বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫ খ্রীষ্টাব্দ | ২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
গোপালগঞ্জে কারফিউয়ের সময় বাড়লো, ‘মৃত্যুর দায় সরকার এড়াতে পারে না’  » «   গোপালগঞ্জে এনসিপির জনসভায় লোক ছিলেন ২০০ জন : পুলিশ প্রতিবেদনে যা উঠে এলো  » «   আবারও গোপালগঞ্জ যাওয়ার ঘোষণা নাহিদের, সরকার ও এনসিপি’র সমালোচনায় বিএনপি  » «   গোপালগঞ্জে কারফিউ, চলছে ধরপাকড়, সরকারের তদন্ত কমিটি  » «   ‘জুলাই শহীদ দিবসে’ রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়ালে একি লেখা!  » «   নাহিদ-হাসনাতদের এপিসিতে ওঠার ব্যাখ্যা দিলেন এনসিপি নেতা  » «   গোপালগঞ্জে এনসিপি নেতারা, ‘আমারে মারিস না কেন, আমারে মার’  » «   এনসিপির নেতারা খুলনায়, মাদারীপুরে পদযাত্রা হয়নি  » «   সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যানে গোপালগঞ্জ ছাড়লেন এনসিপির নেতারা, সন্ত্রাসীদের ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা  » «   গোপালগঞ্জে ১৪৪ ধারার পর এখন কারফিউ : বহু হতাহত, ১০ জনের মৃত্যু দাবি  » «   গোপালগঞ্জে হামলা ও প্রতিরোধের মুখে এনসিপির সমাবেশ  » «   স্পেনে অভিবাসন বিরোধী দাঙ্গায় গ্রেপ্তার ১৪  » «   পাকিস্তানের নিষিদ্ধ তেহরিক-ই-তালিবানের কার্যক্রম বাংলাদেশে?  » «   ‘জামায়াত-শিবির রাজাকার, এই মুহূর্তে বাংলা ছাড়’—বিএনপির স্লোগানে ‘মাথাব্যথা নেই’ জামায়াতের  » «   ১৫ টাকা কেজি দরে চাল পাবে ৫৫ লাখ পরিবার  » «  

যোদ্ধা-বীরাঙ্গনা মেহেরজান (পর্ব ৫ )




যে যুদ্ধ করে আর যে যুদ্ধের বয়ান তৈরি করে- এই দুয়ের মধ্যে বিস্তর ফারাক। আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধের অনেক পরের প্রজন্ম, তারা তৈরি করা বয়ান দিয়েই তো যুদ্ধ, যোদ্ধা, ইতিহাসকে চিনেছি। তাহলে এই ফারাকটা ভরাটের পথ কী?

ঠিক এই জায়গাটা থেকেই একসময় ভাবি, যোদ্ধার প্রকৃত বয়ানটাই বোধহয় সেই ফারাকটা ভরাট করে দিতে পারে। একসময় যোদ্ধার বয়ান শোনা শুরু করি। সত্যিকার অর্থেই তখন অন্য এক যুদ্ধকে প্রত্যক্ষ করি যোদ্ধার চোখে। সেই ঘোর আজও কাটেনি।

কিন্তু যোদ্ধাও তো মানুষ, সময়ের ব্যবধানে সেও নিজেকে যে পাল্টে ফেলেনি- তাই বা কে বলবে! তবু আজও মুক্তিযোদ্ধার, বীরাঙ্গণার, শরণার্থীর গল্প শুনি ঠাকুরমার ঝুলির রূপকথার মতো সরলতা, মুগ্ধতা আর শিহরণ নিয়েই।

সেই অচেনা, অজানা, অখ্যাত যোদ্ধা, যারা মুক্তিযুদ্ধকে জনযুদ্ধে রূপ দিয়েছিল, তাদের কিছু কিছু অভিজ্ঞতা এই উত্তাল মার্চের দিনগুলোতে শুনাতে চাই ৫২বাংলায় ।

‘মুক্তিযুদ্ধের পর তো সোয়ামি আমারে আর ঘরে লয় না। বলে, তুই পাকিস্তানী ক্যাম্পে যা। আমি তোর লগে থাকুম না। বাহে কন, আমি তখন কই যাই? সোয়ামি ঘরে আসে না, বাইরে বাইরে থাকে। ততদিনে বড় পোলা মোস্তফার জন্ম হইছে। বাপের বাড়ির লোকজন আমারে দেখে, পোলারে দেখে। সোয়ামিরে তখন অনেক বুঝায় বাপের বাড়ির লোকজন আর গ্রামের মানুষ। শেষে ছয় মাস পরে সোয়ামি আমারে ঘরে লইছে। হেরপরেও কত ঝগড়া, কথায় কথায় খালি মুক্তিযুদ্ধের সময়ের কথা তুলত। সে এখন পঙ্গু, অচল; চলাফেরা করতে পারে না। আমিই তারে দেখি, খাওয়াই।’

মেহেরজানের সামনে বসে মনে হয় মুক্তিযুদ্ধ বোধহয় তার মূল অবয়ব ছেড়ে বেরিয়ে আসছে আমার চোখের সামনে, মেহেরজানের কঙ্কাল যেন অন্য-ভিন্ন এক ছায়াশরীর হয়ে হানা দেয় পৃথিবীর তামাম যুদ্ধবিধ্বস্ত মনস্তত্ত্বে। আমি ইতিহাসের সেই কঙ্কাল খুঁজতে এসেছিলাম কুড়িগ্রামে।

বীরাঙ্গনা মেহেরজান বেগম ২০১৩ সালের আগস্টের এক সকালে আক্ষেপ করেই এসব কথা বলছিলেন।(ছবি: চন্দন সাহা রায়)

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

সাবস্ক্রাইব করুন
পেইজে লাইক দিন