মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার দাসেরবাজার ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মাহতাব উদ্দিনকে লাঞ্ছিত করার জেরে সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম সুন্দরকে গ্রেফতারের দাবিতে সড়ক অবরোধ করেছেন দাসেরবাজর, বর্ণি, তালিমপুর ও নিজবাহাদুর ইউনিয়নের লোকজন।
২০ জুন বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় লাঠি-সোটাসহ মিছিল সহকারে পৌর শহরের উত্তর চৌমুহনী এলাকায় এসে তারা সড়ক অবরোধ করেন। দুপুর পৌনে ১২টা পর্যন্ত এ অবরোধ চলে।
এসময় বড়লেখা-কুলাউড়া আঞ্চলিক সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে স্থানীয় উপজেলা চেয়ারম্যান, প্রশাসন, পৌরসভার মেয়র ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে রফিকুল ইসলাম সুন্দরকে গ্রেফতারের ২ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়ে অবরোধ তুলা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার (১৯ জুন) সকালে বড়লেখা উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ে কুশল বিনিময়কে কেন্দ্র করে সাবেক বড়লেখা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম সুন্দর সাবেক দাসেরবাজার ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যান মাহতাব উদ্দিনকে ব্যাপক মারধর করেন। এতে মাহতাব উদ্দিন পায়ে ও হাতে আঘাত পান।পরে তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াছিনুল হক ও পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত)। এ ঘটনায় থানায় সুন্দরের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন দাসেরবাজার ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাহতাব উদ্দিন। অপরদিকে এই ঘটনা মাহতাব উদ্দিনের ইউনিয়ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় জনগনের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। পাশাপাশি প্রবীণ মুরব্বির গায়ে হাত তুলার ঘটনায় উত্তর ও পশ্চিম অঞ্চলের তালিমপুর, বর্ণি ও নিজবাহাদুরপুরের লোকজনের মাঝেও এ ক্ষোভ দেখা দেয়।
এরই জের ধরে বৃহস্পতিবার, ২০ জুন সকাল সাড়ে ১০টায় প্রায় সহশ্রাধিক লোকজন দেশীয় অস্ত্রসহ মিছিল সহকারে বড়লেখা শহরের দিকে রওয়না দেন। এই খবর পেয়ে পুলিশ, নির্বাহী কর্মকর্তা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ গণ্যমান্য লোকজন তালিমপুর এলাকায় গিয়ে ব্যারিকেড দিয়ে তাদের আটকানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তাদের আটকানো সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে শহরের উত্তর চৌমুহনী এলাকায় পুলিশ পুনরায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় ব্যরিকেড সৃষ্টি করে তাদের আটকায়। তখন সেখানে তারা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। তারা সুন্দরকে গ্রেফতারের দাবিতে ২ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়ে বিক্ষোভ করে।
এ সময় ন্যায় বিচারের আশ্বাস দিয়ে অবরোধ তুলে নেওয়ার আহবান জানিয়ে বক্তব্য দেন বড়লেখা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সোয়েব আহমদ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শামীম আল ইমরান, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইয়াছিনুল হক, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার উদ্দিন, পৌর মেয়র আবুল ইমাম মো. কামরান চৌধুরী, পৌর কাউন্সিলর আব্দুল মালিক জুনু প্রমুখ।
অন্যদিকে অবরোধকারীদের পক্ষে বক্তব্য দেন দাসেরবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কমর উদ্দিন, সুড়িকান্দি গ্রামের মুরব্বি মুছব্বির আলী ও নজব উদ্দিন, যুব নেতা ফাহিম আহমদ তালিমপুর ইউনিয়নের সুনাম উদ্দিন সুনাই বন্ধু, ফয়ছল আহমদ, বর্ণি ইউনিয়নের হেলাল উদ্দিন, নিজবাহাদুর ইউনিয়নের খয়রুল ইসলাম নুনু প্রমুখ।
দুপুর ২টার দিকে বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে এই বিষয়ে জরুরী বৈঠক ডাকা হয়েছে।