শনিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ খ্রীষ্টাব্দ | ১৫ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
https://blu-ray.world/ download movies
সর্বশেষ সংবাদ
ওয়াশিংটন ডিসি থেকে লন্ডন পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী  » «   যুক্তরাজ্য প্রবাসীরা প্রধানমন্ত্রীকে যেসব দাবী জানিয়েছেন  » «   বার্মিংহাম মিডল্যান্ডস বাংলা প্রেসক্লাবের নির্বাচন অনুষ্ঠিত  » «   নাইট্রাস অক্সাইড এর অপব্যবহারের ঝুঁকি কমাতে টাওয়ার হ্যামলেটস এবং কুইন মেরি ইউনিভার্সিটির সম্মিলিত উদ্যোগ  » «   স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ব্যারিস্টার আবুল কালাম চৌধুরীর মনোনয়ন নিশ্চিত করার দাবী  » «   মোল্লাপুর ফ্রেন্ডস সোসাইটি ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট ইউকের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত  » «   টরেন্টো বাংলা পাড়া ক্লাবের ১ম ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত  » «   ফুটবলের ব্যাখ্যাতিত নায়ক  » «   বিলেতে হালাল ব্যবসায় হাবিবুর রহমানের সাফল্য  » «   ইউ‌কে বাংলা প্রেসক্লা‌বের দোয়া মাহ‌ফিল  » «   বিয়ানীবাজার ক্যান্সার এন্ড জেনারেল হাসপাতালের ‘মোবাইল ক্লিনিক’ সেবা উদ্বোধন  » «   লণ্ডনে গ্রেটার পাতন এসোসিয়েশন ইউকের বর্ণাঢ্য অভিষেক  » «   সুনামগঞ্জ জেলা ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন ইউকের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন ২০২৩ অনুষ্ঠিত  » «   ইস্টহ্যান্ডস’র আয়োজনে লন্ডনে বাগান প্রেমীদের মিলন মেলা  » «   লন্ডন বাংলা স্কুল এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন  » «  
সাবস্ক্রাইব করুন
পেইজে লাইক দিন

কালো ব্যাজ ধারণ মৌন মিছিলের মধ্যি দিয়ে ডাকসুর দায়িত্ব নিলেন নূর-রাব্বানীরা
প্রধানমন্ত্রীকে আজীবন সদস্য করার প্রস্তাবে নুরুলের দ্বিমত



সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদে নবনির্বাচিত প্রতিনিধিদের প্রথম কার্যনির্বাহী সভা শুরু হয়। ২৮ বছর পর এ কার্যনির্বাহী সভার মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন পূরণের নতুন এক অভিযাত্রা শুরু করলো ডাকসু।আজ শনিবার বেলা ১১টা ২০ মিনিট থেকে দেড়টা পর্যন্ত ডাকসুর নির্বাচিত প্রতিনিধিদের প্রথম কার্যকরী সভা অনুষ্ঠিত হয়৷ একই সময়ে ১৮টি হল সংসদের কার্যকরী সভাও অনুষ্ঠিত হয়৷ ডাকসুর কেন্দ্রীয় সংসদে নির্বাচিত ২৫ জনই অংশ নেন৷

শনিবার সকাল সাড়ে ১১টায় ডাকসু ভবনের দ্বিতীয় তলার হল রুমে এই সভা শুরু হয়। সভায় সভাপতিত্ব করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান।ভিপি নূরুল হক নূরসহ ডাকসুর নবনির্বাচিত নেতারা এই সভায় যোগ দেন।

সভার শুরুতে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন,একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ, পঁচাত্তরের পনেরোই আগস্টে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সব শহীদ, জেলহত্যার শিকার জাতীয় চার নেতা, নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের শহীদসহ সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়েছে৷শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডাকসুর জিএস গোলাম রব্বানী।

