বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
https://blu-ray.world/ download movies
সর্বশেষ সংবাদ
লন্ডন মুসলিম সেন্টারে দুই শতাধিক মানুষের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হলো ‘ফেইথ ইন এনভারনমেন্ট’ সামিট  » «   রোবটিক্স বিজ্ঞানী ড. হাসান শহীদের নেতৃত্বে কুইন মেরি ইউনভার্সিটি অব লন্ডনে বিশ্বের ক্ষুদ্রতম মাল্টিরোটর সোলার ড্রোন উদ্ভাবন  » «   লন্ডন এন্টারপ্রাইজ একাডেমির অফস্টেড রিপোর্টে ‘গুড’ গ্রেড অর্জন  » «   টাওয়ার হ্যামলেটস এডুকেশন অ্যাওয়ার্ডস : ১৮৫ জন শিক্ষার্থীকে সম্মাননা  » «   ব্যারিস্টার নাজির আহমদের “ইন্সপায়ার এ মিলিয়ন”নামে চ্যারিটি প্রতিষ্ঠার ঘোষণা  » «   সম্মিলিত সাহিত্য ও  সাংস্কৃতিক পরিষদের ২০২৫-২৬ পরিচালনা পর্ষদ গঠন  » «   গ্রেটার ফতেহপুর ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট ইউকের সাধারণ সভা ও সম্মেলন অনুষ্ঠিত  » «   আওয়ামী লীগ ও জামায়াতের মিল আর গুজব রাজনীতি  » «   পাচারকৃত টাকা বাংলাদেশে ফেরত আনার ব্যাপারে যুক্তরাজ্য সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন ডা. শফিকুর রহমান  » «   প্যারিস-বাংলা প্রেসক্লাব ফ্রান্সের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন  » «   শেখ হাসিনা ও সাবেক মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মামলা  » «   ব্রিটিশ-বাংলাদেশী হুজহু’র ১৫তম প্রকাশনা ও এওয়ার্ড অনুষ্ঠান ১২ নভেম্বর  » «   বিসিএর ১৭তম এওয়ার্ড : উদযাপিত হলো বাংলাদেশী কারি শিল্পের সাফল্য  » «   কবি ফয়জুল ইসলাম ফয়েজনূরের প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘ভালোবাসার আগ্রাসন’র মোড়ক উন্মোচন  » «   লন্ডনে চট্টগ্রামবাসীর ঐতিহ্যবাহী মেজবানী ও মিলন মেলা  » «  
সাবস্ক্রাইব করুন
পেইজে লাইক দিন

মায়ের মৃত্যু দিবসে ছেলের আবেগঘন খোলা চিঠি



সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

আম্মা,
পঁচিশ বছর হয়ে গেছে তুমি আমাদের ছেড়ে চলে গেছ। আমরা দশ ভাইয়ের মাঝে আমি আর বড়ভাই তোমাকে কম পেয়েছি । সেই শৈশবেই ১৯৭৮ সালে সুনামগঞ্জে আসা আর ১৯৯৩ সালে পড়ালেখা শেষ করে আবার চট্টগ্রাম থেকে সুনামগঞ্জে ফিরে যাওয়া । এ সময়ে তোমাকে সামান্য সময়ের জন্য পেয়েছিলাম । পডালেখা শেষ করে যখন স্থায়ীভাবে সুনামগঞ্জ এলাম তখন তুমি চলে এলে সেখানে, আমাদের গ্রাম আনোয়াপুর থেকে। তখন আমাদের কারো কারো চাকুরী হতে শুরু করেছে। আমরা প্রাচুর্যের দেখা পেতে শুরু করলাম । তুমি আমাদের দশজনকে মানুষ করতে অতিমানবীয় কষ্ট করেছ। কিন্তু শ্রমের যে বীজ  তুমি বপন করেছিলে তার ফসল পূরোটা না দেখে তুমি চলে গেলে। কি এমন বয়স হয়েছিল তোমার মারা যাওয়ার সময় ? খুব বেশী হলে বায়ান্ন -তেপ্পান্ন । এখন বেঁচে থাকলে তোমার বয়স খুব বেশী হলে আশি হতো। আশি বছর বয়সে  অনেকের মায়েরাই বেঁচে আছেন তাদের আশা, আনন্দ আর আশির্বাদের বাতিঘর হয়ে ।আমরা দূর্ভাগা। তোমাকে পাইনি ।

আম্মা,
সন্তান যত বড় হোক না কেন কিছু কথা আছে শুধু মাকে বলা যায়- মাকে বললেই মনে শান্তি আসে । তোমাকে বলার সে কথাগুলো আমি আর কাকে বলব বল ? আমার ফলাফলের সেই ফার্স্ট ডিভিশন, সেকেন্ড ডিভিশন, ফার্স্ট ক্লাস কিংবা সেকেন্ড ক্লাসের ব্যবধানটা তুমি ঠিক না বুঝলেও আমার আনন্দ ফলাফলটা তোমাকে শুনানোর মাঝেই ছিল পরম শান্তি।

মনে পড়ছে মাস্টার্স পরীক্ষার ফলাফল জানিয়ে যখন বন্ধুরা দুষ্টুমি করে চিঠি লিখল আমি থার্ড ক্লাস পেয়েছি, তখন তোমার কাছে বসে কান্না শুরু করে দিলাম । তুমি পীঠে হাত বুলিয়ে বলেছিলে – আমার মনে হয় ভুল খবর এসেছে ।তুই সেকেন্ড ক্লাস পাবি । পেলামও তাই । কেন জানি মনে হতো তুমি বললেই আমার -আমাদের সব হয়ে যাবে । হয়েছেও তাই।

আম্মা,
নিজের জন্য তোমাকে কখনও কিছু চাইতে দেখিনি। আমার জুনিয়র বৃত্তির ১১৫০ টাকা তোমার হাতে তুলে যখন দিয়েছিলাম তখন ১১০০ টাকা দিয়ে ১১জন গরীব দুস্থ মহিলাকে ঈদে শাড়ি কিনে দিয়েছিলে -ব্যাপারটা এখনো স্পষ্ট মনে আছে । জীবনে আমার রোজগার থেকে তোমাকে কিছু দেয়ার সুযোগ পাইনি আমি – এ দু:খ আমাকে আজীবন তাড়া করবে।

আম্মা,
তোমার ছেলেরা আজ সমাজে সম্মানের সাথে প্রতিষ্ঠিত। ছাত্রজীবনের সিংহভাগ অংশ  হলে /হোস্টেলে কাটানো তোমার ছেলেদের নিজেদের বাড়িঘর হয়েছে। এ তোমারই শ্রমের ফসল । আজ বেঁচে থাকলে দেখতে তোমার নাতি নাতনীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি অর্জন শেষে খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠানে সম্মানজনক পেশায় নিয়োজিত আছে – ডাক্তার হয়েছে- প্রকৌশলী হচ্ছে ।
আম্মা,
তোমার শূন্যতা আমাকে – আমাদেরকে তাড়া করে ফিরবে সারা জীবন । আল্লাহ তোমাকে বেহেস্ত দান করুন- এ প্রার্থনাই করব আজীবন।

ইতি
তোমার স্নেহের তারিক

লেখক: উপাধ্যক্ষ,বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজ,সিলেট


সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

"এই বিভাগে প্রকাশিত মতামত ও লেখার দায় লেখকের একান্তই নিজস্ব " -সম্পাদক