সোমবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ২৫ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
https://blu-ray.world/ download movies
সর্বশেষ সংবাদ
লন্ডনে বিসিএ এ্যাওয়ার্ডস ২৮ অক্টোবর থাকছে নানা চমকপ্রদ আয়োজন  » «   বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৩২নং বাসভবন ভস্মীভূত এবং ভাস্কর্য ভাংচুরের নিন্দা ও প্রতিবাদ  » «    অদ্ভুত দেশপ্রেম ও খাঁটি ব্যক্তিগত স্বার্থ  » «   বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি তুলে ধরে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরাবারে বঙ্গবন্ধু লেখক সাংবাদিক ফোরামের স্মারকলিপি প্রদান  » «   দাম দিয়ে কিনেছি বাংলা কারো দানে পাওয়া নয়  » «   টাওয়ার হ্যামলেটসের বো এলাকায় নতুন কাউন্সিল ভবনের উদ্বোধন করেছেন নির্বাহী মেয়র লুৎফুর  » «   বাংলাদেশে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকের প্রাণহানি এবং সৃষ্ট অস্থিরতা-সহিংসতায় লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের ক্ষোভ-নিন্দা  » «   সৃজনের আলোয় মুস্তাফিজ শফি, লন্ডনে বর্ণাঢ্য সংবর্ধনা  » «   বৃটেনে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তাহমিনার অসাধারণ সাফল্য  » «   দুই বঙ্গকন্যা ব্রিটিশ মন্ত্রীসভায় স্থান পাওয়ায় বঙ্গবন্ধু লেখক এবং সাংবাদিক ফোরামের আনন্দ সভা ও মিষ্টি বিতরণ  » «   কেয়ার হোমের লাইসেন্স বাতিলের বিরুদ্ধে আইনী লড়াইয়ে ল’ম্যাটিক সলিসিটর্সের সাফল্য  » «   যুক্তরাজ্যে আবারও চার ব্রিটিশ-বাংলাদেশী  পার্লামেন্টে  » «   আমি লুলা গাঙ্গ : আমার আর্তনাদ কেউ  কী শুনবেন?  » «   বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদে লন্ডনে ইউনিভার্সেল ভয়েস ফর হিউম্যান রাইটসের সেমিনার অনুষ্ঠিত  » «   লন্ডনে বাংলা কবিতা উৎসব ৭ জুলাই  » «  
সাবস্ক্রাইব করুন
পেইজে লাইক দিন

মায়ের মৃত্যু দিবসে ছেলের আবেগঘন খোলা চিঠি



সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

আম্মা,
পঁচিশ বছর হয়ে গেছে তুমি আমাদের ছেড়ে চলে গেছ। আমরা দশ ভাইয়ের মাঝে আমি আর বড়ভাই তোমাকে কম পেয়েছি । সেই শৈশবেই ১৯৭৮ সালে সুনামগঞ্জে আসা আর ১৯৯৩ সালে পড়ালেখা শেষ করে আবার চট্টগ্রাম থেকে সুনামগঞ্জে ফিরে যাওয়া । এ সময়ে তোমাকে সামান্য সময়ের জন্য পেয়েছিলাম । পডালেখা শেষ করে যখন স্থায়ীভাবে সুনামগঞ্জ এলাম তখন তুমি চলে এলে সেখানে, আমাদের গ্রাম আনোয়াপুর থেকে। তখন আমাদের কারো কারো চাকুরী হতে শুরু করেছে। আমরা প্রাচুর্যের দেখা পেতে শুরু করলাম । তুমি আমাদের দশজনকে মানুষ করতে অতিমানবীয় কষ্ট করেছ। কিন্তু শ্রমের যে বীজ  তুমি বপন করেছিলে তার ফসল পূরোটা না দেখে তুমি চলে গেলে। কি এমন বয়স হয়েছিল তোমার মারা যাওয়ার সময় ? খুব বেশী হলে বায়ান্ন -তেপ্পান্ন । এখন বেঁচে থাকলে তোমার বয়স খুব বেশী হলে আশি হতো। আশি বছর বয়সে  অনেকের মায়েরাই বেঁচে আছেন তাদের আশা, আনন্দ আর আশির্বাদের বাতিঘর হয়ে ।আমরা দূর্ভাগা। তোমাকে পাইনি ।

আম্মা,
সন্তান যত বড় হোক না কেন কিছু কথা আছে শুধু মাকে বলা যায়- মাকে বললেই মনে শান্তি আসে । তোমাকে বলার সে কথাগুলো আমি আর কাকে বলব বল ? আমার ফলাফলের সেই ফার্স্ট ডিভিশন, সেকেন্ড ডিভিশন, ফার্স্ট ক্লাস কিংবা সেকেন্ড ক্লাসের ব্যবধানটা তুমি ঠিক না বুঝলেও আমার আনন্দ ফলাফলটা তোমাকে শুনানোর মাঝেই ছিল পরম শান্তি।

মনে পড়ছে মাস্টার্স পরীক্ষার ফলাফল জানিয়ে যখন বন্ধুরা দুষ্টুমি করে চিঠি লিখল আমি থার্ড ক্লাস পেয়েছি, তখন তোমার কাছে বসে কান্না শুরু করে দিলাম । তুমি পীঠে হাত বুলিয়ে বলেছিলে – আমার মনে হয় ভুল খবর এসেছে ।তুই সেকেন্ড ক্লাস পাবি । পেলামও তাই । কেন জানি মনে হতো তুমি বললেই আমার -আমাদের সব হয়ে যাবে । হয়েছেও তাই।

আম্মা,
নিজের জন্য তোমাকে কখনও কিছু চাইতে দেখিনি। আমার জুনিয়র বৃত্তির ১১৫০ টাকা তোমার হাতে তুলে যখন দিয়েছিলাম তখন ১১০০ টাকা দিয়ে ১১জন গরীব দুস্থ মহিলাকে ঈদে শাড়ি কিনে দিয়েছিলে -ব্যাপারটা এখনো স্পষ্ট মনে আছে । জীবনে আমার রোজগার থেকে তোমাকে কিছু দেয়ার সুযোগ পাইনি আমি – এ দু:খ আমাকে আজীবন তাড়া করবে।

আম্মা,
তোমার ছেলেরা আজ সমাজে সম্মানের সাথে প্রতিষ্ঠিত। ছাত্রজীবনের সিংহভাগ অংশ  হলে /হোস্টেলে কাটানো তোমার ছেলেদের নিজেদের বাড়িঘর হয়েছে। এ তোমারই শ্রমের ফসল । আজ বেঁচে থাকলে দেখতে তোমার নাতি নাতনীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি অর্জন শেষে খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠানে সম্মানজনক পেশায় নিয়োজিত আছে – ডাক্তার হয়েছে- প্রকৌশলী হচ্ছে ।
আম্মা,
তোমার শূন্যতা আমাকে – আমাদেরকে তাড়া করে ফিরবে সারা জীবন । আল্লাহ তোমাকে বেহেস্ত দান করুন- এ প্রার্থনাই করব আজীবন।

ইতি
তোমার স্নেহের তারিক

লেখক: উপাধ্যক্ষ,বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজ,সিলেট


সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

"এই বিভাগে প্রকাশিত মতামত ও লেখার দায় লেখকের একান্তই নিজস্ব " -সম্পাদক