ক্রিকেট বিশ্বকাপের ইতিহাসে এবারের মতো কোনো আসরেই বৃষ্টির বাগড়া দেখা যায়নি। বৃষ্টির কারণে একের পর এক ম্যাচ পরিত্যক্ত হচ্ছে। এ পর্যন্ত ৪টি ম্যাচ বৃষ্টির জলে ভেসে গেছে, যা কিনা যে কোনো বিশ্বকাপে ম্যাচ পরিত্যক্তের রেকর্ড। অথচ বিশ্বকাপ শেষ হতে এখনো বাকি প্রায় এক মাস। কাজেই ম্যাচ পরিত্যক্তের মিছিলে আরো কতটি যোগ হবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। বিশ্বকাপের অতীত বলছে, ১৯৯২ এবং ২০০৩ সালে মাত্র দুটি করে খেলা পরিত্যক্ত হয়েছিল। এবারের বিশ্বকাপে বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত ম্যাচগুলো হলো- শ্রীলঙ্কা-পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা-বাংলাদেশ, দক্ষিণ আফ্রিকা-ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং ভারত-নিউজিল্যান্ড। এর মধ্যে তিনটি ম্যাচে একটি বলও মাঠে গড়ায়নি। দক্ষিণ আফ্রিকা-ওয়েস্ট ইন্ডিজের ম্যাচে মাত্র ৭.২ ওভার খেলা হয়েছিল।
বৃষ্টির এই আচরণে সারা বিশ্বের কোটি কোটি ক্রিকেটপ্রেমী হতাশ। আবহাওয়া উপেক্ষা করা দুরূহ হলেও তারা এটা মেনে নিতে পারছেন না। চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। ইংল্যান্ডে বিশ্বকাপের মতো এত বড় আসর বৃষ্টির মৌসুমে আয়োজন করায় আইসিসিকেও হজম করতে হচ্ছে কড়া সমালোচনা। সমর্থক থেকে শুরু করে কিংবদন্তি খেলোয়াড় সবাই এই সমালোচকদের দলে।
বৃষ্টির মৌসুমে বিশ্বকাপ আয়োজনের বিষয়টিতে ব্যঙ্গ করেছেন খোদ ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক কেভিন পিটারসেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্ট্রাগ্রামে হাস্যকর একটি ছবি পোস্ট করেছেন তিনি। ছবিতে দেখা গেছে, ব্যাটসম্যান ব্যাটিং করছেন, তার পেছনে ক্যাচ ধরার অপেক্ষায় উইকেটরক্ষক। আর এই খেলাটি হচ্ছে পানির নিচে মুখে অক্সিজেন মাস্ক পরে। যার ক্যাপশন দেয়া হয়েছে, ‘ক্রিকেট বিশ্বকাপ ফাইনাল ২০১৯’!
নিউজিল্যান্ড-ভারত খেলা পরিত্যক্ত হবার পর বলিউডের কিংবদন্তি তারকা অমিতাভ বচ্চন হাস্যরস করে বলেছেন, খেলাগুলো ইংল্যান্ড থেকে সরিয়ে ভারতে নিয়ে আসা হোক।
ইংল্যান্ডে বৃষ্টিময় এ আয়োজন নিয়ে আছে সমর্থকদের নানা প্রস্তাবনা। এর মাঝে কিছু তুঘলুকি প্রস্তাবনাও আছে। কেউ বলছেন, ইংল্যান্ডের মতো দেশে ক্রিকেট আয়োজন করতে উইম্বিলডন টেনিস গ্রাউন্ডের মতো শেড কিংবা ছাতা তৈরি করা হোক, যেখানে বৃষ্টির সময় পুরো মাঠ ঢেকে দেয়া হয়। তবে ব্যাটিংয়ের ধরন অনুযায়ী বল অনেক উঁচুতে পৌঁছতে পারে- এমনটা মাথায় রেখে শেড কিংবা ঢাকনা অনেক উঁচুতে তৈরি করা অত্যন্ত ব্যয়বহুল হলেও অসম্ভব নয় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বৃষ্টির সময়ে একটা বিশাল আকারের বিশেষ চাদর (টারপলিন) দিয়ে সম্পূর্ণ আবৃত করে মাঠ শুষ্ক রেখে বৃষ্টি পরবর্তী মাঠ শুকনোর ঝামেলা থেকে মুক্ত থাকার চিন্তাটা আগে থেকেই ইংল্যান্ডের ধারণায় রাখা উচিত ছিল বলে মত দিয়েছেন অনেকেই। যাতে আবহাওয়া উন্নতির সঙ্গে সঙ্গেই খেলা শুরু করা যায়। অবশ্য শ্রীলঙ্কাকে অনুসরণ করে বৃষ্টি থামার সঙ্গে সঙ্গেই খেলা শুরু করার এ পদ্ধতিটা ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে ভারতের ইডেন গার্ডেন স্টেডিয়ামেও।