গোলাম রব্বানী কেন্দ্রীয় সংসদের সবার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। এ সময় জিএস সভাপতির কাছে আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব গ্রহণের অনুমতি নেন। এক বছরের জন্য অনুমতি দেন ভিসি ড. আখতারুজ্জামান।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) আজীবন সম্মানসূচক সদস্য পদ দেওয়া নিয়ে ডাকসুর প্রথম কার্যকরী সভার পর সহসভাপতি (ভিপি) নুরুল হক ও ছাত্রলীগের প্যানেলের প্রার্থীরা পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিয়েছেন৷ ছাত্রলীগের প্যানেলের প্রার্থীরা এবং উপাচার্য ও ডাকসুর সভাপতি মো. আখতারুজ্জামান প্রধানমন্ত্রীকে সদস্য পদ দেওয়ার পক্ষে৷ তবে ভিপি নুরুল হক ডাকসু নির্বাচনকে ‘বিতর্কিত’ আখ্যা দিয়ে এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছেন৷

ডাকসু কেন্দ্রীয় সংসদের সভা শেষে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন উপাচার্য ও ডাকসুর সভাপতি মো. আখতারুজ্জামান, সহসভাপতি (ভিপি) নুরুল হক ও সাধারণ সম্পাদক (জিএস) গোলাম রাব্বানী৷

সভা শেষে গোলাম রাব্বানী সাংবাদিকদের বলেন ডাকসুর অভিষেক অনুষ্ঠানের ব্যাপারে একটি সম্মিলিত সিদ্ধান্ত হয়েছে৷ বলা হয়েছে, এর জন্য দেড় থেকে দুই মাস সময় লাগবে৷ অভিষেকে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হবে৷

সভা শেষে ডাকসুর জিএস গোলাম রাব্বানী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজকের সভায় আমাদের প্রথম প্রস্তাব ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সম্মান জানিয়ে আজীবন সদস্য পদ দেওয়া৷ ইতিপূর্বে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে এই সদস্য পদ দেওয়া হয়েছিল৷ কেন্দ্রীয় ডাকসুর সর্বসম্মত সমর্থনের পর আমরা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে আজীবন সদস্য পদ দেওয়ার বিষয়ে উপাচার্যের কাছে প্রস্তাব দিয়েছি৷ উপাচার্য বলেছেন,পরবর্তী সভায় আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তাব আকারে এ বিষয়ে জানাবেন৷’

ভিপি নুরুল হক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে ডাকসুর আজীবন সদস্য পদ দেওয়ার ব্যাপারে সভায় আলোচনা হয়েছে৷ কিন্তু এটি নিয়ে কোনো সমাধানে এখনো পৌঁছাইনি৷ এই নির্বাচন নিয়ে একটি প্রশ্নবিদ্ধ জায়গায় যেহেতু আমরা রয়েছি, সে রকম একটি জায়গা থেকে আমি মনে করি না এখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আজীবন সদস্য পদ ঘোষণা করা উচিত৷ সেই জায়গা থেকে আমিসহ কয়েকজন বিষয়টির বিরোধিতা করেছেন৷’

নুরুল হক যখন এ বক্তব্য দিচ্ছিলেন, তখনই পাশ থেকে ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বলে ওঠেন, ‘কয়েকজন না, শুধু আপনি (একজন) বিরোধিতা করেছেন৷’ নুরুল হক রেগে গিয়ে বলেন, ‘আমি কিছু বলব না৷ আমার কথা আপনিই বলেন৷’ রাব্বানী সাংবাদিকদের বলেন, ‘ডাকসু একটি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান…’ তখন সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘নুর, আপনি শেষ করেন৷ রাব্বানী, আপনার বক্তব্য আমরা শুনব৷’

