সুনামগঞ্জের ছাতকে টানা দু’দিনের ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে বন্যা প্লাবিত হয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। সুরমা, চেলা, পিয়াইনসহ উপজেলার সকল নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বন্যার পানি হাওর ও খাল-বিলে থৈ থৈ করছে। টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে অব্যাহত পানি বৃদ্ধির ফলে প্রবল বন্যার আশংকা করছেন স্থানীয়রা। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র অনুযায়ী ছাতক পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ১৫০সে.মি. এবং চেলা ও পিয়াইন নদীর পানি বিপদসীমার ১৬৫সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জানা যায়, দু’দিনের ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সুরমা নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে পৌরসভাসহ উপজেলার ইসলামপুর, কালারুকা, নোয়ারাই, উত্তর খুরমা, চরমহল্লা, ভাতগাঁও, দোলারবাজার, জাউয়া, দক্ষিণ খুরমা, সিংচাপইড়, ছৈলা-আফজালাবাদ ও গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ও হাটবাজার বন্যা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। গ্রামীণ বিভিন্ন সড়ক বন্যা প্লাবিত হওয়ায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে ছাতক-সিলেট সড়কের একটি অংশ। বন্যায় ভেসে গেছে শতাধিক মৎস্য খামারের মাছ। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শাকসবজির বাগান।ইসলামপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আবদুল হেকিম জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে ইউনিয়নের প্রায় সবক’টি গ্রাম বন্যা প্লাবিত হওয়ায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ। উত্তর খুরমা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিল্লাল আহমদ জানিয়েছেন, ইউনিয়নের বড় বিহাই, গদারমহল, চলিতারবাগ, এলঙ্গি, রসুলপুর, রাজারগাঁও গ্রামের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।
এদিকে, শনিবার দুপুরে হঠাৎ করে বয়ে যাওয়া ঘূর্নিঝড়ে উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও, দক্ষিণ খুরমা, সিংচাপইড় ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও ইউনিয়নের সৈদেরগাঁও গ্রামের আবাছ আলী, মকতুজ আলী, সেবুল মিয়া, সাধু মিয়া, মনির উদ্দিনসহ ফুরকানচক, শ্রীপুর গ্রামের প্রায় ২৫টি বসতঘর ধসে পড়েছে।
ভেঙ্গে পড়েছে মসজিদের মিনার, মাইক ও হুজরা খানা। এসময় সৈদেরগাঁও গ্রামের মকতুজ আলী, সাবিয়া বেগম ও ইব্রাহিম নামের এক শিশু আহত হয়েছে। বড় আকারের কয়েকটি গাছ উপড়ে রাস্তায় পড়ে গেলে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে প্রায় একঘন্টা সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়ে। হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের লোকজন গাছ কেটে রাস্তা থেকে সরিয়ে এখানে সড়ক যোগাযোগ সচল করেছে। ঘুর্ণিঝড়ে দক্ষিন খুরমা ইউনিয়নের ভুইগাঁও, মুর্ঝাইপাড়া, দরারপাড়, কুম্বায়ন, সেনপুর, বড় মায়ের কোল গ্রামের অসংখ্য বাড়ি ঘরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঘুর্ণিঝড়ে সময় ধারণ এলাকায় ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জগামী একটি যাত্রীবাহি বাস ছিটকে পড়ে গাছের সাথে অাটকে যায়। অল্পের জন্য বড় ধরণের দূর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায় বাসের যাত্রীরা।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ গোলাম কবির, এএসপি সার্কেল বিল্লাল হোসেন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাপস শীল, ওসি মোস্তফা কামাল, এসআই হাবিবুর রহমান পিপিএম, গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আখলাকুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বিকালে মুহিবুর রহমান মানিক এমপি, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আবু সাদাত লাহিন ঘূর্নিঝড় কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্থদের মধ্যে ত্রান বিতরণ করেন। গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আখলাকুর রহমান জানান, ঘূর্নিঝড়ে সৈদেরগাঁওসহ এলাকার ৪০টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ গোলাম কবির জানান, উপজেলা পরিষদ চত্বর, পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা এবং উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার ও রাস্তাঘাটে বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। নদ নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এখানে প্রবল বন্যার আশংকা করা হচ্ছে। তিনি সবাইকে সতর্ক থাকা এবং দূর্যোগ মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকার আহবান জা