বুধবার (১২ জুন) দুপুর ১টার দিকে ঢাকাস্থ ইউরোপীয় ইউনিয়নের কার্যালয়ে বাংলাদেশের তরুণ ও ছাত্র সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বাংলাদেশে সফররত ইইউ প্রতিনিধি দল।এতে আমন্ত্রণ জানানো হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেতৃত্ব দানকারী বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতাকর্মীদের।উল্লেখ করা যেতে পারে যে, সাম্প্রতিক কালে দেশের সাধারণ ছাত্রদের অধিকার নিয়ে আন্দোলন করে সকলের কাছে আস্থার জায়গায় স্থান করে নিয়েছে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদ।
তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন ছাত্রলীগ বা বিএনপির ছাত্রসংগঠন ছাত্রদলের কাউকে সেখানে দেখা যায়নি।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলটি মূলত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পর্যবেক্ষণে ঢাকায় এসেছেন। পাশাপাশি বাংলাদেশের তরুণ সমাজের নেতৃত্ব যারা দিচ্ছেন, ছাত্র ও সাধারণ মানুষের অধিকার আদায় কাজ করছে এমন প্রতিনিধিদের সঙ্গে তারা আলোচনা করছে।
এরই অংশ হিসেবে সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করে আলোচনায় আসা বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতাদের আমন্ত্রণ জানায় ইইউ প্রতিনিধি দলটি।
আলোচনায় মানসম্মত শিক্ষার পরিবেশ, দেশের বিভিন্ন ছাত্র আন্দোলন, গণতন্ত্র, মানবাধিকার পরিস্থিতি, নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতারোধে তরুণ ও ছাত্র সমাজের ভূমিকাসহ দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
আলোচনায় ইইউ প্রতিনিধি দলের এরিকা হাসজন্স এবং মাইকেল সাফিয়ানিক উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুর হক নুর, আহ্বায়ক হাসান আল মামুন, যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন ও বনী ইয়ামিন মোল্লা। তাদের বাইরে ছিলেন ডাকসু নির্বাচনে ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রতিশ্রুতিশীল নারী নেত্রী অরণি সেমন্তি খান।
আলোচনার বিষয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন যুগান্তরকে বলেন, ‘তরুণ ও ছাত্র সমাজের প্রতিনিধি হিসেবে আমাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। আলোচনায় বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য মানসম্মত শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি, সাম্প্রতিক বিভিন্ন আন্দোলন, দেশের গণতন্ত্র, এবং নারীর ক্ষমতায়নে তরুণ সমাজের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা হয়।’
তিনি বলেন, ‘ইইউ প্রতিনিধিরা আমাদের সামাজিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জানেন। সাম্প্রতিক কৃষক আন্দোলন এবং ডাকসু নির্বাচন সম্পর্কে আমাদের বক্তব্য শুনেছেন। পাশাপাশি বিভিন্ন আন্দোলন করতে গিয়ে আমাদের ওপর বিভিন্ন মামলা হামলা এবং নির্যাতনের বিষয়গুলো শুনেছেন।’
অরণি সেমন্তী খান বলেন, ‘দেশের সার্বিক পরিস্থিতি, গণতান্ত্রিক পরিবেশ, মানবাধিকার পরিস্থিতি, নারীর ক্ষমতায়তন, নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা, শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের বিভিন্ন অধিকার আদায়ের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সাধারণ ছাত্রদের বিভিন্ন আন্দোলনের খোঁজ-খবর নিয়েছেন।’
ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন বলেন, ‘তারা মূলত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পর্যবেক্ষণে এসেছে। পাশাপাশি গণতন্ত্র, মানবাধিকার রক্ষা এবং নারীর ক্ষমতায়নে তরুণ সমাজের ভূমিকাসহ দেশের বিশাল তরুণ ও ছাত্র সমাজের ভাবনা সম্পর্কে জানতে আজকের বৈঠকের আমাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে।’