নুরুল হক এরপর বলতে শুরু করেন, ‘প্রধানমন্ত্রী একজন সম্মানিত ব্যক্তি৷ তিনি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ নির্বাহী প্রধান৷ ডাকসুর আজীবন সদস্য পদ তাঁর জন্য বড় কিছু না৷ নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক রয়েছে৷ যখন আমরা দায়িত্ব নিচ্ছি, তখন আমার ভাইয়েরা মিছিল করছে, পুনর্নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছে৷ ভিপি হিসেবে আমি তাঁদের দাবিকে সমর্থন জানিয়েছি৷ সভায় উপাচার্য স্যারকে অনিয়মের বিষয়ে আমি বলেছি৷ বলেছি যে পুনর্নির্বাচন হওয়া দরকার৷ যেহেতু নির্বাচনটি সর্বজনীনভাবে গ্রহণযোগ্য হয়নি, শিক্ষার্থীদের বড় একটি অংশ নির্বাচনটিকে প্রশ্নবিদ্ধ হিসেবে চিহ্নিত করেছে, নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী আটজন নিরপেক্ষ শিক্ষকও পুনরায় নির্বাচন চেয়েছেন৷ আমরা চাই না, এমন একটি বিতর্কিত নির্বাচনে আজীবন সদস্য ঘোষণা করা হোক৷’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে নুরুল হক বলেন, ‘পুনর্নির্বাচনের দাবিসহ শিক্ষার্থীদের যেসব যৌক্তিক আন্দোলন রয়েছে, সেগুলো আদায় করার জন্যই আমি দায়িত্ব নিয়েছি৷ আমি কিন্তু বলিনি, আমি পুনর্নির্বাচন চাই না৷ পুনর্নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত যেহেতু ডাকসু কার্যকর থাকবে, সেহেতু যেখান থেকে শিক্ষার্থীদের দাবির পক্ষে কথা বলা যাবে, সেখান থেকে আমি কথা বলব৷ সে জন্যই আমি দায়িত্ব নিয়েছি৷’

এরপর ভিপি নুরুল হক চলে গেলে গোলাম রাব্বানী সাংবাদিকদের বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ডাকসুর ২৫ জনের মধ্যে ২৩ জন সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে আজীবন সদস্য পদ দেওয়ার বিষয়টি সমর্থন করেছেন৷ একমাত্র ভিপিই দ্বিমত পোষণ করেছেন৷ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় তাঁর বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়৷ এটি সংখ্যাধিক্যের ভিত্তিতে (২৩:২ অনুপাতে) গৃহীত হয়ে গেছে, এটি মীমাংসিত ইস্যু৷ সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেনও প্রস্তাবের পক্ষে ছিল৷ বেসিক্যালি, ২৪:১ অনুপাতে সিদ্ধান্তটি গৃহীত হয়েছে৷ আমাদের সংসদের সভাপতি এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন৷ যেহেতু অনুপাত আমাদের পক্ষে, আশা করি ইতিবাচক ফলাফল পাব৷’

সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ থেকে নির্বাচিত ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন বলেছেন, তিনি প্রধানমন্ত্রীকে আজীবন সদস্যপদ দেওয়ার পক্ষে ছিলেন না৷

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ডাকসুর আজীবন সদস্য পদ দেওয়ার বিষয়ে উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী প্রধানমন্ত্রী ডাকসু নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে যে উৎসাহ ও সহযোগিতা দিয়েছেন, যে আশ্বাস তিনি আমাদের দিয়েছেন, সেটির সফল বাস্তবায়ন তিনি করেছেন, যার ফলে আমরা এই নির্বাচন আয়োজনে আত্মপ্রত্যয়ী হয়েছি এবং নিজেদের অত্যন্ত শক্তিশালী অনুভব করেছি৷ সে জন্য ডাকসুর কার্যকরী পরিষদের সবাই একেবারে সহমত জ্ঞাপন করেছেন যে আমরা প্রধানমন্ত্রীকে সম্মান জানিয়ে ডাকসুর আজীবন সদস্য পদ দেব৷ সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, প্রস্তাবটি ধন্যবাদের সঙ্গে গৃহীত হলো৷ গঠনতন্ত্র দেখে পরবর্তী সভায় আনুষ্ঠানিকভাবে অ্যাজেন্ডা আকারে নিয়ে এসে এই মহৎ কাজটি করব৷’

যখন ডাকসুর কার্যকরী সভা চলছিল, সেই মুহূর্তে ডাকসুর পুনর্নির্বাচন ও নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের পদত্যাগ দাবি করে ক্যাম্পাসে কালো ব্যাজ ধারণ করে মৌন মিছিল করে ছাত্রদল৷ ছাত্রদলের কর্মসূচির বিষয়ে উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান৷ এখানে সবারই মত প্রকাশের অধিকার আছে৷’


সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন