশেষ অতিথি ছিলেন সারপার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইসলাম উদ্দিন, তাজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: নুরুজ্জামান হাসনু । অনুষ্ঠানটির সার্বিক তত্বাবধানে ছিলেন, সবুজে হাসি সবুজে বাঁচি- প্রজেক্টের কো-অর্ডিনেটর সাংবাদিক মো: ইবাদুর রহমান জাকির।
প্রবীন অসহায়দের জন্য ফাউন্ডেশনের ধারাবাহিক প্রজেক্ট –‘মানবিক স্বজন’ র মাধ্যমে অর্ধশতাধিক অসহায় ও দুস্থদের মধ্যে খাবার পরিবেশন করা হয়েছে। প্রজেক্টটির সার্বিক তত্বাবধানে ছিলেন- কো-অর্ডিনেটর মো: নূর উদ্দিন।
এছাড়াও ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে কয়েকজন রোগীকে তাদের ডাক্তারি চিকিৎসাপত্র অনুসারে ঔষধ কিনে দেয়া হয়। এবং কয়েকটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিশুদ্ধ পানীয় জলের জন্য পানির ফিন্টার প্রদান করা হয়।
প্রসঙ্গত অন্ধকারে আলো শ্লোগাণ নিয়ে ২০০৪ সাল থেকে সমছুল-করিমা ফাউন্ডেশন বিভিন্ন মানবিক , শিক্ষা- শিক্ষক সম্পর্কিত এবং সমাজসেবামূলক ধারাবাহিক নিজস্ব প্রকল্পের মাধ্যমে কাজ করছে। ‘মানবিক স্বজন’ এর আওতায় নিভৃতে বঞ্চিত ও দুস্থ মানুষের ঘরে খাবার সামগ্রী বিতরণ। ‘সবুজে হাসি সবুজে বাঁচি’ প্রকল্পের মাধ্যমে অস্বচ্ছল ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফুল, ফল ও ঔষধি বৃক্ষ রোপন, মৌলিক ও সৃজনশীল প্রকল্প- ’সৃষ্টি ঘর’ এর আওতায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চিত্রাঙ্কন ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা এবং প্রতিশ্রুতিশীল লেখকদের বই প্রকাশ, পবিত্র রমজান মাসে নিন্মবিত্ত পরিবারের জন্য ‘হাসি মুখে ইফতার’, প্রবীন অসহায়দের জন্য –‘প্রশান্তির হাসি’, কৃষক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য ‘আমার স্বপ্ন’ প্রকল্পের মাধ্যমে তৃণমূলে কাজ করে আসছে ।